প্রণয়ন
দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে শ্বেতপত্র প্রণয়নের সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত প্রায় দেড় দশক বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক যেসব চ্যালেঞ্জে নিপতিত হয়েছে তা তুলে ধরা হবে এই শ্বেতপত্রে।
বিগত সরকারের চরম অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অর্থ-পাচার এবং অপরিণামদর্শী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দেশি- বিদেশি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রমের কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে।
অর্থ বিভাগের সূত্রে পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, পতনকালে শেখ হাসিনা সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত যে স্থিতি ছিল, তা বাংলাদেশের তিনটি বাজেটের মোট অর্থ বরাদ্দের সমান। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কর আদায়ের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টা না করে দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের ঋণের প্রতি বিগত সরকার ঝুঁকেছিল।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপির তুলনায় কর সংগ্রহকে ১৪ শতাংশে নামিয়ে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত ছয় বছরে এ অনুপাত ১১ শতাংশ থেকে উল্টো ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এটি একটি দিক মাত্র। সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি, অর্থ-পাচারের অবাধ সুযোগ বাজার সিন্ডিকেট ইত্যাদির ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, তা ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বলা যেতে পারে যে, বিগত সরকারের শেষ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই মুখ থুবরে পড়ে।
দ্বিতীয়ত বিগত সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশের অর্থনীতির নজিরবিহীন নাজুক পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহতকরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধানতম হলো-
অর্থনীতি পুনরায় সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিরসনে কাঠামোগত সংস্কার সাধন:
ক. নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি;
খ. দুর্নীতি দূরীকরণ
গ. ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা
ঘ. কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার
ঙ. বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ইত্যাদি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রারম্ভেই সরকারের হাতে থাকা প্রয়োজন।
এ লক্ষে ‘প্রিপারেশন অব এ হোয়াইট পেপার অন দ্য স্টেট অব দ্য ইকোনোমি’ শিরোনামে একটি ধারণাপত্র (সিমোয়েপ্ট নোয়াস) নমিতে সংরক্ষিত রয়েছে। ধারণাপত্রে বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার তথ্য-চিত্র সমৃদ্ধ একটি 'শ্বেপত্র' প্রস্তুতের ধারণা দেওয়া হয়েছে।
ধারণাপত্রে বলা হয়েছ, প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলপত পদক্ষেপ গ্রহণ, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং এলডিসি হতে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে প্রতিফলন থাকবে। শ্বেতপত্রটি প্রণয়নের সময় বিভিন্ন অংশীজনের (স্টেকহোল্ডার) সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও মতবিনিময় করা হবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে প্রধানত নিম্নোক্ত বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
১. পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট ডোমেস্টিক রিসোর্স- সরকারি ব্যয় (পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট, এডিআইপি সাবসিডিস অ্যান্ড ডেবিট), ফাইন্যান্সিং অব বুলগেট ডিফিসিট।
২। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন- মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন।
৩। ফরেন ফাইন্যান্স ফ্লো অ্যান্ড ডেবিট - এক্সটার্নাল ব্যালেন্স এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট, রেমিট্যান্স, এফডিআই, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ।
৪। জ্বালানি ও বিদ্যুতের চাহিদা- সরবরাহ, মূল্য নির্ধারণ, খরচ ও ক্রয় চুক্তি।
৫। বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ- ঋণ, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও লজিস্টিকস।
৬। যুব কর্মসংস্থান- দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থান, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মজুরি।
প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি কমিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। কমিটির কাঠামো নিম্নরূপ হতে পারে।
ক) কমিটির সদস্যগণ অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
খ) পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোন ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
গ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে,
ঘ) সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সকল ধরণের সহযোগিতা দেবে।
বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি' নামে প্রস্তাবিত কমিটি আগামী ২০ (বিশ) দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট হস্তান্তর করবেন।
সূত্র: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
২ মাস আগে
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ডিআরএফ প্রণয়ন করা হবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশল (ডিআরএফ) প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে ‘জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশল’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ কথা জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছেন সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিআরএফের মাধ্যমে আমরা কেবল দুর্যোগ পরবর্তী কর্মকাণ্ডে সীমাবদ্ধ না থেকে একটি আস্থাশীল সমাজ গঠনে সক্ষম হব।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ডিআরএফ কৌশল দুর্যোগ প্রশমনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেবে। এছাড়াও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি শক্তিশালী আর্থিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করবে।
সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য অংশীদাররা সক্রিয়ভাবে এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানান মহিববুর রহমান।
কর্মশালায় ডিআরএফ কৌশলপত্রের নানা দিক নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
কর্মশালায় আরও ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: সব মন্ত্রণালয়ের ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা ৯ জুন চূড়ান্ত করব: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় রিমালে ২০ জেলায় ৬৮৮০ কোটি টাকার ক্ষতি: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
৫ মাস আগে
পাট উন্নয়ন ও বিপণনে সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে: পাটমন্ত্রী
পাট উৎপাদন থেকে শুরু করে এ জাতীয় পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত নকশা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, পাটের উৎপাদন থেকে শুরু করে পাট পণ্য নিয়ে গবেষণা, নকশার উন্নয়ন, বিপণনসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি সমন্বিত পথনকশা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন পাট পণ্য রপ্তানিকারক এবং সংশ্লিষ্টরা। আমরা শিগগিরই এ সংক্রান্ত পথনকশা প্রণয়ন ও তা যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করব।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) আয়োজিত ‘বহুমুখী পাটপণ্যের একক মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রমজানে মানুষকে জিম্মি করলে কেউ রেহাই পাবে না: পাটমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। পাট পণ্যের উৎপাদন খরচ যেসব দেশে সবচেয়ে কম তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পাটের তৈরি গৃহসজ্জা পণ্যের চাহিদার পাশাপাশি পাটের তৈরি শপিং ব্যাগ, জিওটেক্সটাইল ও ফ্লোর কভারের চাহিদাও বাড়ছে। এছাড়া পাটকাঠির তৈরি চারকোলের চাহিদাও রয়েছে চীনসহ বিভিন্ন দেশে। পাটভিত্তিক জিওটেক্সটাইলের বৈশ্বিক বাজারের আকার ক্রমে বেড়েই চলেছে। এসব সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
নানক আরও বলেন, আমরা পাটের উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, তেমনি মূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদনে আরও জোর দিচ্ছি। এজন্য জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে।
পাটমন্ত্রী বলেন, পরিবেশবান্ধব সোনালি আঁশ পাট বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাটশিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পাটখাতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে সরকার। বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রথম সভায় পাটজাত পণ্যসহ তিনটি খাতকে তৈরি পোশাকশিল্পে বিকাশে যেভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, প্রয়োজনে তেমন সহায়তা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, জেডিপিসির পরিচালক (যুগ্মসচিব) গোপাল চন্দ্র দাশ প্রমুখ। তিন দিন ব্যাপী আয়োজিত এ মেলা ২৩ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মন্ত্রী পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান এবং সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরকম মেলার আয়োজন করে পাট পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য জেডিপিসিকে নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জেডিপিসি পাটপণ্য উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, ব্যবহারকারী এবং বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে অধিক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। জেডিসিপির উদ্যোক্তরা ২৮২ রকমের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করেছে; যা পাটপণ্য হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি মূলধারার রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে: পাটমন্ত্রী
সোনালী ব্যাগের জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বড় বাধা হলেও আমরা জয়ী হব: পাটমন্ত্রী নানক
৬ মাস আগে
কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগকে কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশ
কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় পর ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের সঙ্গে সারা দেশে উঠান বৈঠক করার কর্মপরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
এর অংশই হিসেবে প্রথম উঠান বৈঠক করেছেন তিনি।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক ইন্দু ভূষণ পাল নিরুর উঠানে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাঁচ শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বীজ-সার ও কৃষি উপকরণ সহায়তা বাড়ানো হবে: কৃষিমন্ত্রী
মৌলভীবাজার জেলায় চাষযোগ্য পতিত জমিকে কীভাবে চাষের আওতায় আনা যাবে, কোন জমিতে কী ফসল ফলানো যাবে, সে বিষয়ে আগামী ৫০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
আমন ধান কাটার এই গ্রামের জমি এখনো পতিত পড়ে আছে কেন, কৃষকদের কাছে সে বিষয়ে বিস্তারিত শুনেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, চাষযোগ্য জমি অনেক। এখন বোরোর মৌসুম, অথচ আমন ধান কাটার পর এখানে সব জমি পতিত পড়ে আছে। এসব জমি কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
আরও পড়ুন: মজুতের অভিযোগ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
সেচের সমস্যা নিরসনে বিএডিসিকে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। শ্রমিক সংকট নিরসনে ভর্তুকি মূল্যে আরও বেশি করে কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উঠান বৈঠক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করে স্থানীয় পর্যায়ে কী কী সমস্যা আছে, তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
কৃষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা আরও বেশি করে ফসল ফলান। সরকার আপনাদের পাশে আছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তারা আপনাদের পাশে আছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়া হবে। উৎপাদন আরও বাড়াতে পারলে কারও পেটে ক্ষুধা থাকবে না, খাদ্য আমদানি করতে হবে না, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে না।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিকে কোনো প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: কৃষিমন্ত্রী
৯ মাস আগে
জাইকার সহায়তায় প্রণীত হলো ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা
ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে নন-কম্যুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলকে (এনসিডিসি) কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস)।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে উন্মোচিত এই নির্দেশিকা দেশের ডাক্তারদেরকে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সঠিক চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিতে সাহায্য করবে।
ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ ও পরিচর্যার পাশপাশি রোগীদের ব্যক্তিগত সচেতনতা ও ব্যবস্থাপনা জ্ঞান থাকা জরুরি, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখা ১ কোটি ৩১ লাখ, যা বিশ্বে ৮ম সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: জাইকার সঙ্গে সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির চুক্তি সই
ডায়াবেটিসসহ অসংক্রামক রোগসমূহ (নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস-এনসিডিএস) সারা দেশে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করে জাইকা, যে কারণে ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নে প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে উদ্যোগী হয়।
উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এনসিডিএসের ম্যানেজমেন্ট মডেল প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণসহ এনসিডিসি’র প্রোগ্রাম কার্যক্রমের উন্নয়ন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে এনসিডিসি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে জাইকা’র ‘স্ট্রেন্থেনিং হেলথ কেয়ার সিস্টেমস ফর অর্গানাইজিং কমিউনিটিস’ (পূর্বে এসএইচএএসটিও নামে পরিচিত) এর প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রকল্প।
নির্দেশিকা উন্মোচন প্রসঙ্গে জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ কোমোরি তাকাশি বলেন, ‘রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ডাক্তারদের সহায়তা করার জন্য ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনসিডিসি, ডিজিএইচএস, বাডাস ও বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিতে পেরে জাইকা আনন্দিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই নির্দেশিকা স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের সহায়তা করবে, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করবে, এবং রোগীদের পরিচর্যা ও জীবনমান উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। এ মাসে আমরা স্ট্রেন্থেনিং হেলথকেয়ার সিস্টেমস ফর প্রিভেন্টিং নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস প্রকল্পটিও উন্মোচন করতে যাচ্ছি, যা ‘এসএইচএএসটিও২’ নামে পরিচালিত হবে। এটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন অংশীদারিত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রাণ হারানো জাপানি নাগরিকদের স্মরণ করেছে জাইকা
ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত এই জাতীয় নির্দেশিকা বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নির্ণয়, প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রমাণ-নির্ভর দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সাধারণ আচার-অভ্যাস, চাহিদা, ও প্রাপ্যতার বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এটি স্ক্রিনিং, ঝুঁকি নিরূপণ, গ্লাইসেমিক কন্ট্রোল, ওষুধের ব্যবহার, ইনসুলিন থেরাপি, লাইফস্টাইল ইন্টারভেনশনসহ ডায়াবেটিক রোগীর সেবার বিভিন্ন দিক আলোচনা করে, এবং রেটিনোপ্যাথি, নিউরোপ্যাথি ও নেফ্রোপ্যাথিসহ ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
জাতীয় নির্দেশিকা উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ খান, জাইকা বাংলাদেশের’ সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ কোমোরি তাকাশি, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. আখতার হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কম্যুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ীতে বিশুদ্ধকরণ প্রকল্পের পানি কৃষকদের ব্যবহারের অনুমতি দিতে জাইকার প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে