বিএনপি-জামায়াত জোট
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী আজ
ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী দেশবাসী আজ (সোমবার) এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার অঙ্গীকার নিয়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে।
২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা স্পষ্টতই লক্ষ্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ অন্তত ২৪ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৩ শতাধিক। শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণ বৈকল্য সমস্যায় পড়েন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
১৪ বছর পর গ্রেনেড হামলা মামলায় তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত।
গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার দায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো সারা দেশে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদীতে গ্রেনেড হামলায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
এরপর বেলা সোয়া ১১টায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ‘মানবাধিকার প্রচার করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের বর্বরতা সম্পর্কে জানতে হবে’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্পিন্টারের সঙ্গে লড়াই করে ঢাকারমেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরও কয়েকজন পরাজিত হন।
গুরুতর আহতরা হলেন- শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, আইনজীবী সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, অধ্যাপক আবু সাঈদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টের পেছনে জিয়া, ২১ আগস্টের পেছনে তারেক: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে
বিএনপি-জামায়াতের পেছনে কোনো বৈশ্বিক শক্তি নেই: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত জোটের পেছনে কোনো বৈশ্বিক শক্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তারা দাবি করেছে তারা (বৈশ্বিক ক্ষমতা) আছে। কোন শক্তি তাদের সঙ্গে আছে? আমরা জানতে চাই। তাদের সঙ্গে কোনো (এরকম বৈশ্বিক) শক্তি নেই। কেউ লুটেরাদের পাশে নেই।’
শনিবার (১২ আগস্ট) শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির (এএলসিডব্লিউসি) বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বিএনপি-জামায়াত চক্র সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করে বলেন, তারা আবার ক্ষমতায় আসলে দেশ ও গণতন্ত্র ধ্বংস করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা দেশে গণতন্ত্র রাখতে পারবে না, তারা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে।
আরও পড়ুন: ৬ দফা দাবিতে হরতাল সফলের নেপথ্যে ছিলেন বঙ্গমাতা: প্রধানমন্ত্রী
তিনি ঘাতক, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক আগ্নেয়াস্ত্র চোরাকারবারি-বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।
যুদ্ধাপরাধী, বুদ্ধিজীবীদের খুনি, ধর্ষক ও লুটেরা-জামায়াতের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক থাকতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বিএনপির ১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-০৬ শাসনামলকে অন্ধকারের যুগ হিসেবে বর্ণনা করেন।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ আবার অন্ধকারের যুগে ফিরে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে অপসারণ এবং পরবর্তী নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রচেষ্টার জন্য বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার কারণে জনগণ তাদের ক্ষমতায় ফিরে আসতে বাধা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সালের ৩০মে বিএনপি সরকার থেকে পদত্যাগ করে।
শেখ হাসিনা জানান, তার দল দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করেছে এবং ক্ষমতায় ফেরার জন্য তাদের কারচুপি করার কোনো দরকার নেই।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে এবং এভাবেই তাদের মন জয় করে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভোট কারচুপির প্রয়োজন হয় না।’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত সহিংসতা ছাড়া কিছুই বোঝে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ২০২৬ সালের মধ্যে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশের মর্যাদা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির দাবিকে প্রত্যাখান করে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কেন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে এই ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন যে শুধুমাত্র পাগল ও শিশুরা নিরপেক্ষ?’
বিএনপি কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য পাগল ও শিশুদের খুঁজে পেয়েছে?
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফরুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আল-কায়েদার হাতে অপহৃত জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তার সাক্ষাৎ
১ বছর আগে