চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল
চট্টগ্রামে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার কাজ পেল চীনের সিআরবিসি
চট্টগ্রামে ‘চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন (সিইআইজেড)’ গড়ে তোলার কাজ পেয়েছে চীন সরকারের মনোনীত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি)।
বুধবার (১৬ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে সিআরবিসির সঙ্গে চুক্তির জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চীনা প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় ৭৮৪ একর জমিতে জিটুজি(দু’দেশের সরকারি পর্যায়) ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সেবাও দেবে সিআরবিসি।
এর আগে ২০১৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরের সময় চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে একটি এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
চীনের কুনমিংয়ে হাইগেং কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত নবম চীন-সাউথ এশিয়া বিজনেস ফোরামে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
সফরকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ সরকারি সংস্থা অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এরপর বেজা ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) শুধু চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪২০ কোটি ৩৭ লাখ টাকার প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চল অনুমোদন করেছে।
একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি অর্থবছরের সপ্তম একনেক সভায় ‘আনোয়ারা-২ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ’ নামে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো চীনের কোম্পানিগুলোকে সেখানে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করা।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সই করা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ চীনের বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি লিজের ভিত্তিতে জমি দেবে এবং চীনের মনোনীত একটি ফার্ম ওই জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশিদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, এমনটাই বলা হয়েছিল চুক্তির সময়।
আরও পড়ুন: রামপুরা-আমুলিয়া ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২৬১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
ইতোমধ্যে বেজা ও সিআরবিসি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা চট্টগ্রামে সিইআজেড-এর উন্নয়নের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওই)সই করেছে।
২০২২ সালের ১১ আগস্ট সই করা সমঝোতা স্মারকের আলোকে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২৪২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আনোয়ারায় চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য নিবেদিত অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চীনের কোম্পানিটিকে (সিআরবিসি)।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং চুক্তি সই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে চীনা উদ্যোগে নির্মিত প্রথম শিল্প পার্ক হিসেবে জোনটি যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ।
লি বলেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার শক্তিশালী ভিত্তি ও বিস্তৃত সম্ভাবনারয়েছে। চীন আরও অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার জন্য চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন: এনআরবিকে পরিকল্পনামন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত আরও আশা প্রকাশ করেন, চীনের উদ্যোক্তারা ভবিষ্যতে আরও শিল্প পার্ক নির্মাণে অংশগ্রহণ এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যবিষয়ক সহযোগিতা আরও গভীর করতে পারে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন জানান, ৭৭৮ একর এলাকা জুড়ে অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চলটি গড়ে উঠছে। এতে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, জোনটি সম্পূর্ণরূপে চীনের উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য নিবেদিত।
অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলে গড়ে তোলা হবে কেমিক্যাল, অটোমোবাইল অ্যাসেম্বলি, গার্মেন্টস ও ওষুধ কারখানা।
আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বেজাকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
১ বছর আগে