রাষ্ট্রীয় মদদ
বিরোধী দলকে নির্মূলে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস চালাচ্ছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলকে মাঠ থেকে সরাতে সরকার রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তারা (সরকার) সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে যে কোনো উপায়ে (নির্বাচনের) মাঠ থেকে বিরোধী দলগুলোকে অবৈধভাবে সরিয়ে দিয়ে আবার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করবে।’
রবিবার (২০ আগস্ট) বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য বিরোধী দলগুলোকে দমন করে ও তাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনের মাঠ পরিষ্কার করা।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমান ‘অবৈধ’ সরকারের নির্দেশে পুলিশ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। এখন যা চলছে এটাকে আমরা রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস বলতে পারি। এছাড়া বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং অন্যান্য সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একইভাবে কাজ করছে।
ফখরুল বলেন, আমাদের কাছে কিছু কিছু ডকুমেন্ট আছে যেগুলো আমরা প্রয়োজন হলে দেখাবো। যাতে বিচারকদের বলা হচ্ছে, তাড়াতাড়ি মামলা শেষ করো, এত তারিখের মধ্যে মামলা শেষ করতে হবে… সাক্ষী না আসলে তাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে এসে সাক্ষী দাও। একদিকে পুলিশি নির্যাতন, অন্যদিকে বিচারে দ্রুত সাজা দেওয়ার ভয়াবহ কর্মসূচি তারা নিয়েছে। লক্ষ্য একটাই..তারা পুরো মাঠ খালি করে দিতে চায়।
তিনি অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কথা বলছে। যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায় এবং দায় বিরোধীদের ওপর চাপানো যায়।
তিনি বলেন, এটা নতুন কিছু নয় কারণ তারা অতীতে একইভাবে একই কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। আমরা কোথায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলাম। যা কিছু সন্ত্রাস তাতো আপনার করছেন। বন্দুক আপনাদের হাতে, পিস্তল আপনাদের হাতে, আইনও আপনাদের হাতে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছয় নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিবি পুলিশের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এটা একটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ এখন ক্ষমতাসীন দলের হয়ে কাজ করছে। ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। ডিবি তাদের প্রেস ব্রিফিংয়ে যে অস্ত্রগুলো দেখিয়েছিল তা প্রাগৈতিহাসিক যুগে (তৈরি) ছিল।
তিনি বলেন, ডিবি বলছে নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি এসব অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। আমরা বিস্মিত যে তারা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলছে। বোঝা যায় যে তাদের বক্তব্য রাজনৈতিক।
তিনি ছাত্রদল নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানিয়েছে, তারা শনিবার ঢাকার লালবাগ এলাকা থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে তিনটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপির হাইকমান্ড এবং এর ছাত্র সংগঠনের ইউনিটগুলো দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পনা করছিল।
ফখরুল শনিবার নারায়ণগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে বিদেশের কোনো দেশ এগিয়ে আসবে না: ফখরুল
বিএনপি আশা করে বাংলাদেশিদের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে মূল্য দেবে ভারত: ফখরুল
১ বছর আগে