পাথর ও চুনাপাথর
৫দিন পর সিলেটের সব বন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু
পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (২১ আগস্ট) থেকে সিলেটের সব স্থলবন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়েছে।
এর আগে রবিবার (২০ আগস্ট) বিকালে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিলেটের আমদানিকারকদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ফের আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
জানা যায়, পাথর ও চুনাপাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দুই ডলার বাড়ানোর প্রতিবাদে গত বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্কস্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন আমদানিকারকরা।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় অচল হয়ে পড়ে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো। আমদানি বন্ধে বিপাকে পড়েন শ্রমিকেরা। আর সরকারও হারায় রাজস্ব।
আরও পড়ুন: আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
এ অবস্থায় রবিবার সিলেটে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আমদানিকারকরা। বৈঠকে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দুই ডলারের পরিবর্তে ৭৫ সেন্ট বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হন কাস্টমস কর্তকর্তা। এরপর আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ীরা। সোমবার সকাল থেকে যথারীতি আমাদানি শুরু হয়।
সোমবার দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে ফিরে এসেছে আগের কর্মচাঞ্চল্য। বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে পাথরবাহী ট্রাক। পাঁচদিন পর কাজে ফিরতে পেরে খুশি শ্রমিকরাও।
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি সহসভাপতি সানোয়া হোসেন ছেনু বলেন, ‘কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসম্যান্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে। এ কারণে ট্রাকপ্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে। তাই আমরা আমদানি বন্ধ করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমদানি বন্ধ হওয়ার পর রবিবার কাস্টমস কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ৭৫ সেন্ট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আমরা আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত নেই। আজকে (সোমবার) থেকে যথারীতি আমদানি শুরু হয়েছে।’
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, যে কোনো সিদ্ধান্তই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া ভালো। হঠাৎ করে কিছু চাপিয়ে দিলে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টনপ্রতি দুই ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া একেবারে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, তবে শেষ পর্যন্ত কাস্টমস কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আমরা খুশি। দেশের স্বার্থে আমরাও কিছু ছাড় দিয়েছি।
এ ব্যাপারে কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, অ্যাসেসমেনট ভ্যালু বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে নেওয়া হয়েছিল। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে এটা পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের মূল্য ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্কস্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো- কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন।
এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, আটক ২: নৌপুলিশ
১ বছর আগে