পেনশন স্কিম
পেনশন স্কিম: বাকৃবিতে শিক্ষকদের তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি
সর্বজনীন পেনশনে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বুধবারও বাকৃবিতে কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
মঙ্গলবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বাকৃবি করিডোরের বিভিন্ন অংশে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বাকৃবির কর্মচারী সংগঠনের সদস্যরা পৃথকভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে ববি
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেন।
বাকৃবির শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বাকৃবি শিক্ষক সমিতি। প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হলে অথবা বিদ্যমান পেনশন স্কিম থেকে ভালো অন্য কোনো স্কিম না আসা পর্যন্ত শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ আরীফ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো হলো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যয় স্কিম থেকে প্রত্যাহার, অভিন্ন নীতিমালা এবং কর্মকর্তাদের স্কেল সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এসব বৈষম্য চাই না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’
বুধবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পরিষদ, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতি ও কারিগরি কর্মচারী সমিতির কর্মচারীরা।
বাকৃবির বাকৃবি শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মো. মোশারফ বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও প্রশাসনিক ভবন বন্ধ থাকবে। আমরা অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখান করলাম।’
আরও পড়ুন: প্রত্যয় পেনশন স্কিম: তৃতীয় দিনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি
বাকৃবি শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও কর্মচারীদের অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন
৪ মাস আগে
পেনশন স্কিম: বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের সঙ্গে বসবেন ওবায়দুল কাদের
প্রত্যয় পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ধর্মঘট তৃতীয় দিনের মতো চলমান। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।
বুধবার (৩ জুলাই) ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া এ কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে বৈঠকের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের তাদের সঙ্গে কথা বললেও এখনও সময় নির্ধারণ করা হয়নি।
আন্দোলন চলবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না।
আরও পড়ুন: প্রত্যয় পেনশন স্কিম: তৃতীয় দিনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি
প্রত্যয় প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে গত সোমবার (১ জুলাই) অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এই কর্মবিরতির অংশ হিসেবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত, সান্ধ্যকালীন প্রফেশনাল, অনলাইন ও অফলাইন প্রোগ্রামসহ সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
একাডেমিক কার্যক্রম ছাড়াও চেয়ারম্যান অফিস, হল প্রভোস্ট অফিস, গবেষণা কেন্দ্র, ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ডিন অফিস, কম্পিউটার ল্যাব ও সেমিনার কক্ষসহ প্রশাসনিক অফিসগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'বৈষম্যমূলক' পেনশন স্কিমের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু
৪ মাস আগে
প্রত্যয় পেনশন স্কিম: তৃতীয় দিনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি
'প্রত্যয়' পেনশন স্কিম থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো চলছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট।
এর আগে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রবর্তিত নতুন পেনশন স্কিম প্রত্যয় বাস্তবায়নের প্রতিবাদে সোমবার (১ জুলাই) থেকে ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কাজ বর্জনের ডাক দিয়েছিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
আরও পড়ুন: পেনশন স্কিম: সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও।
৪ মাস আগে
'বৈষম্যমূলক' পেনশন স্কিমের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু
'বৈষম্যমূলক' পেনশন ব্যবস্থার আওতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদ দেওয়ার দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ব্যানারে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এর আগে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের প্রধান ফটকে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে ফেডারেশন।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: খুলনার তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত, সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম, প্রফেশনাল প্রোগ্রাম, অনলাইন ক্লাস ও অফলাইন ক্লাস, প্রশাসনিক কাজসহ সব শ্রেণির ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান কার্যালয়, হল প্রভোস্ট অফিস, গবেষণা কেন্দ্র, ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ডিন অফিস, কম্পিউটার ল্যাব ও সেমিনার বন্ধ থাকবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান ইউএনবিকে বলেন, 'আমরা বলেছিলাম, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা পুরোপুরি কর্মবিরতিতে যাব। এখন পর্যন্ত আমাদের দাবি মানা হয়নি। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষাসহ সব দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে। আমরা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করছি।’
একইভাবে সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত 'বৈষম্যমূলক' প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ধর্মঘট-প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করছে তার মন্ত্রণালয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাসময়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রবাসী, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা এই চারটি প্রকল্প নিয়ে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প যাত্রা শুরু করে।
পরে সব স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য 'প্রত্যয় স্কিম' নামে একটি নতুন স্কিম চালু করা হয়।
অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে প্রত্যাবর্তনের আকর্ষণীয় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন পাওয়া তহবিলের প্রতি আস্থা না থাকায় মানুষ খুব ধীর গতিতে নিবন্ধন করছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
৪ মাস আগে
পেনশন স্কিম: সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এর আগে শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের প্রধান ফটকে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ম্যান্ডেটে শিক্ষক সমিতি এ সর্বাত্মক আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। আমাদের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন।’
বৈষম্যমূলক ও অবমাননাকর পেনশন স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বাদ দেওয়া, শিক্ষকদের জন্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক বেতন স্কেল প্রবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতিশ্রুত 'সুপার গ্রেডে' অন্তর্ভুক্ত করার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই সর্বাত্মক ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: পেনশন বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে বাকৃবির শিক্ষকরা
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কর্মবিরতিকালে নিয়মিত, সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম, প্রফেশনাল প্রোগ্রাম, অনলাইন ক্লাস ও অফলাইন ক্লাসসহ ক্লাস ও পরীক্ষা; সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। চেয়ারম্যান অফিস, হল প্রভোস্ট অফিস, গবেষণা কেন্দ্র, ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ডিন অফিস, কম্পিউটার ল্যাব ও সেমিনার বন্ধ থাকবে।
শিক্ষকদের কোনো সিলেকশন বোর্ড মিটিং, কোশ্চেন কোলাবোরেশন মিটিং বা একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে না যেতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি চাকরিতে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধেও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি সর্বজনীন পেনশন (প্রত্যয় স্কিম) সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ধর্মঘট ও প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
আরও পড়ুন: কয়েক দফা দাবিতে সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে শাবিপ্রবির শিক্ষকরা
৪ মাস আগে
সর্বজনীন পেনশন স্কিম: ৬ মাসে ১৯,১৫৮ জনের ২৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা জমা
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পে (ইউপিএস) বিভিন্ন খাতের মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আকর্ষণীয় প্রস্তাব দেওয়ার কর্মসূচি শুরু করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ (এনপিএ)।
এ লক্ষ্যে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীসহ প্রবাসী, বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের মধ্যে সুবিধাগুলোকে তুলে ধরা, তালিকাভুক্তির সহজ প্রক্রিয়া ও সুবিধা প্রদানের বিষয়ে কাজ করছে এনপিএ।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে এই প্রকল্প জনগণের সাড়া কম পাওয়া প্রসঙ্গে এনপিএ'র সদস্য (সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে) ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, জাপান ও কোরিয়ার মতো বিভিন্ন উন্নত দেশ ১৯৬০ সালে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। এত বছর পর সেসব দেশে সর্বজনীন পেনশন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে।
‘আমাদের এত সময় লাগবে না। সর্বজনীন পেনশনের বিষয়ে ওই দেশগুলোর অভিজ্ঞতা আমরা দেখেছি,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'শুরুর দিকে তাদেরও আমাদের মতো বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি মনে করি, সেসব দেশের তুলনায় অনেক আগেই সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আমরা সফল হব।’
আরও পড়ুন: সুরক্ষা স্কিম: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
তিনি বলেন, প্রায় ৬ মাসে ১৯ হাজার ১৫৮ জন ইউপিএসে যুক্ত হয়েছেন এবং এ পর্যন্ত প্রায় ২৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ফান্ডে জমা হয়েছে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, এনপিএ জনগণের আমানত রক্ষায় অত্যন্ত সচেতন। এ তহবিল থেকে সরকার কোনো ঋণ নিতে পারবে না।
বরং ‘আমরা ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করি, যেখানে বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের আয় নিশ্চিত হয়। ফলে এই তহবিল নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো শঙ্কা-দ্বিধা থাকবে না।’
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট বহুল আলোচিত অভিন্ন পেনশন স্কিমের যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এই উদ্যোগ ১৮ বছরের বেশি বয়সী দেশের সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য। এই স্কিমের অধীন প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী নাগরিকরা ৬০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা উপভোগ করতে শুরু করবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখনও এই আর্থিক সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন নয়। এজন্য এনপিএ প্রবাসীদের অংশগ্রহণ আরও সহজ করতে চায়। পাশাপাশি দেশের মানুষের মধ্যে ইউপিএস প্রচারে আকর্ষণীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশনে উৎসাহিত করতে তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: সমতা স্কিম: স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
জাতীয় পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে নতুন উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ নির্দেশনা দেয়। উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য সব ব্যাংকের এমডিদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সরকার সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা চক্রে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। সরকারের এ উদ্দেশ্য পূরণে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ব্যতীত অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।
তাই বেসরকারি ব্যাংকের এমডিদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পাশাপাশি সরকারি পেনশন স্কিমে ব্যাংক হিসাবের উৎসে কর ও আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পেনশন স্কিমে বিনিয়োগের ওপর কর রেয়াত এবং পেনশন আয়ের ওপর কর অব্যাহতি প্রদানের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় পেনশন স্কিম: প্রবাসীদের আকৃষ্ট করছে না প্রবাস স্কিম
এই পর্যায়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বাণিজ্যিক ব্যাংকে পরিচালিত সরকারি পেনশন স্কিমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে উৎসে কর ও আবগারি শুল্ক মওকুফ করা প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যক্তি, কোম্পানি ও অন্যান্য তহবিল নির্বিশেষে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্থিতি অনুসারে আবগারি শুল্ক কাটা হয়।
অর্থনীতিবিদ ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, জনগণের মধ্যে আস্থার অভাব এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাবের কারণে পেনশন স্কিমের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম।
তিনি বলেন, পেনশন প্রকল্পের টাকা কোথায় বিনিয়োগ হবে, কীভাবে লাভবান হবে বা লোকসান হবে সে সম্পর্কে মানুষ এখনও সচেতন নয়।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের প্রকল্পের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে।
তিনি বলেন, ‘তবে তাদের সুষ্ঠু প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনও রয়েছে, যেটির অভাব এখানে রয়েছে। তাই আগামী দিনে এই প্রকল্পের কী হবে তা সময়ই বলে দেবে।’
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম: প্রথম মাসে নিবন্ধন ১৩ হাজারের নিচে
৮ মাস আগে
সমতা স্কিম: স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩ প্রকল্পটির উদ্বোধন করেছেন। ১৭ আগস্ট তিনি এটির উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে দেশের সর্বসাধারণের আর্থিক নিরাপত্তার সুযোগ। এমনকি স্বল্প আয়ের কর্মজীবীরাও সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রকল্পটিতে নিবন্ধন করে নিজেদের জন্য স্বনির্ভর বার্ধক্যের সুব্যবস্থা করতে পারবেন। এই শ্রেণীটিকে কেন্দ্র করেই ‘সমতা’ নামে সম্পূর্ণ পৃথক একটি উপ-স্কিমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এখানে। তাদের স্বল্প উপার্জনের কথা বিবেচনা করে সঙ্গতিপূর্ণভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে পেনশনের চাঁদার পরিমাণ। আসুন জেনে নেই ‘সমতা’ পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতির বিস্তারিত নিয়মাবলি।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩ সাধারণ শর্তাবলি
দেশের প্রতিটি পেশাজীবী মানুষই অংশ নিতে পারবেন সর্বজনীন পেনশন স্কিমে। তবে তার জন্য তাদের প্রাথমিক শর্তাবলি পূরণ করতে হবে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ অনুসারে সাধারণ শর্তগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- স্কিম গ্রহণের বয়সসীমা হলো সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছর বয়স, যা যাচাই করা হবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড (এনআইডি) অনুসারে।
- যাদের বয়স ৫০-এর বেশি, তারা বিশেষ বিবেচনায় শুধুমাত্র ১০ বছর মেয়াদের স্কিমটিতে অংশ নিতে পারবেন। টানা ১০ বছর সময় মত নির্ধারিত কিস্তিতে চাঁদা চালানোর পরই তারা উপযুক্ত হবেন আজীবন মাসিক পেনশন পাওয়ার জন্য।
- স্কিম শুরুর জন্য যাবতীয় সঠিক তথ্য দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পূর্বের সুবিধাগুলো বাদ দেয়ার পর এই স্কিমে অন্তর্ভূক্ত হতে পারবেন।
- স্কিম চালু হওয়ার পর পরই নিবন্ধনকারীর নামে স্কিম সংক্রান্ত যাবতীয় হিসেব পরিচালনার জন্য একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলা হবে।
- মাসিক পেনশন চলাকালীন পেনশন গ্রহণকারী মারা যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে তার মাসিক পেনশনগুলো দেয়া হবে তার মনোনীত নমিনিকে। নমিনির এই পেনশন প্রাপ্তির মেয়াদ মুল পেনশন গ্রহণকারীর ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত। অর্থাৎ, মুল পেনশন গ্রহণকারী ৬৮ বছর বয়সে মারা গেলে, তার মাসিক পেনশনগুলো তার নমিনি পাবেন পরবর্তী ৭ বছর।
- পেনশন স্কিম পরিণত হওয়ার পূর্বে চাঁদা প্রদানের সময় মারা যেতে পারেন স্কিম নিবন্ধনকারী। এমতাবস্থায় তার মনোনীত নমিনি তার চাঁদা হিসেবে জমাকৃত সব টাকা মুনাফাসহ পাবেন। উল্লেখ্য যে, পেনশন স্কিমের প্রত্যেক প্যাকেজে চাঁদা দেয়ার মেয়াদ কমপক্ষে ১০ বছর।
- পেনশনের জন্য যে টাকা চাঁদা হিসেবে দেয়া হবে তা নিবন্ধনকারীর বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে। পরবর্তীতে তিনি যখন মাসিক পেনশন পাওয়া শুরু করবেন, তখন সেই পেনশনের উপর তাকে কোনও আয়কর দিতে হবে না।
- মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস)-এর মাধ্যমে সরকারি সেবা গ্রহণকালীন ক্যাশ আউট চার্জ ০.৭০ (শূন্য দশমিক সাত) শতাংশ বা প্রতি হাজারে ৭ টাকা। এই সার্ভিস চার্জটি এই স্কিমের বেলায়ও প্রযোজ্য হবে। গত ১৬ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্র জারির মাধ্যমে এই অভিন্ন সার্ভিস চার্জের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় পেনশন স্কিমকে।
আরও পড়ুন: কী কী থাকছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায়
সমতা: স্বল্প আয়ের কর্মজীবীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম
‘সমতা’ পেনশন স্কিম-এ কিস্তিতে কত টাকার বিনিময়ে কত টাকা পেনশন
মাসিক চাঁদার হার
১,০০০ টাকা (চাঁদাদাতা ৫০০ টাকা + সরকারি অংশ ৫০০ টাকা)
চাঁদা প্রদানের মোট সময়কাল (বছরে)
সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২
৩৪,৪৬৫
৪০
২৯,২০০
৩৫
১৯,১৮৭
৩০
১২,৪৬৬
২৫
৭,৯৫৫
২০
৪,৯২৭
১৫
২,৮৯৪
১০
১,৫৩০
সূত্র: বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, আগস্ট ১৩, ২০২৩
চাঁদা প্রদানের এই হারটি নির্ধারণ করা হয়েছে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী ব্যক্তিদের জন্য। যাদের আয় বছরে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা, শুধুমাত্র তারাই এই সমতা স্কিম নিতে পারবেন। তাদের নির্ধারিত চাঁদার অর্ধেক জমা হবে সরকারি তহবিল থেকে, আর বাকি অর্ধেক তারা নিজেরা প্রদান করবেন।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য চলে যেতে হবে ইউপেনশন ওয়েবসাইট-এ। অতঃপর ক্লিক করতে হবে ওয়েবসাইটের উপরে ডান দিকে ‘পেনশনার রেজিস্ট্রেশন’ মেনুতে। এরপরেই শুরু হয়ে যাবে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। চলুন, ধারাবাহিকভাবে পুরো পদ্ধতিটি জেনে নেয়া যাক।
সাধারণ শর্তাবলিতে সম্মতি
নিবন্ধনের মূল অংশে যাওয়ার আগে প্রথমে ৩টি শর্তাবলিতে সম্মতি জ্ঞাপন করতে হবে। এগুলো হলো-
- আবেদনকারী কোনও ধরণের স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব, সরকারি বা আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরিরত নন।
- প্রার্থী কোনও স্বায়ত্তশাসিত অথবা সরকারি কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও রকম সুবিধাপ্রাপ্ত নন।
- প্রার্থী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে কোনও সুবিধাপ্রাপ্ত নন।
এ শর্তগুলো মেনে নিচে থাকা ‘আমি সম্মত আছি’ বাটনে ক্লিক করার পরেই যাওয়া যাবে নিবন্ধনের পাতায়। এই সম্মতি ব্যতীত আবেদনটি শুরুই করা যাবে না। চাঁদা প্রদান শুরুর পর উপরোক্ত শর্তের কোন ব্যতিক্রম পাওয়া গেলে আবেদন সহ পুরো নিবন্ধনটিই বাতিল হবে। উপরন্তু, ভূল তথ্য সরবরাহকারী চাঁদা হিসেবে জমা করা কোনও অর্থ ফেরত পাবেন না।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন চালুকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
স্কিম ও পরিচিতি নির্ধারণ
এটি নিবন্ধনের প্রথম পাতা, যেখানে উল্লেখিত অপশনগুলো থেকে ‘স্বল্প আয়ের ব্যক্তি’ ক্যাটাগরিটি নির্বাচন করতে হবে। তারপর পরিচয় প্রমাণের জন্য ১৭, ১৩ কিংবা ১০ অঙ্কের এনআইডি সংখ্যা এবং জন্ম তারিখ দিতে হবে। যোগাযোগের জন্য সরবরাহ করতে হবে নিয়মিত ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বার এবং ই-মেইল ঠিকানা। তথ্য প্রবেশ করানোর পর যাচাইয়ের জন্য ই-মেইল ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বারে চলে যাবে একটি ওটিপি বা ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড। এটি নির্ভূলভাবে অনলাইন ফর্মের নির্ধারিত জায়গায় বসাতে হবে। সবশেষে নিচের দিকে থাকা ক্যাপচাটি কোনও রকম ভুল ছাড়াই পূরণ করে সাবমিট করলেই পরের সেকশনের কাজ শুরু হবে।
ব্যক্তিগত তথ্যাবলি
আগের পেজে যেহেতু এনআইডি সংখ্যা দেয়া হয়েছে, তাই এখানে প্রার্থী তার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো আগে থেকেই পূরণকৃত দেখতে পাবেন। অর্থাৎ প্রার্থীর এনআইডি সংখ্যা থেকে শুরু করে তার ছবি, বাংলা ও ইংরেজিতে পূর্ণ নাম, পিতা ও মাতার নাম, এবং স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা- সবই পূরণ করা থাকবে। জেলা-উপজেলা ও বিভাগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজের অবস্থানগুলো ড্রপ-ডাউন লিস্ট থেকে বাছাই করে দিতে হবে।
পেশা/কর্ম সুনির্দিষ্টকরণ
এখানে আগে থেকে উল্লেখ করা বিভিন্ন পেশা থেকে স্বল্প আয়ের কর্মীকে তার নিজের পেশাটি বাছাই করে দিতে হবে। বার্ষিক আয়ের শূন্যস্থানটিতে বার মাসের মোট আয়ের সংখ্যাটি টাইপ করে বসাতে হবে।
স্কিমে চাঁদা প্রদানের তথ্য
এই গুরুত্বপূর্ণ অংশে স্কিম গ্রহণকারি চাঁদার কোন কিস্তিটি নিচ্ছেন তা উল্লেখ করতে হবে। মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক- এই তিনটি উপায়ের মধ্য থেকে যে কোনও একটি প্রার্থী চাঁদা প্রদানের জন্য বেছে নিবেন।
আরও পড়ুন: প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
চাঁদা প্রদানের মাধ্যম
এখানে যোগ করতে হবে চাঁদা প্রদানকারীর ব্যাংকের যাবতীয় তথ্যাবলি। এখানে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে অ্যাকাউন্টটি খোলার সময় সরবরাহকৃত তথ্যাবলির সঙ্গে হুবহু মিল থাকতে হবে। অর্থাৎ অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার, হিসাবের ধরণ তথা- সঞ্চয়ী নাকি চলতি, এগুলোর মধ্যে কোনও অসমাঞ্জস্যতা থাকা চলবে না। প্রতিটি ব্যাংকেরই ৯ অঙ্কবিশিষ্ট একটি এক ও অদ্বিতীয় রাউটিং সংখ্যা থাকে। সেই সংখ্যাটি রাউটিং নাম্বারের পাশের শূন্যস্থানে লিখতে হবে। যারা সংখ্যাটি জানেন না, তাদের জন্য আছে পাশের ‘রাউটিং নম্বর জানা নাই’ বাটনটি। সেখানে ক্লিক করলে ছোট্ট একটি বক্স আসবে, যেখানে ব্যাংক ও তার শাখার দুটো আলাদা ড্রপ-ডাউন লিস্ট থাকবে। এই লিস্টগুলো থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও তার শাখার নাম বাছাই করে দিতে হবে। প্রার্থী এখানে তার কাছাকাছি অবস্থিত সেই ব্যাংকের যে কোনও শাখা নির্বাচন করে দিতে পারেন। তথ্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বক্সটি চলে যাবে এবং সেই রাউটিং নাম্বারের পাশের ঘরটি পূরণ দেখাবে।
এক বা একাধিক নমিনির তথ্যাবলি
পেনশন গ্রহণকারী বা পেনশনের জন্য চাঁদাদানকারীর অবর্তমানে তার পেনশন বা চাঁদা হিসেবে জমাকৃত টাকা মুনাফাসহ প্রদানের জন্য মনোনীত নমিনির তথ্য এখানে সংযুক্ত করতে হবে। প্রথমে নমিনির এনআইডি সংখ্যা ও জন্ম তারিখ দিয়ে নিচের ‘নমিনি যুক্ত করুন’ অংশে ক্লিক করতে হবে। ফলে বাকি অংশে নমিনির মোবাইল নাম্বার, প্রার্থীর সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং প্রার্থীর অংশের কতটুকু তিনি পাবেন- সে তথ্যের ঘরগুলো থাকবে। একজন নমিনির ক্ষেত্রে প্রার্থীর সমুদয় অর্থের অঙ্ক বসাতে হবে।
প্রার্থী চাইলে একের অধিক নমিনি যুক্ত করতে পারেন এবং সে জন্য তাকে ‘আরও নমিনি যুক্ত করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। অতঃপর প্রত্যেকে তার কত অংশ করে পাবে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
সরবরাহকৃত তথ্য যাচাই
আবেদনের এই শেষ অংশে এতক্ষণ যাবৎ প্রদানকৃত যাবতীয় তথ্যাবলি একসঙ্গে প্রদর্শিত হবে। এগুলো সব নির্ভুলভাবে দেয়া হয়েছে কিনা তা যাচাই করে জমা দিলেই নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। পরিশেষে সফলভাবে জমাকৃত আবেদনটি ডাউনলোড করে রাখতে হবে, যেন পরবর্তীতে যে কোনও প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সমতা স্কিমে পেনশনের চাঁদা জমা করার উপায়
অনলাইন নিবন্ধনের সময় সরবাহকৃত মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানায় নিবন্ধনকারির চাঁদা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদে প্রতি কিস্তির টাকা সময়মতো জমা দিতে হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কোনও কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে, জরিমানা ছাড়া চাঁদা দেয়ার জন্য সময় দেয়া হবে সর্বোচ্চ এক মাস। এই অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে চাঁদা না দেয়া হলে, পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য জরিমানা ধার্য হবে ১ শতাংশ হারে। পুনঃ পুনঃ চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে নিবন্ধনকারীর স্কিম অ্যাকাউন্টটি নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে।
শেষাংশ
দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির নিমিত্তে নির্ভরশীল বয়স্ক জনগোষ্ঠীর নেতিবাচক প্রভাবের সবচেয়ে বড় শিকার স্বল্প উপার্জনকারীরা। সেখানে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন তাদের জন্য হতে পারে একটি মুক্তির উপায়। তাদের বার্ধক্যকালীন এক নির্ভরযোগ্য আয়ের খাতে পরিণত হতে পারে সমতা স্কিম। ফলশ্রুতিতে, তারা পেতে পারেন এক মর্যাদাপূর্ণ অবসর। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সম্ভাবনা হতে পারে ভবিষ্যতের তরুণ কর্মজীবীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সহায়ক। বৃহৎ পরিসরে এই কর্মসূচির সুফল হিসেবে দেশের বর্ধমান জনগণ পরিণত হতে পারে জনশক্তিতে।
আরও পড়ুন: সুরক্ষা স্কিম: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
১ বছর আগে
সুরক্ষা স্কিম: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
প্রধানমন্ত্রী ১৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে চালু করলেন সর্বজনীন পেনশন স্কিম-২০২৩। এই এক প্রকল্পের অধীনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে দেশের সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষ। কৃষক, জেলে, কামার, কুমার, তাঁতী এবং শ্রমিকদের মতো স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরাও বাদ যাচ্ছে না।এমনকি সুরক্ষা নামের সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র উপ-স্কিমটির মাধ্যমে এই উল্লেখযোগ্য শ্রেণিটিকে আনা হয়েছে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায়। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা এই জনগোষ্ঠির আয়ের পরিমাণ বিবেচনা করে আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে পেনশনের জন্য চাঁদা প্রদানের হার।এই স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মজীবীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি নিয়েই আজকের নিবন্ধ। তবে তার আগে চলুন, দেশের সব ধরনের আয়ের কর্মজীবীদের জন্য নির্ধারিত স্কিমের সাধারণ বিধিমালা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন: প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩ সাধারণ বিধিমালা
দেশের সর্বসাধারণকে পেনশন প্রদানের লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ অনুযায়ী কিছু সাধারণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো প্রতিটি ভিন্ন আয়ের পেশাজীবী মানুষের পেনশন অর্জনের পূর্বশর্ত।
- কমপক্ষে ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছর বয়সীরা এই স্কিম নিতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড (এনআইডি) এর ভিত্তিতে এই বয়স সীমা যাচাই করা হবে।
- যাদের বয়স ৫০-এর বেশি, তারা বিশেষ বিবেচনায় শুধুমাত্র ১০ বছর মেয়াদের স্কিমটি নিতে পারবেন। টানা ১০ বছর কিস্তি অনুযায়ী চাঁদা প্রদানের সাপেক্ষে চাঁদা প্রদানের মেয়াদ উত্তীর্ণের পর থেকে তারা আজীবন পেনশন পাওয়ার জন্য উপযুক্ত হবেন।
- স্কিমে অংশগ্রহণের একমাত্র মাধ্যমে হচ্ছে অনলাইন নিবন্ধন। যারা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা নিচ্ছেন, তারা সেই সুবিধাগুলো বাদ দেওয়ার শর্তে এই স্কিম নিতে পারবেন।
- স্কিম চালু হওয়ার সময় থেকেই প্রত্যেক নিবন্ধনকারীর নামে একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। এখানে তার চাঁদা প্রদান, মেয়াদ ও পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় হিসাব লিপিবদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
- পেনশন গ্রহণকালে গ্রহণকারীর মৃত্যু হতে পারে। এক্ষেত্রে তার মাসিক পেনশনগুলো তার নমিনি পাবেন। এই পেনশন প্রদান চলবে মুল পেনশন গ্রহণকারীর ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত। উদাহরণস্বরূপ, যদি পেনশন গ্রহণকারী ৭০ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তার নমিনি পরবর্তী ৫ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে পেনশন পাবেন।
- পেনশনপ্রাপ্তির লক্ষ্যে চাঁদা প্রদানের মেয়াদ চলাকালে স্কিমে নিবন্ধনকারী মৃত্যুবরণ করতে পারেন। এমতাবস্থায় তার জমাকৃত চাঁদা মুনাফাসহ প্রদান করা হবে তার নমিনিকে। উল্লেখ্য, এখানে প্রতিটি স্কিমে চাঁদা প্রদানের ন্যূনতম মেয়াদ ১০ বছর।
- স্কিমের বিপরীতে প্রদানকৃত চাঁদা নিবন্ধনকারীর নামে বিনিয়োগ হিসেবে জমা হবে। এই সেবা গ্রহণটি কর রেয়াতের অন্তর্ভূক্ত হবে। অর্থাৎ, পরবর্তীতে মাসিক পেনশন নেওয়ার সময় নিবন্ধনকারীকে অর্জিত পেনশনের ওপর কোনো আয়কর দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
- মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সেবা নেওয়ার সময় শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ ক্যাশআউট চার্জ এই স্কিমেরও জন্যও প্রযোজ্য হবে। সুতরাং, এমএফএস-এর মাধ্যমে চাঁদা দেওয়ার সময় চাঁদা প্রদানকারীকে সার্ভিস চার্জ বাবদ প্রতি হাজারে ৭ টাকা খরচ করতে হবে। উল্লেখ্য, অন্যান্য সরকারি সেবার মতো এই স্কিমেও এমএফএসের অভিন্ন সার্ভিস চার্জের বিধিটি প্রকাশিত হয় গত ১৬ আগস্ট।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সুরক্ষা: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মজীবীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম
কিস্তিতে কত টাকার বিনিময়ে কত টাকা পেনশন
মাসিক চাঁদার হার
১,০০০ টাকা
২,০০০ টাকা
৩,০০০ টাকা
৫,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময় (বছর)
সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২
৩৪,৪৬৫
৬৮,৯৩১
১,০৩,৩৯৬
১,৭২,৩২৭
৪০
২৯,২০০
৫৮,৪০০
৮৭,৬০১
১,৪৬,০০১
৩৫
১৯,১৮৭
৩৮,৩৭৪
৫৭,৫৬১
৯৫,৯৩৫
৩০
১২,৪৬৬
২৪,৯৩২
৩৭,৩৯৮
৬২,৩৩০
২৫
৭,৯৫৫
১৫,৯১০
২৩,৮৬৪
৩৯,৭৭৪
২০
৪,৯২৭
৯,৮৫৪
১৪,৭৮০
২৪,৬৩৪
১৫
২,৮৯৪
৫,৭৮৯
৮,৬৮৩
১৪,৪৭২
১০
১,৫৩০
৩,০৬০
৪,৫৯১
৭,৬৫১
সূত্র: বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, আগস্ট ১৩, ২০২৩
আরও পড়ুন: ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগ দিতে পারবে
স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
প্রকৃতপক্ষে প্রতি শ্রেণী পেশার মানুষকেই স্কিম নেওয়ার জন্য ইউপেনশন ওয়েবসাইটে যেয়ে নিবন্ধন করতে হবে। সাইটের উপরে ডান দিকে পেনশনার রেজিস্ট্রেশন-এ ক্লিক করলে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি শুরু হবে। নিম্নে ধাপে ধাপে পুরো পদ্ধতিটি বিস্তারিত দেওয়া হলো:
প্রাথমিক শর্তাবলীতে সম্মতি
স্কিমে নিবন্ধনের জন্য কিছু প্রাথমিক যোগ্যতা রয়েছে, যেগুলো ইতোমধ্যে উপরের সাধারণ বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই শর্তগুলোতে সম্মতি দেওয়া ব্যতীত নিবন্ধন শুরু করা যাবে না।
- স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব, সরকারি বা আধা-সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারী হওয়া যাবে না।
- স্বায়ত্তশাসিত কিংবা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের সুবিধা প্রাপ্ত হওয়া যাবে না।
- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে কোনো ধরনের সুবিধা প্রাপ্ত হওয়া যাবে না।
শর্তগুলোর নিচে ‘আমি সম্মত আছি’ বাটনে ক্লিক করলে পরের পাতায় যাওয়া যাবে। ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করলে পুরো আবেদনটি বাতিল করা হবে। চাঁদা প্রদানের মেয়াদ চলাকালে নিবন্ধনকারীর সরবরাহকৃত তথ্যে কোনো ভুল পাওয়া গেলে, চাঁদা হিসেবে জমা করা অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: কী কী থাকছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায়
পেশা বা কর্মের শ্রেণি বাছাই
এই ওয়েবপেজে উল্লেখিত ক্যাটাগরিগুলো থেকে স্ব-কর্ম বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মী নির্বাচন করতে হবে। এরপর পরিচয় যাচাইয়ের পালা, যেখানে ১০, ১৩ বা ১৭ অঙ্কের এনআইডি সংখ্যা এবং জন্ম তারিখ প্রবেশ করাতে হবে। যোগাযোগের তথ্যের জন্য দিতে হবে মোবাইল নাম্বার এবং ই-মেইল আইডি।
সঙ্গে সঙ্গেই যাচাইয়ের জন্য সরবরাহকৃত মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানায় একটি ওটিপি(ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড) চলে যাবে। এটি ওয়েবপেজের নির্ধারিত শূন্যস্থানে সঠিকভাবে বসাতে হবে। এরপর নিচের দিকে থাকা ক্যাপচাটি নির্ভূলভাবে পূরণ করলেই এই সেকশনের কাজ শেষ।
ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান
পূর্বে এনআইডি সংখ্যা দেওয়ার কারণে এই অংশে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়ে যাবে। অর্থাৎ এনআইডি সংখ্যা, ছবি, বাংলা ও ইংরেজিতে প্রার্থীর সম্পূর্ণ নাম, তার পিতা ও মাতার নাম, এবং স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার তথ্যগুলো পূরণ করা থাকবে। তবে জেলা-উপজেলা ও বিভাগের নামগুলো ড্রপডাউন লিস্ট থেকে বেছে সিলেক্ট করতে হবে।
পেশার তথ্য সরবরাহ
পেশার সেকশনে বিভিন্ন পেশার মাঝে স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা নিজের দক্ষতাটি সঠিক ভাবে বাছাই করে দিবেন। অতঃপর বার্ষিক আয়ের জায়গাতে উপার্জনের তথ্যটি সংখ্যায় টাইপ করে লিখতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হবে
স্কিমের চাঁদা নির্ধারণ
এই অংশে চাঁদার কিস্তি ও পরিমাণের কথা উল্লেখ করতে হবে। মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিকের মত তিনটি ভিন্ন উপায়ের মধ্য থেকে যে কোনো একটি প্রার্থী নিজের সুবিধা মত বেছে নিবেন।
চাঁদা পরিশোধের মাধ্যম
এখানে দিতে হবে ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারে যার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে চাঁদা পরিশোধ করা হবে, তার নাম ও অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিতে হবে। সেই অ্যাকাউন্টটি সঞ্চয়ী নাকি চলতি, তা উল্লেখ করে দিতে হবে। তারপর ব্যাংকের রাউটিং নাম্বারের জায়গায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ৯ অঙ্কের রাউটিং নাম্বারটি প্রবেশ করাতে হবে।
এই ব্যাপারে সঠিক ধারণা না থাকলে পাশের ‘রাউটিং নম্বর জানা নাই’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। এতে করে ছোট্ট একটি বক্স প্রদর্শিত হবে, যেখানে ব্যাংক ও তার শাখার নাম জানতে চাওয়া হবে। উপরে যে অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি দেওয়া হয়েছে সেটি যে ব্যাংকে খোলা হয়েছিলো তার ও তার শাখার নাম এখানে দিতে হবে। শাখাটি প্রার্থীর কাছাকাছি যে উক্ত ব্যাংকের যে কোনো শাখা হলেও চলবে। তথ্যগুলো নির্ভূল ভাবে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাউটিং নাম্বারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়ে যাবে।
এক বা একাধিক নমিনির তথ্য প্রদান
এবার নমিনির তথ্য দেওয়ার পালা। এখানে নমিনির এনআইডি সংখ্যা ও জন্ম তারিখ দেওয়ার পর নিচের ‘নমিনি যুক্ত করুন’ বাটনে ক্লিক করে বাকি অংশ উন্মুক্ত করতে হবে। এখানে থাকবে নমিনির মোবাইল নাম্বার, প্রার্থীর সঙ্গে তার কি সম্পর্ক, এবং প্রার্থীর অংশের কতটুকু তাকে দেওয়া হবে তা। নমিনি শুধু একজন হলে প্রার্থীর নামে থাকা সব অর্থই তিনি পাবেন।
একাধিক নমিনির জন্য ‘আরও নমিনি যুক্ত করুন’ বাটনে ক্লিক করে প্রত্যেকের জন্য পৃথক পৃথক প্রাপ্যতার অংশ উল্লেখ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প বিল সংসদে পেশ
তথ্য যাচাই
সব শেষে পেছনের সবগুলো তথ্য এক নজরে প্রদর্শিত হবে। এগুলো সব ঠিক আছে কিনা তা ভালভাবে যাচাই করতে হবে এবং এটিই নিবন্ধনের শেষ ধাপ। অনলাইনে সফল ভাবে জমাকৃত আবেদনটি প্রয়োজনে ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে।
সুরক্ষা স্কিমে পেনশনের চাঁদা জমা করার উপায়
অনলাইন পোর্টালে আবেদনের সময় যে মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া হয়েছিলো, সেখানে নিবন্ধনকারীর চাঁদা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানানো হবে। প্রতি কিস্তির টাকা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বরাবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাঠাতে হবে। কোনো কারণবশত এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধনকারী চাঁদা দিতে অপারগ হলে, পরবর্তী সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে তিনি কোনো জরিমানা ছাড়া চাঁদা দিতে পারবেন। কিন্তু এই সময় পার হয়ে গেলে, পরবর্তী প্রতিটি দিনের জন্য তাকে ১ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া তিনি তার স্কিম অ্যাকাউন্টটি সচল রাখতে পারবেন না।
শেষাংশ
দেশের স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা এভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যত স্বনির্ভর করে তুলতে পারেন। তথাকথিত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে থেকেও এই বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠি অংশ নিচ্ছে দেশের সমৃদ্ধিতে। অর্থনীতির এই তাৎপর্যপূর্ণ ভিত্তিটিকে মজবুত করতেই সরকারে এই সুরক্ষা স্কিম। সুরক্ষার অভিভাবকত্বে কোন প্রতিষ্ঠান বা সংঘের অধীনে না থাকা এই কর্মজীবীদের বার্ধক্যকালীন নির্ভরযোগ্যতায় স্থিরতা দিতে পারে। সেই সঙ্গে হতে পারে নিকট ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে দেশের উন্নয়নের নিশ্চায়ক।
আরও পড়ুন: ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগ দিতে পারবে
১ বছর আগে
প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) উদ্বোধন হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিম। এর মাধ্যমে দেশের সব শ্রেণীর পেশাজীবী মানুষ একীভূত হতে যাচ্ছে এই সুপরিকল্পিত পেনশন স্কিমের আওতায়। বিশেষ করে দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকেরা। বাংলাদেশের বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য স্বতন্ত্র একটি প্যাকেজ আছে মূল স্কিমের অধীনে। ‘প্রগতি’ নামের এই স্কিমটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটিরও স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণের সুবিধা রাখা হয়েছে। আজকে আলোচনা করা হবে বাংলাদেশের বেসরকারি চাকুরিজীবীরা কিভাবে প্রগতি স্কিম বা প্যাকেজে নিবন্ধন করতে পারবেন।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩-এর সাধারণ নিয়মাবলি
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩-এ প্রণীত সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩-এর অধীনে গঠন করা হয়েছে এই স্কিম। এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের নিমিত্তে নির্ধারণ করা হয়েছে কিছু নিয়মাবলি, যেগুলো বেসরকারি কর্মজীবীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড (এনআইডি) অনুসারে এই স্কিমে অংশগ্রহণের বয়সসীমা সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছর পর্যন্ত। ৫০ বছর বয়সের পরের নাগরিকরা বিশেষ বিবেচনায় স্কিমটি নিতে পারবেন, তবে তার মেয়াদ থাকবে ১০ বছর। অর্থাৎ টানা ১০ বছর চাঁদা প্রদানের পর থেকে তিনি আজীবন পেনশন পাওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
স্কিম নেওয়ার জন্য অবশ্যই অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীরা এই স্কিম নিতে চাইলে তাদের আগের সেই সুবিধাগুলো বাদ দিয়ে আসতে হবে।
স্কিম চালু হওয়ার সময় থেকেই প্রত্যেক চাঁদা প্রদানকারির নামে একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা হবে।
পেনশন পাওয়া অবস্থায় ৭৫ বছর বয়সের আগেই পেনশন গ্রহণকারী মারা যেতে পারেন। এমতাবস্থায় তার নমিনি বা মনোনীত উত্তরাধিকার বাকি সময়গুলোর পেনশন পাবেন।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থাটি চাঁদা প্রদান করার সময়েও হতে পারে। সেক্ষেত্রে নূন্যতম ১০ বছরের স্কিম শেষ না করেই যদি চাঁদা প্রদানকারীর মৃত্যু হয়, তাহলে জমাকৃত চাঁদার অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনি পাবেন।
পেনশন পাওয়ার উদ্দেশ্য চাঁদা হিসেবে জমা করা টাকা বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু পরবর্তীতে মাসিক পেনশন গ্রহণের সময় গ্রহণকারিকে পেনশনের উপর কোনও আয়কর দিতে হবে না।
সরকারি বিভিন্ন সেবার জন্য সেবা গ্রহণকারিকে ০.৭০ (শূন্য দশমিক সাত) শতাংশ ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হয়। এই স্কিমের ক্ষেত্রেও, মোবাইলের মাধ্যমে চাঁদা দেয়ার সময়ে চাঁদা প্রদানকারির প্রতি হাজারে ৭ টাকা খরচ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৬ আগস্ট বুধবার অন্যান্য সরকারি সেবার মত এই স্কিমেও মোবাইল আর্থিক সেবার জন্য অভিন্ন সার্ভিস চার্জটি ঠিক করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
প্রগতি: বেসরকারি চাকরীজীবীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম
প্রগতি স্কিম বা প্যাকেজে কিস্তিতে কত টাকার বিনিময়ে কত টাকা পেনশন পাবেন
মাসিক চাঁদার হার
২,০০০ টাকা
৩,০০০ টাকা
৫,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময় (বছর)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
৪২
৬৮,৯৩১
১,০৩,৩৯৬
১,৭২,৩২৭
৪০
৫৮,৪০০
৮৭,৬০১
১,৪৬,০০১
৩৫
৩৮,৩৭৪
৫৭,৫৬১
৯৫,৯৩৫
৩০
২৪,৯৩২
৩৭,৩৯৮
৬২,৩৩০
২৫
১৫,৯১০
২৩,৮৬৪
৩৯,৭৭৪
২০
৯,৮৫৪
১৪,৭৮০
২৪,৬৩৪
১৫
৫,৭৮৯
৮,৬৮৩
১৪,৪৭২
১০
৩,০৬০
৪,৫৯১
৭,৬৫১
সূত্র: বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, আগস্ট ১৩, ২০২৩
বেসরকারি কর্মচারি বা কর্মকর্তা উপরোক্ত হারে চাঁদা প্রদানের ভিত্তিতে যুক্ত হতে পারেন প্রগতি স্কিমের সঙ্গে। এখানে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি তথা কোম্পানির মালিক প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও নিতে পারে প্রগতি স্কিম। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পেনশনের জন্য উল্লেখিত চাঁদার পরিমাণ কোম্পানি তার কর্মচারির সাথে সমান ভাবে ভাগাভাগি করে নিবে।
অর্থাৎ প্রতি কিস্তির পুরো টাকা কর্মচারিকে একা দিতে হবে না। অর্ধেক দিবে কর্মচারি এবং অর্ধেক দিবে কোম্পানি।
বেসরকারি চাকরীজীবীদের সর্বজনীন পেনশন প্রগতি স্কিম-এ নিবন্ধন পদ্ধতি
বেসরকারি কর্মজীবীসহ অন্যান্য সকল পেশার বাংলাদেশি নাগরিককে ইউপেনশন ওয়েবসাইট-এর মাধ্যমে স্কিমে নিবন্ধন করতে হবে। সাইটটিতে যেয়ে সরাসরি ক্লিক করতে হবে পেনশনার রেজিস্ট্রেশন-এ।
প্রাথমিক শর্তাবলীতে সম্মতি জ্ঞাপন
প্রথম কাজ পরিচয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিবন্ধনের প্রাথমিক শর্তে সম্মতি দেওয়া। এখানে নিম্নোক্ত শর্তাবলিতে সম্মতি জ্ঞাপন ছাড়া পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়া যাবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বা স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি কিংবা আধা-সরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানের কর্মরত হওয়া যাবে না।
এই স্কিমের বাইরে কোনও স্বায়ত্তশাসিত অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও ধরণের সুবিধা ভোগকারি হওয়া যাবে না।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোনও ধরনের ভাতা গ্রহণকারী হওয়া যাবে না।
শর্তগুলোর নিচে ‘আমি সম্মত আছি’ বাটনে ক্লিক করে পরের পাতায় যেতে হবে। ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন বাতিল করা হবে। এমনকি চাঁদা প্রদানের সময় আবেদনের তথ্যে ভুল প্রমাণিত হলে, সেই অর্থ ফেরত দেয়া হবে না।
আয়ের শ্রেণী নির্বাচন
এ অংশে মুল স্কিম তথা আয়ের শ্রেণী বাছাই করতে হবে। বেসরকারি চাকরীজীবীরা প্রগতি ক্যাটাগরিটি নির্বাচন করবেন। অতঃপর একে একে ১০, ১৩ বা ১৭ অঙ্কের এনআইডি সংখ্যা, জন্ম তারিখ, মোবাইল নাম্বার এবং ই-মেইল আইডি প্রবেশ করাতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রার্থীর মোবাইল নাম্বারে ও ই-মেইল ঠিকানায় একটি ওটিপি (ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড) পাঠানো হবে। এটি অনলাইন ফর্মের নির্ধারিত শূন্যস্থানে নির্ভুলভাবে বসাতে হবে।
এবার নিচের দিকে থাকা ক্যাপচাটি নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্যাবলী
পরবর্তীতে ওয়েবপেজে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করতে হবে। তথ্যগুলো হচ্ছে এনআইডি সংখ্যা, ছবি, বাংলা ও ইংরেজিতে সম্পূর্ণ নাম, পিতা ও মাতার নাম, এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা। যেহেতু ইতোমধ্যে এনআইডি সংখ্যা একবার দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এখানে তথ্যগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। উপজেলা, জেলা ও বিভাগের নামগুলো ড্রপ ডাউন লিস্ট থেকে নির্বাচন করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: কী কী থাকছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায়
পেশার তথ্যাবলী
পেশার সেকশনে কয়েকটি পেশার নাম উল্লেখ করা থাকবে। সেগুলোর ভেতর থেকে বেসরকারি চাকরীজীবী নিজের পেশাটি বাছাই করে দিবেন। বার্ষিক আয়ের শূণ্যস্থানটিতে টাইপ করে সংখ্যায় লিখে দিতে হবে।
স্কিম তথ্য
এই পাতায় প্রার্থী মাসে কত করে চাঁদা দিবেন এবং কিভাবে দিবেন তা ঠিক করা হবে। চাঁদা পরিশোধের ধরণ তিনটি: মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক। এগুলো থেকে যে কোনও একটিকে প্রার্থী নিজের সুবিধা মত বেছে নিবেন।
তারপর দিতে হবে চাঁদা পরিশোধের উপায় তথা ব্যাংকের তথ্য। এখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার অর্থাৎ প্রার্থীর নাম বা যার অ্যাকাউন্ট থেকে চাঁদা পরিশোধ করা হবে তার নাম ও অ্যাকাউন্ট নাম্বার সরবরাহ করতে হবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ধরণ হিসেবে সঞ্চয়ী ও চলতি থেকে যে কোনও একটি বাছাই করে দিতে হবে। তারপর দিতে হবে ব্যাংকের রাউটিং নাম্বার। এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর হয়। নাম্বারটি জানা না থাকলে গুগল সার্চ ইঞ্জিন-এ সার্চ করে সহজেই জেনে নেয়া যেতে পারে।
এছাড়া, এই অনলাইন ফর্ম থেকে না বের হয়েও শুধুমাত্র পাশের ‘রাউটিং নম্বর জানা নাই’ বাটনেও ক্লিক করা যেতে পারে। এতে চটজলদি ছোট্ট একটি বক্স হাজির হয়ে ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখার নাম জানতে চাইবে। এই তথ্যগুলো সঠিক ভাবে দেয়া হলে সাথে সাথেই রাউটিং নাম্বারটি আপনাতেই নির্ধারিত স্থানে আপডেট হয়ে যাবে।
নমিনি পাতা
পরের পাতায় এসে নমিনির যাবতীয় তথ্য তথা- তার এনআইডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ দেয়া লাগবে। এরপর নিচের ‘নমিনি যুক্ত করুন’ বাটনের মাধ্যমে অন্যান্য তথ্যের অংশ উন্মুক্ত হবে। এখানে নমিনির মোবাইল নাম্বার ও প্রার্থীর সঙ্গে তার কি সম্পর্ক তার পাশাপাশি তিনি প্রার্থীর অংশের কতটুকু পাবেন তা উল্লেখ করতে হবে। একাধিক নমিনি না থাকলে একজনই প্রার্থীর সম্পূর্ণ অংশের নমিনি হবেন।
‘আরও নমিনি যুক্ত করুন’ বাটনটি একাধিক নমিনির জন্য। এর মাধ্যমে একাধিক নমিনি যুক্ত করে তাদের প্রাপ্য অংশটুকু উল্লেখ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তথ্য যাচাই ও নিবন্ধনের শেষ ধাপ
সম্পূর্ণ ফরমে ক্লিক করার পর এই পাতায় ব্যক্তিগত, স্কিম, ব্যাংক ও নমিনি সব তথ্য একসাথে দেখানো হবে। এগুলো এক নজরে দেখে নিয়ে নির্ভূল তথ্যের ব্যাপারে সম্মতি দিলেই শেষ হবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া। পূরণকৃত সম্পূর্ণ আবেদনটি ডাউনলোড করে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে।
প্রগতি স্ক্রিমে পেনশনের চাঁদা জমা দেওয়ার উপায়
আবেদনপত্রে সরবরাহকৃত মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানায় সময় মত নিবন্ধনকারির চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা দেওয়ার তারিখ জানানো হবে। কিস্তি অনুযায়ী ধার্য চাঁদার টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কোনও কারণে এই সময়ে চাঁদা দেয়া সম্ভব না হলে, পরবর্তী সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে জরিমানা ছাড়াই চাঁদা দেওয়া যাবে। এই এক মাসের সময়সীমাটি অতিক্রম হলে পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য জরিমানা দিবে হবে ১ শতাংশ হারে। অন্যথায় স্কিম অ্যাকাউন্টটি অচল হয়ে যাবে।
পরিশিষ্ট
জাতীয় আর্থ-সামাজিক অবস্থার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এগুলো প্রতি বছরই যোগান দিচ্ছে বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠি। এই জনসম্পদকে আর্থিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেয়ার মত আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বয়স্ক জনগোষ্ঠির বর্ধমান পরিসংখ্যানটি। সেখানে এই ‘প্রগতি’ স্কিমটি হতে পারে চূড়ান্ত মুক্তির উপায়। বেসরকারি চাকরীজীবীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এর প্রগতি প্যাকেজে রেজিস্ট্রেশন করলে, এটি ভবিষ্যতে বার্ধক্যের সময় তাদের স্বনির্ভর করবে।
১ বছর আগে
প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হলো সর্বজনীন পেনশন স্ক্রিম। গত ১৩ আগস্ট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রজ্ঞাপনটি জারি করে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে প্রধানমন্ত্রী পেনশন প্রকল্পটির শুভ উদ্বোধন করেন। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের আয়ের ধরন যাচাই করে তাদেরকে ৪টি ভিন্ন প্রধান ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে: বেসরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী অথবা অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মী, স্বল্প আয়ের ব্যক্তি এবং প্রবাসী বাংলাদেশি। আজকের নিবন্ধে এই প্রবাসী বাংলাদেশিরা কীভাবে সর্বজনীন পেনশন 'প্রবাস' স্কিম-এ নিবন্ধন করবেন- তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩-এর সাধারণ নিয়ম
বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু বৃদ্ধির রেশ ধরে বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নির্ভরশীলতার হার, যা ভবিষ্যতে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, আর্থিক অস্থিরতা নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর উৎপাদনশীলতায়। এই তাৎপর্যবহুল বিষয় দু’টির সমাধানকল্পেই উদ্ভূত হয়েছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩-এর।
আরও পড়ুন: কী কী থাকছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায়
প্রকল্পের আওতাভূক্ত সর্বসাধারণের জন্য প্রযোজ্য সাধারণ নিয়মাবলী:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এর ভিত্তিতে ১৮ বছর বয়স থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত সকল বাংলাদেশি নাগরিক এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পঞ্চাশোর্ধ নাগরিকরা বিশেষ বিবেচনায় স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তারা শুধুমাত্র ১০ মেয়াদী স্কিমটা নিতে পারবেন। ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে উপনীত বয়স থেকে তিনি আজীবন পেনশন পাবেন।
- আগ্রহীরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন করে যে কোনো একটি স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। ইতোমধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্তদের এই পেনশন স্কিমে অংশ নিতে হলে তাদের পূর্ববর্তী ভোগ করা সুবিধাদি বাদ দিতে হবে।
- বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরাও এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। প্রবাসীদের এনআইডি না থাকলে, পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে যত দ্রুত সম্ভব এনআইডি প্রস্তুত করে জমা দিতে হবে।
- কর্মসূচি শুরুর সময় থেকে প্রত্যেক চাঁদাদানকারীর জন্য একটি আলাদা পেনশন অ্যাকাউন্ট খোলা হবে।
- পেনশন চলাকালে ৭৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই পেনশন গ্রহণকারীর মৃত্যু হতে পারে। এক্ষেত্রে তার মনোনীত উত্তরাধিকারকে বাকি সময়ের পেনশনগুলো প্রদান করা হবে।
- কমপক্ষে ১০ বছরের প্রকল্প সম্পন্ন করার আগে চাঁদাদানকারীর মৃত্যু হতে পারে। এ অবস্থায় চাঁদা হিসেবে জমা করা সমুদয় অর্থ মুনাফাসহ তার মনোনীত উত্তরাধিকারকে ফেরত দেওয়া হবে।
- পেনশনের জন্য দেওয়া চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে, তবে তা কর রেয়াতের আওতাভুক্ত হবে। অর্থাৎ, পরবর্তীতে মাসিক পেনশনের ওপর কোনো আয়কর ধার্য হবে না।
- সরকারি বিভিন্ন সেবা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে ধার্য করা ক্যাশআউট চার্জ শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ এই কর্মসূচির জন্যও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, মোবাইলের মাধ্যমে পেনশনের চাঁদা দেওয়ার সময় চাঁদাদানকারীকে প্রতি হাজারে ৭ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে এই প্রকল্পে অভিন্ন সার্ভিস চার্জের বিষয়টি নির্ধারিত হয় ১৬ আগস্ট।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩
প্রবাস স্কিম/প্যাকেজে কত টাকার কিস্তিতে মাসিক কত টাকা পেনশন পাবেন
মাসিক চাঁদার হার
৫,০০০ টাকা
৭,৫০০ টাকা
১০,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময় (বছর)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
মাসিক পেনশন (টাকায়)
৪২
১,৭২,৩২৭
২,৫৮,৪৯১
৩,৪৪,৬৫৫
৪০
১,৪৬,০০১
২,১৯,০০১
২,৯২,০০২
৩৫
৯৫,৯৩৫
১,৪৩,৯০২
১,৯১,৮৭০
৩০
৬২,৩৩০
৯৩,৪৯৫
১,২৪,৬৬০
২৫
৩৯,৭৭৪
৫৯,৬৬১
৭৯,৫৪৮
২০
২৪,৬৩৪
৩৬,৯৫১
৪৯,২৬৮
১৫
১৪,৪৭২
২১,৭০৮
২৮,৯৪৪
১০
৭,৬৫১
১১,৪৭৭
১৫,৩০২
সূত্র: বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, আগস্ট ১৩, ২০২৩
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হবে
প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্বজনীন পেনশন 'প্রবাস' প্যাকেজে নিবন্ধন পদ্ধতি
প্রবাসীসহ অন্য সকল ক্যাটাগরিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিককে প্রথমেই যেতে হবে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে। এরপর সরাসরি ক্লিক করতে হবে পেনশনার রেজিস্ট্রেশনে।
পরিচয় ধরন নিশ্চিতকরণ
নিবন্ধন প্রক্রিয়ার প্রথম পাতায় প্রার্থীর পরিচয়ের ধরন নিশ্চিত করতে হবে। এখানে প্রার্থীকে অবশ্যই কোনও সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হওয়া যাবে না। এই স্কিম-বহির্ভূত কোনও ধরনের সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো সুবিধা প্রাপ্ত হওয়া যাবে না। এমনকি যারা ইতোমধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের ভাতা গ্রহণ করছেন, তারাও এই নিবন্ধন করতে পারবেন না।
এই সবগুলো ধরন যাচাই করে ‘আমি সম্মত আছি’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ভুল তথ্য দিয়ে করা আবেদন বাতিল করা হবে। এমনকি এর ভিত্তিতে পরবর্তীতে পেনশনের জন্য চাঁদা দেয়া হলে সেই অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না।
আয়ের ক্যাটাগরি নির্বাচন
এরপরের ওয়েবপেজটি প্রার্থীর ক্যাটাগরি নির্বাচনের। প্রবাসীরা এগুলোর মধ্য থেকে প্রবাস ক্যাটাগরিটি নির্বাচন করবেন। সেই সঙ্গে তাকে ১০, ১৩ বা ১৭ অঙ্কের এনআইডি সংখ্যা এবং জন্ম তারিখ প্রবেশ করাতে হবে। মোবাইল নাম্বার এবং ই-মেইল আইডির জায়গায় সব সময় ব্যবহৃত নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানা দিতে হবে। কেননা এগুলোতে নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে চাঁদা ও পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় বার্তা পাঠানো হবে। তথ্যগুলো সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করে নিচের দিকে থাকা ক্যাপচা পূরণ করে পরের পাতায় চলে যেতে হবে।
এ সময় প্রার্থীর মোবাইল নাম্বারে ও ই-মেইল ঠিকানায় একটি ওটিপি (ওয়ান-টাইম-পাসওয়ার্ড) আসবে। এটি অনলাইন ফর্মে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্ভুলভাবে সরবরাহ করার পরই পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: সংসদে সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন বিল পাস
ব্যক্তিগত তথ্যাবলী
এবার আসবে ব্যক্তিগত তথ্যের ওয়েবপেজ। এখানে এনআইডি সংখ্যা, ছবি, বাংলা ও ইংরেজিতে পুরো নাম, পিতা ও মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সবকিছু এনআইডি অনুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে।
বার্ষিক আয়ের ঘরটিতে সংখ্যা লিখে পূরণ করতে হবে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম ড্রপডাউন লিস্ট থেকে নির্বাচন করতে হবে। পেশা বাছাইয়ের ঘরে উল্লেখিত পেশাগুলো ভেতর থেকে নিজের পেশাটি নির্বাচন করে দিতে হবে। সব তথ্য পূরণ শেষ হলে পরের ‘স্কিম তথ্য’-এর পাতায় যেতে হবে।
স্কিম তথ্য
স্কিম তথ্যের এই পাতায় মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের ধরন নির্ধারণ করা হবে। মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক-এই তিন চাঁদা পরিশোধের ধরন থেকে প্রার্থী নিজের সুবিধাজনক অপশনটি বাছাই করতে পারবেন।
চাঁদা পরিশোধের মাধ্যম
এবার ব্যাংক তথ্যের ধাপে প্রার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম ও নাম্বার লিখতে হবে। সঞ্চয়ী অথবা চলতি থেকে প্রার্থীর নিজের হিসাবটি বাছাই করতে হবে। রাউটিং নাম্বার দেয়ার ক্ষেত্রে নাম্বারটি জানা না থাকলে পাশের ‘রাউটিং নম্বর জানা নাই’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এ সময় ছোট্ট একটি বক্স পপআপ হবে, যেখানে ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখার নাম চাওয়া হবে। এই তথ্যগুলো যথাযথভাবে পূরণ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাউটিং নম্বরটি সংযুক্ত হয়ে যাবে। এরপরের পাতাটি হচ্ছে নমিনি বা প্রার্থীর মনোনীত উত্তরাধিকারের তথ্যের পাতা।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প বিল সংসদে পেশ
নমিনি পাতা
এখানে নমিনির এনআইডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিতে হবে। তারপর নমিনি ‘যুক্ত করুন’-এ ক্লিক করলে নমিনির বিস্তারিত তথ্যের অংশটুকু উন্মুক্ত হবে। এখানে মোবাইল নাম্বার, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক এবং নমিনির প্রাপ্যতার হারের তথ্য দিতে হবে। চাইলে এখানে একাধিক নমিনিও যুক্ত করা যাবে। এক্ষেত্রে ‘আরও নমিনি যুক্ত করুন’-এ ক্লিক করে একই পদ্ধতিতে একাধিক নমিনি যুক্ত করতে হবে। তথ্য দেয়া সম্পন্ন হলে ‘সম্পূর্ণ ফরম’ ধাপে চলে যাওয়া যাবে।
যাবতীয় তথ্য যাচাইকরণ
নিবন্ধনের এই শেষ ধাপে আগে পূরণ করা ব্যক্তিগত, স্কিম, ব্যাংক ও নমিনি সব তথ্যগুলো দেখানো হবে। এগুলো সঠিক আছে কি না তা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করে তাতে সম্মতি দিলেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এ সময় প্রার্থী সম্পূর্ণ আবেদনটি ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
প্রবাস স্কিম বা প্যাকেজে পেনশনের চাঁদা জমা দেয়ার কিছু নিয়ম
আবেদনপত্রে দেয়া মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল-এ প্রার্থীর চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা দেওয়ার তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। প্রতি কিস্তির চাঁদা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে। যে কোনও বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড দিয়ে প্রার্থী স্ব স্ব বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা জমা দিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগ দিতে পারবে
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা না দেয়া হলে জরিমানা মুক্ত চাঁদা দেওয়ার জন্য পরবর্তী সর্বোচ্চ এক মাস পাওয়া যাবে। এক মাস পার হয়ে গেলে পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে হবে।
প্রবাসী ব্যক্তি দেশে ফিরে এলে টাকায় চাঁদা প্রদান করবেন। আর চাঁদার মেয়াদ শেষের পর পেনশনটাও তারা পাবেন টাকায়। এছাড়া একেবারে দেশে ফিরে এলে প্রয়োজনে স্কিমও পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন।
শেষাংশ
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী এই সর্বজনীন পেনশন 'প্রবাস' স্স্কিম। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ডিজিটালকরণ করায় নিবন্ধনসহ যাবতীয় তথ্য নথিভূক্তকরণ নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন করার সম্ভব হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন স্ক্রিম ২০২৩-এর সুষ্ঠু সেবা নিতে পারবেন দেশের যে কোনো নাগরিক। সেই সঙ্গে সমাধান হবে পেনশন সংক্রান্ত পূর্বের সব রকম সমস্যা। এতে কেবল একটি নির্দিষ্ট স্তরের জনগোষ্ঠীর অবস্থার উত্তোরণ হবে- তা নয়, বরং নতুন নাগরিকরাও সাগ্রহে নিজেদেরকে সংযুক্ত করবেন এই প্রকল্পের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
১ বছর আগে