অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
কপ২৯: আজারবাইজানের পথে প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘের বৃহত্তম জলবায়ু সম্মেলন, কপ-২৯ এ যোগ দিতে আজারবাইজানের বাকুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সোমবার বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, ১৪ নভেম্বর তিনি দেশে ফিরবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকি কীভাবে এড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকরা বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (কপ২৯) ২৯তম সম্মেলন ১১ থেকে শুরু হয়ে, ২২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এবারের কপ-২৯ এ অংশ নিচ্ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
উন্নত দেশগুলোর প্রতি জলবায়ু আর্থিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সহায়তার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে উন্নত দেশগুলোর তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর।’
১৮৪৬ সালে বিশ্বের প্রথম তেল ক্ষেত্র গড়ে উঠেছিল বাকুতে এবং ১৮৯৯ সালে তেল উৎপাদনকারী বিশ্বের নেতৃত্ব দিত আজারবাইজান।
আজারবাইজানের রপ্তানির প্রায় সবই তেল ও গ্যাস। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের প্রধান উত্সগুলোর মধ্যে দুটি হলো তেল ও গ্যাস।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এপ্রিল মাসে এগুলোকে ‘সৃষ্টিকর্তার উপহার’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
আলিয়েভ বলেছেন, কপ২৯ সম্মেলনটি আজারবাইজানের জন্য একটি ‘বড় সম্মান’।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ঘটনাগুলো বিশ্বজুড়ে মানুষকে প্রভাবিত করছে। কপ২৯-এ বিভিন্ন দেশের সরকার, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের নেতারা অংশ নিচ্ছেন। সুনির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে তারা আলোচনা করবেন।
আয়োজকদের মতে, কপ২৯ এর মূল ফোকাস অর্থায়নের দিকে থাকবে, কারণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে দেশগুলোর জন্য ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
প্যারিস চুক্তির অধীনে তাদের হালনাগাদ জাতীয় জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনের জন্য এই সম্মেলন ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ কর্মপরিকল্পনা ২০২৫ সালের প্রথম দিকে নির্ধারিত হবে।
যদি সঠিকভাবে করা হয় তবে এই পরিকল্পনাগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিনিয়োগের পরিকল্পনার দ্বিগুণ করবে।
১ সপ্তাহ আগে
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন প্রধান
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।
রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে গঠিত সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে কমিশন প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কারে অবদান রাখতে আগ্রহী ফিনল্যান্ড: প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রদূত
জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোটার তালিকা সমন্বয় করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কমিশন প্রধান বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও অনুপস্থিত ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালট নিয়ে কাজ চলছে বলে জানান বদিউল আলম মজুমদার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে আরও জানা গেছে, নির্বাচন সংস্কার কমিশন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং তাদের পরামর্শ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
২ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশের সংস্কারে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক: অজয় বাঙ্গা
বাংলাদেশে আর্থিক খাত সংস্কারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
নিউইয়র্ক সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু বাঙ্গা জানান, কমপক্ষে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার নতুন ঋণ দেওয়া হবে। আর আগে প্রতিশ্রুত দেড় বিলিয়ন ডলার নতুন করে যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে পাকিস্তানের সমর্থন চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিশ্বব্যাংক ডিজিটাইজেশন, তারল্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে সংস্কারে সহায়তা করবে।
অজয় বাঙ্গার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত ব্যাপক সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের সমর্থন চান অধ্যাপক ইউনূস।
বিশ্বব্যাংককে ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে সৃজনশীল হতে বলেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’
দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতে সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগাভাগি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে আরও ছিলেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী চীন
১ মাস আগে
বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী চীন
চীন বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় তার দেশ।
নিউইয়র্ক সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ বিষয়ে জানান।
আরও পড়ুন: প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে কানাডা: ড. ইউনূসকে জাস্টিন ট্রুডো
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে যদি চীনা বিনিয়োগ আসে তাহলে এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে কারণ এটি একটি বিশাল বিনিয়োগ এবং এটি বিপুল কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই বিনিয়োগ থেকে লাভবান হবে এবং বাংলাদেশ হবে সোলার প্যানেলের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ।
চীন বাংলাদেশের সঙ্গে 'সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব' জোরদার করতে চায় বলে জানান প্রেস সচিব।
'চীনা জনগণের পুরনো বন্ধু' হিসেবে বর্ণনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আপনার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আপনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন।’
ওয়াং ই আরও বলেন, বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে চীনা প্রস্তুতকারকদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বানকে চীন গুরুত্ব দেবে।
গত মাসে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বেইজিং দুই দেশের কোম্পানিগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করবে বলে জানান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সব পণ্যে শূন্য শুল্ক সুবিধা দেওয়া নিয়ে চীনের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশও লাভবান হবে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’ শুরু করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মারাত্মকভাবে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার জন্য চীনের রেড ক্রস চিকিৎসকদের একটি দল পাঠিয়েছে।
চীন বাংলাদেশ থেকে আরও শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাবে বলে উল্লেখ করেন ওয়াং ই।
চীনের এই আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস। কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে চীনের 'বিস্ময়কর' প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, চীনা সোলার প্যানেল কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিয়োগ করতে পারে, যা অনেক ধনী দেশের বাজারে প্রবেশাধিকারের সুযোগ করে দেবে।
এসময় অন্যান্য চীনা নির্মাতাদের বাংলাদেশে তাদের কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
এছাড়াও তিনি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'নতুন অধ্যায়ের' শুরুর বিষয়ে জোর দেন।
পাশাপাশি দুই দেশের কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে পছন্দ করব। আমাদের একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কার এজেন্ডা এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে আইএমএফ: অধ্যাপক ইউনূসকে জর্জিয়েভা
১ মাস আগে
জাতি পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান ইউনূস
দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং চুরি যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং দেশের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, তার প্রশাসন অর্থনীতিকে ‘পুনঃস্থাপন, সংস্কার ও পুনরায় চালু করতে’ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে, আর্থিক খাতে সংস্কার শুরু করেছে এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করছে।
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধান উপদেষ্টা এ সহায়তা চান।
আরও পড়ুন: ইউনূস ও ছাত্রনেতাদের প্রতি ফারাহ কবিরের খোলা চিঠি
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক গঠন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'যেহেতু বাংলাদেশ আরও ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের রূপরেখা খুঁজছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র এই প্রচেষ্টায় সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের কথা বলেন, যা বাংলাদেশে আশার নতুন যুগের সূচনা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক জেরড ম্যাসন বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন।
এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের একটি রূপরেখা বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ভোট কারচুপি রোধ; বিচার বিভাগ, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন ও দেশের দুর্নীতি দমন সংস্থার সংস্কার এবং সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে তার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর ছয়টি কমিশন গঠন করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের চুরি করা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দুর্নীতি মোকাবিলায় সরকার যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা দুর্নীতির সাগরে ছিলাম।’
মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা ব্রেন্ট নেইম্যান ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ওয়াশিংটন ডিসি তার সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী।
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম ইস্যু, রোহিঙ্গা সংকট এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর নিয়েও আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি ড. ইউনূস ও তার উপদেষ্টাদের শ্রদ্ধা
২ মাস আগে
বন্যা সংকটে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক উভয় ধরনের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা একটা পরিবার। আমাদের লক্ষ্য একটাই। আমরা আমাদের যুবসমাজের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ে এনজিওগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
তাদের এই প্রচেষ্টায় সমর্থন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক সমাধান না খুঁজে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।
তার বক্তব্যে ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও জানান অধ্যাপক ইউনূস।
৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার দ্বিতীয় জাতীয় ভাষণ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যায় রবিবার দুপুর পর্যন্ত ১১টি জেলার ৭৩টি উপজেলার অন্তত ১০ লাখ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত নতুন করে কেউ মারা না গেলেও মৌলভীবাজারে দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় এনজিওগুলোর দক্ষতা কাজে লাগানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন করে এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন। ৫৪৫টি পৌরসভা ও ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তৃত এই বন্যায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংকটের মধ্যে ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জন। পাশাপাশি ২২ হাজার ২৯৮টি গৃহপালিত পশুও রাখা হয়েছে।
সরকার দুর্গত এলাকায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ৭৪৮টি মেডিকেল টিম মোতায়েন করেছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বন্যাকবলিত ১১ জেলায় তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি ২০ হাজার ৬৫০ টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেজ শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের গো-খাদ্য বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
বেসরকারি সংস্থা, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষও ত্রাণ তৎপরতায় যোগ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
বন্যাকবলিত এলাকার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন অংশীজনরা কাজ করে যাচ্ছেন।
২ মাস আগে
ইউনূসকে সরকার হয়রানি করছে না, বিবৃতিদাতাদের প্রকৃত ঘটনা জানতে হবে: অর্থমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে হয়রানি করছে না। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে কর ফাঁকি ও শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলও সরকার করেনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রফেসর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি অনেকের কাছে বোধহয় স্পষ্ট নয়। অনেকেই মনে করছেন তাকে রাজনৈতিক কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা যতদূর জানি, তার বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। আমরা তাকে শ্রদ্ধা জানায়। তিনি দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন।
তিনি আরও বলেন, তার নামে দুইটা মামলা আছে। মামলার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা যতদূর জানি, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী উনার কোম্পানি যে লাভ করেছে, তার ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দিতে হয়। আমরা যেটা শুনেছি, উনার কোম্পানি শ্রমিকদের ঠকিয়েছে। লাভের অংশ তাদের দেয়নি। এটার সত্যতা কোর্টে প্রমাণ হবে। কোর্টের বিষয় আমার বলা ঠিক হবে না।
মোমেন বলেন, উনার নামে দ্বিতীয় মামলাটি হলো, উনার কোম্পানি অনেক লাভ করেছে, কিন্তু কর দেয়নি। আর লাভ করলে দুনিয়ার সব দেশের নিয়ম হলো কর দেওয়া। উনার কোম্পানি কর ফাঁকি দিয়েছে। যেহেতু তিনি কোম্পানির বস, তাই উনার নামেই মামলা করা হয়েছে। আর দুনিয়ার সব দেশেই কর ফাঁকি দেওয়া হলে বড় ধরনের মামলা হয়।
আরও পড়ুন: আগামী দিনে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও গভীর হবে: উজবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে কোনো হয়রানিমূলক কাজ সরকার করেনি। দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, কর ফাঁকি দেওয়া এবং দরিদ্র শ্রমিকদের লাভের অংশ না দিয়ে প্রতারণা করার কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর উনার বিষয়ে যারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন তারা হয়তো বিষয়গুলো জানেন না। তারা ভাবছেন, উনাকে হয়তো রাজনৈতিক কারণে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি আশা করব যারা চিঠি লিখেছেন তারা বিষয়টি আরও জানবেন। তারা যদি আমাদের কাছে জানতে চান, আমরা অবশ্যই তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলব।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এস এম আরিফুজ্জামান ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা দায়ের করেন। চলতি বছরের ৬ জুন মামলায় অধ্যাপক ইউনূসসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। গত ২২ আগস্ট মামলার শুনানি শুরু হয়।
১০০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনের বেশি বিশ্ব নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। বাংলাদেশের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সুরক্ষা এবং সুস্থতার বিষয়ে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি সম্বোধন করা চিঠিতে নোবেল বিজয়ী, নির্বাচিত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের নেতাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
আরও পড়ুন: আলজেরিয়ার কাছ থেকে এলএনজি কিনতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত: সুইস রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে