গালফ এয়ার
পাইলটের মৃত্যুর ঘটনায় গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
বাহরাইনের জাতীয় পতাকাবাহী গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে উড্ডয়নের সময় অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া এক পাইলটের মৃত্যুর তদন্তে বাধা সৃষ্টিকরার অভিযোগ উঠেছে।
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ারের কথিত অবহেলার কারণে জর্ডান-আমেরিকান পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দি মারা যান।
নিহত পাইলটের বোন মার্কিন নাগরিক তালা এলহেনডি জোসেফানো শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন।
তিনি দাবি করেন, গালফ এয়ারের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহ তার ভাইয়ের মৃত্যুর তদন্তে বাধা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বিমানে পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে: প্রতিমন্ত্রী
ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তালা এলহেন্দি দাবি করেন, কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহ মামলার প্রধান সাক্ষী হলেও সহযোগিতা করছেন না, যা পিবিআই তদন্তের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
প্রয়াত পাইলটের বোন জানিয়েছেন, মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির অবহেলাজনিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আটকে রাখা এবং গালফ এয়ারের প্রধান সাক্ষীদের বক্তব্য আটকে দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছে।
এই মামলায় ইশা শাহকে 'প্রধান সাক্ষী' উল্লেখ করে তালা আরও বলেন, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে ঈসা শাহ ২৫ জুন একটি কোম্পানির অনুষ্ঠানে ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু কেন তিনি পিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, জবানবন্দি দিতে পারেননি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হাজির করতে পারেননি তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলস্বরূপ, আমাদের পরিবার ন্যায়বিচারে বাধা দেওয়ার জন্য ইশা শাহ এবং গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে নিজ দেশ জর্ডান ও আন্তর্জাতিক আদালতে জুরিসডিকসনে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের পিবিআই তদন্তে সহযোগিতা করতে বাধা দিতে গালফ এয়ারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আরও পড়ুন: ড্রিমলাইনারে বিদেশি পাইলটদের 'লাইন ট্রেনিং' দিচ্ছে বিমান
তালা আরও বলেন, ‘এই ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতা ছাড়াও তারা গণমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতিও দিয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় ফ্লাইট চালুর জন্য ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে গালফ এয়ার। এছাড়া তারা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) অডিট সদ্য শেষ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এমন পরিস্থিতিতে গালফ এয়ার আমার ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ও ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) কাছে গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।’
তালা বলেন, এই বিশেষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলের মান ও কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এফএএ ও আইএটিএকে গালফ এয়ারের কথিত অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবহিত করা, যা আমার পাইলট ভাইয়ের মৃত্যুর প্রধান কারণ।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই গুরুতর অভিযোগগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে।’
আরও পড়ুন: বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
১ বছর আগে