লি কিয়াং
জি২০ সম্মেলনে যোগ দেবে না শি, তবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘স্থিতিশীল’ রয়েছে: চীন
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারতে এই সপ্তাহের গ্রুপ অব-২০ (জি২০) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে বেইজিং বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই এশিয়ান জায়ান্টের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে ‘স্থিতিশীল’ রয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) চীন ঘোষণা করেছে, প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জি২০ সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
সীমান্ত বিরোধের কারণে চীন ও ভারতের সম্পর্ক এখনও হিমশীতল। এমনকি বছর তিনেক আগে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষেও জড়ায় এই দুই পরাশক্তি। সে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় এবং চার চীনা সেনা নিহত হয়েছিল।
এমনকি সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় দুই পক্ষ কামান, ট্যাঙ্ক, ফাইটার জেট এবং কয়েক হাজার সামরিক কর্মী মোতায়েন করেছে।
বিরোধের উল্লেখ না করে বা প্রেসিডেন্ট শি’র অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণ উল্লেখ না করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, চীনা নেতারা ‘সর্বদাই ভারতের এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনকে সমর্থন করেছেন এবং জি২০ শীর্ষ সম্মেলন সফল করতে সকল পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে তারা প্রস্তুত।’
মাও একটি দৈনিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে চীন-ভারত সম্পর্ক স্থিতিশীল রয়েছে এবং সকল স্তরে সংলাপ ও যোগাযোগ বজায় রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চীন-ভারত সম্পর্কের বৃহত্তর এবং ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের জন্য ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে বাংলাদেশিদের: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাণিজ্য, প্রযুক্তি, বিনিয়োগ এবং চীনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।
ভারত ও চীন উভয়ই একে অন্যের সাংবাদিকদের বহিষ্কার করেছে এবং একসময় এক দেশের প্রচুর শিক্ষার্থী অন্য দেশে পড়তে যেত, কিন্তু এখন শিক্ষা বিনিময় শূন্যের কোঠায়।
ভারত সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কম্পিউটার, ইস্পাত তৈরি, মহাকাশ অনুসন্ধান এবং অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এই দুই দেশ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
ভবিষ্যতে সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমানোর জন্য চীনা ও ভারতীয় সামরিক কমান্ডাররা গত মাসে বৈঠক করেন এবং লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বরাবর শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার’ প্রতিশ্রুতি দেন।
লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল পশ্চিমে লাদাখ থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের চীন ও ভারত-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোকে পৃথক করেছে। অবশ্য চীন সম্পূর্ণ অরুণাচল প্রদেশের মালিকানা দাবি করে।
জি২০-এ যোগ না দিয়ে শি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় বসার একটি সুযোগ প্রত্যাখান করেছে। যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এছাড়া, চীন আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শি নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোতে এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার নেতাদের বৈঠকেও যোগ দেবেন না।
আরও পড়ুন: যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করছে, তারা কখনোই রাখাইন যায়নি: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
অগ্রাধিকারমূলক ঋণ, জিডিআই ও সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন তহবিলের উপযুক্ত ব্যবহার করবে বাংলাদেশ: প্রত্যাশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
১ বছর আগে