খেজুর
চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
অম্লত্বের ভারসাম্য বজায় রাখা, বরফের স্ফটিক গঠনে প্রতিরোধ সৃষ্টি এবং আর্দ্রতা ধরে রাখা; চিনির এই কার্যকারিতা শরবতসহ নানান ধরনের খাবারে মিষ্টি স্বাদ যোগ করে। এছাড়া চিনির মধ্যে থাকা গ্লুকোজ মানুষের শরীরের জন্য দরকারি একটি উপাদান।
বিপাকের সময় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং চর্বি জাতীয় খাদ্যের অণুগুলো ভেঙে শরীরের প্রয়োজনীয় গ্লুকোজের চাহিদা পূরণ হয়। তাই আলাদা করে আর গ্লুকোজের দরকার পড়ে না। বরং এরপরেও খাবারে আলাদাভাবে চিনি নেওয়া হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উল্টো ক্ষতিকর। এই ক্ষতির কারণ যাচাইয়ের পাশাপাশি চলুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো চিনির বিকল্প হিসেবে এই ক্ষতি থেকে দূরে রাখতে পারে।
চিনি কেন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
মিষ্টি স্বাদযুক্ত খাবার গ্রহণের পর খাবারে থাকা চিনি মস্তিষ্কে ডোপামিন হরমোন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে। এতে করে সেই ভালো লাগা স্বাদটি পুনরায় পাওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এভাবে মিষ্টি খাবার গ্রহণের পুনরাবৃত্তি থেকে সৃষ্টি হয় আসক্তি। ফলশ্রুতিতে, দেহের অভ্যন্তরে চিনির আধিক্য জনিত জটিলতাগুলো দেখা দিতে শুরু করে। এখানে সরাসরি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতা।
শুরুটা হয় মেজাজের অস্থিরতা, ব্রণ ওঠা, ক্লান্তি এবং প্রদাহের মতো বিরক্তিকর উপসর্গ দিয়ে। ধীরে ধীরে প্রচন্ড মাথাব্যথা ও ক্ষুধামন্দার মাধ্যমে দৈনন্দিন শারীরিক অবস্থা আরও বেশি খারাপের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
আরও পড়ুন: সেহরি ও ইফতারে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যকর দেশি ফল
চরম অবস্থায় ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, দাঁতের ক্ষয়, ফ্যাটি লিভার, দ্রুত বার্ধক্য এবং ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
চিনির ১০টি স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
কাঁচা মধু
শুধুমাত্র প্রাকৃতিগত মিষ্টতার জন্যই নয়, মধু দীর্ঘকাল ধরে তার পুষ্টিগুণের জন্যও ব্যাপকভাবে সমাদৃত। এই ঘন তরল পদার্থটি মধু-মৌমাছি দ্বারা উদ্ভিদের নির্যাস থেকে পরাগায়ন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই মধু বেশ কিছু উপকারী উদ্ভিদ যৌগ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয়।
কাঁচা বা গাঢ় মধু কদাচিৎ প্রক্রিয়াজাত করা হয় বলে এর ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ফেনোলিক অ্যাসিড পুরোটাই পাওয়া যায়। এগুলো রক্ত, হৃদপিন্ড, পরিপাক এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে। এমনকি এটি মৌসুমী অ্যালার্জি কমাতেও সক্ষম।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন বি-এর কারণে ঠান্ডা লাগার প্রতিকার স্বরূপ মধু চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করা হয়। মধু-চা একই সঙ্গে ঠান্ডা লাগার প্রতিকার এবং মিষ্টি পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই চা পানের পরিমাণ যেন অতিরিক্ত হয়ে না যায়।
আরও পড়ুন: যেসব কারণে রোজা রাখা ডায়েট করা থেকে বেশি উপকারী
৯ মাস আগে
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা: সারাদিন রোযা রেখে ইফতারে কেন খেজুর খাবেন?
রোযার মাসে সারা দিন রোযা রাখার পর সন্ধ্যাবেলায় ইফতারে খেজুর খাবার উপকারিতার দরুণ রোযাদারগণ তাদের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখেন। বহু বছর আগেই থেকেই সুপরিচিত ও সুমিষ্ট এই ফলটির চাষাবাদ হয়ে আসছে। মরুপ্রধান অঞ্চলের এই ফল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্য একটি সহজলভ্য খাবার। ইফতারের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রীতিমত নিয়ম করে রাখা হয় খেজুর। অনেক রোযাদাররা খেজুর খেয়েই তাদের রোযা ভেঙে থাকেন। চলুন, পবিত্র এই রমজান মাসে এই ছোট্ট ফলটির পুষ্টিগুণাগুণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খেজুরের উপকারিতাগুলো জেনে নেয়া যাক।
খেজুরের পুষ্টিগুণ
ফ্যাটহীন উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খেজুরের বেশির ভাগ ক্যালরি আসে কার্বোহাইড্রেট থেকে। খুবই অল্প পরিমাণ আসে প্রোটিন থেকে। ৮ গ্রামের একটি খেজুর প্রায় ২৩ ক্যালোরি সরবরাহ করে। ২৪ গ্রামের বড় মেডজুল খেজুরগুলোতে থাকে ৬৬.৫ ক্যালোরি। এছাড়াও খেজুর যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার সহ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান সম্পন্ন।
ইউএসডিএ (ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার) অনুসারে, খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানের মধ্যে সোডিয়ামের পরিমাণ ০.২ মিলি গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৬ গ্রাম, ফাইবার ০.৬ গ্রাম, শর্করা ৫ গ্রাম, প্রোটিন ০.২ গ্রাম, পটাসিয়াম ৫৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৩.৪ মিলিগ্রাম, এবং আয়রন ০.১ মিলিগ্রাম।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
একটি খেজুরে ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যার বেশিরভাগই আসে চিনি থেকে। খেজুরের মিষ্টি স্বাদের পেছনে দায়ী এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ, যা গ্লুকোজের চেয়েও দ্বিগুণ মিষ্টি। ফল পাকার সাথে সাথে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ফাইবার হ্রাস পায়।
খেজুরের গ্লাইসেমিক সূচক ৪৩ থেকে ৫৫ এর মধ্যে। আর এই পরিসরটি নির্ভর করে খেজুরে পরিপক্কতার ভিন্নতা এবং স্তরের উপর। সাধারণত মিষ্টি ফলগুলো উচ্চ গ্লাইসেমিকের হয়। কিন্তু খেজুরের বেলায় তা ভিন্ন। এগুলো আশ্চর্যজনকভাবে বেশ কম গ্লাইসেমিক ফল।
খেজুর পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের বেশ ভালো একটি উৎস। খেজুর ফোলেট এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড সহ ছয়টি প্রয়োজনীয় ভিটামিন-বি সরবরাহ করে। খেজুরে রয়েছে উচ্চমাত্রার পলিফেনল, যা এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি সেলুলার ক্ষতি থেকে দেহকে রক্ষা করে।
পড়ুন: দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যামে সময় কাজে লাগানোর উপায়
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খেজুরের উপকারিতা
হজমে ভারসাম্য আনে
ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে হজমে উপকার করতে পারে। এটি পরিপাক ক্রিয়া ঝামেলামুক্ত রাখার মাধ্যমে নিয়মিত মলত্যাগে ভারসাম্য বজায় রাখে।
উপরন্তু, খেজুরের ফাইবার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য উপকারী হতে পারে। ফাইবার হজমের গতিকে ধীর করে দেয় এবং খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি হওয়া রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
খেজুরে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো মূলত দেহের কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। এই র্যাডিক্যাল গুলো হচ্ছে এক ধরনের অস্থির অণু, যা শরীরে ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি এবং রোগের কারণ হতে পারে।
পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
খেজুরে বিদ্যমান সবচেয়ে শক্তিশালী তিনটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হচ্ছে-
- ফ্ল্যাভোনয়েড, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- ক্যারোটিনয়েডস, যা হৃদরোগ এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা এরকম চোখের ব্যাধিগুলোর ঝুঁকি কমাতে পারে।
- ফেনোলিক অ্যাসিড, যা প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
হাড়কে শক্তিশালী করে
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে অস্টিওপরোসিসের মত হাড়ের ভয়ানক রোগ হতে পারে। খেজুরে সেই ম্যাগনেসিয়ামের যোগান দাতা। সাপ্লিমেন্ট-এর মাধ্যমে ম্যাগনেসিয়াম নেয়া অপেক্ষা খেজুর খাওয়া উত্তম। এতে বিষাক্ততার ঝুঁকি কমে। অধিকন্তু, খেজুর থেকে পাওয়া আয়রন অস্থিমজ্জার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
পড়ুন: জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে কি করবেন?
গর্ভাবস্থায় সুবিধা
শুকনো খেজুর গর্ভাবস্থার পরবর্তী পর্যায়ে মহিলাদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা দেয়। খেজুরের উচ্চ ফাইবার বৈশিষ্ট্য কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় সাহায্য করতে পারে।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত শুকনো খেজুর খাওয়া গর্ভধারণে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে এনে স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণের দিকে ধাবিত করতে সহায়তা করে।
দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিয়মিত খেজুর খাওয়া দাঁতের এনামেলের সুরক্ষা ও উন্নতির জন্য বেশ উপকারী। খেজুর দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কারণ এতে আছে ফ্লোরাইড।
পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
খেজুর খাওয়ার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়
খেজুরের যাবতীয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি লাভের জন্য প্রতিদিন ১০০ গ্রাম তথা ৪ থেকে ৬টি খেজুরই যথেষ্ট। যদিও খাওয়ার পরিমাণ ক্যালোরির চাহিদা এবং অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
খেজুর নূন্যতম পরিমাণ প্রোটিন সরবরাহ করে। তাই দৈনন্দিন প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে অন্যান্য প্রোটিন উৎসগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যেমন চর্বিহীন মাংস, মাছ, বাদাম, এবং বীজ জাতীয় খাবার।
ইফতারিতে ২ থেকে ৩টি খেজুর খাওয়া সারাদিনের ক্লান্তিকে নিমেষেই দূর করে দিবে। এছাড়াও দেহের যাবতীয় প্রক্রিয়াসমূহকে দ্রুত কর্মক্ষম করে তুলতেও সাহায্য করতে পারে। ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের একটি সমন্বিত খাদ্য তৈরির জন্য কিছু চিনাবাদাম ও মাখনের সাথে খেজুর মিশিয়ে ইফতারির আইটেমগুলোতে রাখা যেতে পারে।
পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
তবে খেজুর খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
দুপুর বা রাতের ভরপেট খাবার পর খেজুর খাওয়া ঠিক নয়। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম হতে বেশি সময় নেয়। ফলস্বরূপ, ভরপেট খাবারের পরে প্রচুর পরিমাণে খেজুর গ্রহণ সারা শরীরে অস্বস্তিকর বোধ তৈরি করতে পারে।
খেজুরে অ্যালার্জি থাকা যদিও বিরল, কিন্তু এ যদি অ্যালার্জি থেকেই থাকে তবে খেজুর এড়িয়ে চলতে হবে। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নেয়া উচিত।
ইতোমধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে খেজুর খাওয়া পরিহার করা উচিত। খেজুরে থাকা সরবিটল নামের চিনির অ্যালকোহলটি কিছু কিছু লোকের ক্ষেত্রে মলত্যাগের অবস্থার আরো অবনতি ঘটাতে পারে। তাই অন্ত্রের গতিবিধি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খেজুর এড়ানো ভাল।
পড়ুন: ঢাকার কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের খেজুর
বাংলাদেশের বাজারে আজওয়া, মরিয়ম, আদম, আম্বার, ছড়া, শুককারি, ছক্কা, সুগাই, গাওয়া, মেডজুল, কালমি, তিনপল, মাবরুম, জিহাদি, সায়ের, ফরিদা, বাটি, মাসরুক, ম্যাকজুয়েল, মাবরুল, কিমি, খালাস দাবাস, ও কাউন দাবাস সহ মোট ত্রিশ জাতের খেজুর পাওয়া যায়।
দেশে ফি বছর খেজুরের চাহিদা প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন, যেখানে শুধু রমজান মাসেই চাহিদা থাকে প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।
দেশের পায়কারি ও খুচরা বিক্রেতাদের মতে, কম দামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত খেজুর হচ্ছে ইরাক থেকে আগত জাহেদি খেজুর। এছাড়া বেশ ভালো বিক্রি আছে ইরান ও জর্ডানের মরিয়ম, সৌদি আরবের আজওয়া, মাবরুম, আম্বার, সাফাওয়ি বা কালমি, মাশরুক, আমিরাতের নাগাল, লুলু বা বরই, ও দাব্বাস খেজুরের।
পড়ুন: রন্ধন পাঠশালা: ঢাকায় কোথায় রান্না শেখার কোর্স করতে পারবেন?
জাহেদির পাইকারি দাম পড়ে কেজি প্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা আর খুচরা দাম ১০০ টাকা। আম্বারের পাইকারি দাম ৪০০ টাকা, ৩৫০ টাকা দাম আলজেরিয়ার ডাল খেজুরের, বাদামি রংয়ের কালমি ও ফরিদা ২৫০ টাকা কেজি আর মেডজুলের দাম কেজি প্রতি ৮০০ টাকা। এছাড়া ১০ থেকে ১৫ ধরনের আজওয়ার মধ্যে মানভেদে প্রতি ৫ কেজির দাম পড়ে ১২০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা।
মান অনুযায়ী চার থেকে পাঁচ ধরনের মাশরুক খেজুরের পাইকারি দর ২০০ থেকে ২৭৫ টাকা। মরিয়ম খেজুরের পাইকারি দাম ৫০০ টাকা আর সেটাই খুচরা বাজারে হয়ে যায় কেজিতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। মিশর থেকে আগত বড় আকারের ও কোমল মেডজুল খেজুর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। খুচরা বাজারে এগুলোর দাম বেড়ে হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। বর্তমানে এই খেজুরগুলোই দামের দিক থেকে সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে।
শেষাংশ
ইফতারে খেজুর খাবার উপকারিতাগুলো রোযার মাসে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য সহায়ক। দিনের একটি বিরাট অংশ না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে ক্লান্তি ভাব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এ সময় তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো মুখরোচক হলেও দুর্বল শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাছাড়া রোযার সময় খাবার গ্রহণের ধারা পরিবর্তিত হওয়ার কারণে শরীরের স্বাভাবিক শক্তি যোগানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইফতারের সুষম খাদ্য তালিকায় একটি সেরা সংযোজন হতে পারে এই আরব্য ফলটি।
পড়ুন: যেভাবে পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন
২ বছর আগে
পর্যাপ্ত সরবরাহ সত্ত্বেও রমজানে বেড়েছে ফলের দাম
বাজারে ব্যাপক সরবরাহ থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবারের রমজানের শুরুতে দেশি ও আমদানি করা ফলমূলের দাম বেড়েছে।
ফল আমদানিকারকরা বেশি জাহাজ ভাড়া এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বেশি পরিবহন ব্যয়কে ফলমূলের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছেন।
রবিবার রমজানের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ প্রতিবেদক দেখেছেন, আমদানি করা আপেল মানের ভিত্তিতে প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা, নাশপাতি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, ডালিম ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মাল্টা ১৬০ থেকে ২১০ টাকা, কমলা ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, আঙ্গুর ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রমজান জুড়ে মাঠে থাকবে বাজার মনিটরিং টিম
খেজুরের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে এবং আমদানি করা এই ফল গুণমানের ভিত্তিতে প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ১২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুরান ঢাকার খুচরা বাজারে আজোয়া খেজুর প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, দাব্বাস খেজুর ২৮০ টাকা, ক্কালমি খেজুর ৩০০ টাকা, ফরিদা খেজুর ২৮০ টাকা এবং বরই খেজুর ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর খুচরা বাজারে তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া ও লিবিয়ার উন্নত মানের খেজুর ও মারিয়াম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ১২৫০ টাকায়।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস
এছাড়া দেশি ফলের মধ্যে পেয়ারা (থাই) প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কলা ডজন প্রতি ৬০ থেকে ১২০ টাকা, তরমুজ ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, আনারস প্রতি পিস ৩০ থেকে ৫০ টাকা, আম (সবুজ) কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ এবং ড্রাগন ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফআইএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, এই রমজানে বিদেশি ফলের সরবরাহ স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, বেশি জাহাজ ভাড়া ও বাংলাদেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়েছে।
একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচ বেড়েছে যা ফলের দামকে প্রভাবিত করেছে বলেও জানান তিনি।
২ বছর আগে
সৌদি খেজুর চাষে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুবেল
ফেসবুকে দেখে বাণিজ্যিকভাবে বরেন্দ্রের মাটিতে মরুর দেশের খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভেরেন্ডি গ্রামের বেকার যুবক ওবাইদুল ইসলাম রুবেল। তার এই সাফল্য এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এই ফল চাষে।
আরও পড়ুন: যশোরে লক্ষ্যমাত্রার ৩ গুণ বেশি মাছ উৎপাদন
এইচএসসি পাস করা বেকার যুবক রুবেল ফেসবুকে দেশের কয়েকটি স্থানে খেজুর চাষের খবর দেখে খেজুর আবাদে উদ্বুদ্ধ হন। বাবার সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেন খেজুর চাষের। সৌদি প্রবাসী স্বজনদের সাথে যোগায়োগ করে সেখান থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ পাগলামি বলে ঠাট্টা করেছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি রুবেল। নিয়মিত বাগানের পরিচর্যা করেছেন।
বর্তমানে তার ৩ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠা খেজুর বাগানে গাছের সংখ্যা দেড় হাজার। বাগানে মরিয়ম, সুককারি, বারহি, আম্বার, হাইয়ানিসহ আরও কয়েক প্রজাতির খেজুর গাছ রয়েছে।
৩ বছর আগে
মাগুরায় বিদেশি ফল চাষে সফলতা
ছোট ছোট গাছের কাধিতে ঝুলছে বিলাতি বা সৌদি খেজুর, গাছ নুয়ে পড়ছে মাল্টার ভারে, সবুজের মাঝে রঙিন ফুলের মতো শোভা পাচ্ছে ড্রাগন ফল, মাল্টা। আশেপাশের গ্রামসহ দুর-দুরান্ত থেকে মাগুরার গাংনী গ্রামের এই বৃহৎ মিশ্র ফল বাগানটি প্রতিদিনই দেখতে আসছে প্রকৃতি ও ফলপ্রেমীরা।
১০ একর জায়গা জুড়ে খেজুর, মাল্টা ছাড়াও ২৫০০ ড্রাগন ফলের পাশাপাশি অনেক কুল ও পেয়ারা গাছও রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লার টাউন হলে প্লাস্টিক বোতলে ঝুলন্ত বাগান
কয়েক বছর অগে শখের বসে নিজ বাড়ির সাথে লাগোয়া জমিতে ছোট্ট এই বাগানটি করেন বৃক্ষপ্রেমী ইজাজুল হক রিজু। বর্তমানে মিশ্র এই ফলবাগান থেকে প্রতি বছর আয় করছেন লাখ লাখ টাকা ।
শুধুমাত্র গত বছরেই ড্রাগন ফল বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
এ বছরেও ৩৫ লাখ টাকা ড্রাগন ফল বিক্রয়ের আশা করছেন বলে জানান ফল বাগানটির প্রধান দায়িত্বে থাকা রিজুর ভাই।
রিজুর ভাইয়ের তত্বাবধায়নে মিশ্র ফল বাগানটি সর্বদা পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন আরও ১০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী , তবে কাজের চাপ বেড়ে গেলে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুনঃ এবার খুলনায় ‘বই বাগানের’ যাত্রা শুরু
শুক্রবার মাগুরা জেলার সর্ববৃহৎ মিশ্র ফল বাগানটি পরিদর্শনে আসেন মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মকর্তা ও শৌখিন লোক প্রায় প্রতিদিন দেখতে আসেন এই বাগানটি।
৩ বছর আগে
সুস্থ থাকতে ডায়েটে রাখুন পুষ্টিকর খেজুর
ঢাকা, ২৪ আগস্ট (ইউএনবি)- খেজুর খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। ভিটামিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে।
৫ বছর আগে