ডুয়েলগেজ রেলপথ
উদ্বোধনের এক বছরেও চালু হয়নি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ
উদ্বোধনের এক বছর পার হলেও ট্রেন চলাচল চালু হয়নি আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ।
২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
রেলপথে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। কিন্তু ট্রেন চলাচল শুরু না হওয়ায় অলস পড়ে আছে।
এছাড়া দেশে বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে শিগগিরই শুরু হচ্ছে না আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যও।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। আন্তঃদেশীয় এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ অংশের নির্মাণ কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছরের এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ৬ বছরেরও বেশি।
রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকায় কয়েক দফার ট্রায়াল রান শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে সেই সময় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন, প্ল্যাটফরম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ ছিল। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে অর্ধশতাধিক পণ্য আমদানি এবং সব ধরনের পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পুরোপুরি শেষ হয়েছে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ। চলতি মাসেই প্রকল্পটি সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি জানান, বিভিন্ন সংকটে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছে। তবে কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ফলে এখন প্রকল্পটি সরকারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
তবে, উদ্বোধনের এক বছরেরও বেশি সময় পার হলেও ট্রেন চলছে না আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে। ফলে বাণিজ্যও শুরু করা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ ট্রেন চলবে- সে সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য নেই প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রূহি বলেন, কখন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলবে সেটি সরকারি সিদ্ধান্ত। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুরুর বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি হস্তান্তর করলে তখন বাণিজ্য শুরুর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত আসবে।
আরও পড়ুন: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল
৪ সপ্তাহ আগে
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে।
এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত একটি খালি কনটেইনার ট্রেন চালানো হয়েছে।
বহুল কাঙ্ক্ষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের নির্মাণকাজ আগেই শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রেলপথ নির্মাণকারী ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা ও আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া।
আরও পড়ুন: পরীক্ষামূলক চলাচল: ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌঁছেছে ট্রেন
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে দেড় বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে পাঁচ বছরেরও বেশি।
রেললাইনের কাজ শেষ হলেও ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ভবন এবং প্ল্যাটফরমের ফিনিশিং কাজ এখনও চলছে।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। ট্রেনটি ৪০কিলোমিটার গতিতে চলেছে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে বৃহস্পতিবার
আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক যাত্রা
১ বছর আগে