বাঁশের সাঁকো
নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতার পর থেকে নেই সেতু, ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন ভোগডাবুড়ী। এখানে বুড়ি তিস্তা নদীর বুদুর ঘাটের অবস্থান। এই ঘাটে স্থায়ী কোনো সেতু নেই। ফলে ৬ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫২ বছর ধরে তারা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশুরা সাঁকো দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় ঘটে দুর্ঘটনা। এজন্য ভয়ে থাকেন অভিভাবকরা।
জানা গেছে, ভোগডাবুরী ও বড়শশী ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়ি তিস্তা নদী। নদীর এপাড়ে শব্দিগঞ্জ, গোসাইগঞ্জ ও আনন্দবাজার এবং ওপাড়ে সর্দ্দারপাড়, জালিয়াপাড়া ও চিলাপাড়া। গ্রামের মানুষদের অন্য কোনো উপায় না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরেও হয়নি সেতু, ভেলায় চড়েই স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
নদীর এপাড়ে রয়েছে শব্দিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোসাইগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং কারেঙ্গাতলী উচ্চ বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করে বুদুরঘাটের বাঁশের সাঁকো দিয়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
ইউনিয়ন থেকে সংসদ নির্বাচনের সময় দেওয়া হয় আশ্বাস। বুদুরঘাটে সেতু নির্মাণ করা হবে- সেই বুকভরা আশা নিয়ে দুই পাড়ের মানুষ আজও দিন গুএনছেন।
শব্দিগঞ্জ গ্রামের হবিবর, অমিনুল ও তাইজদ্দনি বলেন, ‘নদীর ওপার থেকে ছেলে-মেয়েরা নড়বড়ে সেতু দিয়ে স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করে। প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।’
স্থানীয় সাংবাদিক কাজল বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকাবাসী দাবি করে আসছে একটি সেতু নির্মাণের। ৫২ বছর পার হলেও কেউ শোনেননি তাদের কথা।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ
বড়শশী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মঞ্জু ইসলাম বলেন, ‘নদীর দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি একটি সেতুর। ট্রেন-বাস ধরতে সেতু না থাকায় এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার মন্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ওই আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার জানান, ‘উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে তালিকা দেওয়া হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজটি করা হবে। আর নতুন চেয়ারম্যান এই বিষয়ে তালিকা করে পাঠালে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: দীর্ঘ ৪৬ দিন পর ভেসে উঠল রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
১০ মাস আগে
লালমনিরহাটে সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ৬৯ লাখ টাকার সেতু আছে, কিন্তু নেই সংযোগ সড়ক। সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বেয়ে।
সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলের ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫ গ্রামের হাজারও মানুষ। সেতুর নির্মাণ মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি সড়ক।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার উপর নির্মিত ওই সেতুটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের বছর পার হয়ে গেলেও দু’পাশে মাটি ভরাটসহ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নির্মাণাধীন সেতুর মাটি ধসে ৩ জনের মৃত্যু, আহত ৪
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা ছড়ার (বিল) উপর ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ একটি ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়।
সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শেষ হয়। ওই মাসেই সেতুটি হস্তান্তর করার চুক্তি ছিল ঠিকাদারের সঙ্গে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি এখনো হস্তান্তর করেননি ঠিকাদার লিটন ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদারকে ৮০ শতাংশ বিল দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেল কালুরঘাট সেতু
১ বছর আগে
বাঁশের সাঁকোই ৩০ হাজার মানুষের ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়োবড়ো বাঁশের সাঁকোয় ছয়টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা এভাবে নদী পারাপার করে আসছে। জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছে গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে পশ্চিম কান্তাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাউকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গোরুকমন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ফয়জুল উলুম মাদরাসা, গোরুকমন্ডপ কমিউনিটি ক্লিনিক। পূর্ব পাশে রয়েছে পশ্চিম ফুলমতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালার হাট আর্দশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পশ্চিম ফুলমতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক। নদীর দুপাশে গ্রামগুলোর যোগাযোগের সংযোগস্থল হওয়ায় এ সাঁকো দিয়ে হাজারও মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এতে হরহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে।
রোগী থাকলে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষদেরকে ভোটের সময় জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। এমন অভিযোগ দু’পারে মানুষের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কান্তাপাড়া, ঝাউকুটি চরগোরুক, পশ্চিম ফুলমতি, জামাকুটি ,কলাবাগা গ্রামের অধিবাসীরা। মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভাবনা থাকলেও প্রধান বাধা এ বারো মাসিয়া ইন্দুর ঘাটের বাশেঁ সাঁকো। নিজের চাহিদায়মতে চাঁদা সংগ্রহ করে বাঁশের সাকোঁটি তৈরি করা হয়েছে।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ আলী বলে, ‘এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। একবার পা পিচলে পড়ে আহত হয়েছি। এখানে একটা ব্রিজ হলে ভালোই হতো।’
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মীর হোসেন বলেন, ‘একটি সেতুর অভাবে ৪০ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন, অসুস্থদের অবস্থা বলার মতো নয়। বেশি সমস্যা হয় প্রসূতিদের নিয়ে। জন প্রতিনিধিরা কথা দিয়ে ভোট নেন। ভোট পার হলে তারা আর খোঁজ রাখেন না।’
২ বছর আগে
৫০০ পরিবারের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো!
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার হোসেনপুর তালুকদার বাড়ির সংলগ্ন কুচয়া খালের ওপর প্রায় ৫০০ পরিবারের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি। বর্তমানে সেটিও ভেঙে যাওয়ায় চলাচলকারী গ্রামবাসীর জীবন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী বহুদিন ধরে একটি সেতু নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করে ক্লান্ত। আর এভাবেই কেটে গেল তিন যুগ, আজও সেতু নির্মাণের কোন ব্যবস্থা হয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় দীর্ঘ তিন যুগ ধরে এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই খাল পারাপারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সাঁকোটির পশ্চিম পাশে হাফেজিয়া মাদরাসা, এতিমখানা ও মসজিদ থাকায় শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হতে হয়। এছাড়া অসুস্থ রোগীকে সাঁকো পার করতে দুর্ভোগের সীমা থাকেন না।
আরও পড়ুন: দেবে গেছে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক, জনদুর্ভোগ চরমে
৭ নং দক্ষিণ কচুয়া ইউনিয়নের (ইউপি) সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘দীর্ঘ বছর যাবৎ এলাকাবাসীর চাঁদায় স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করে লোকজন চলাচল করছেন। বর্তমানে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কারণে চলাচল প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। অনেক সময় জরুরি মুহূর্তে পানিতে সাঁতার কেটে পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা।’
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল বলে এতো দিন শিক্ষার্থীদের খুব একটা সুবিধা হয়নি। কিন্তু এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তাই শিক্ষার্থীরা নিরাপদে চলাচল করার জন্য এলাকাবাসীকে নিয়ে পুনরায় সাঁকোটি নির্মাণের জন্য কাজ করছি।’
ইউপি সদস্য বলেন, ‘আমি কয়েকবার সেতুটি নির্মাণের জন্য কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিডি) অফিসকে অবগত করছি। উনারা সেতু নির্মাণের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
আরও পড়ুন: ওয়াই সেতু নির্মাণে রাঙ্গামাটির বিচ্ছিন্ন দুই দ্বীপবাসীর স্বপ্নপূরণ
গ্রামবাসীর দাবি, সরকারি উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হলে তিন হাজারের বেশি মানুষ উপকৃত হবে। তাই সরকারিভাবে জনস্বার্থে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
হোসেনপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ শফিকুল ইসলাম তালুকদার ও সানা উল্লাহ তালুকদার বলেন, আমাদের ভোগান্তি কেউই দেখতে আসেন না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের প্রশ্ন, এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে?
আরও পড়ুন: কোটিপতি ছেলের বাসায় আশ্রয় হলো না মায়ের
একই গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, এই বাঁশের সাঁকোটি গ্রামের লোকজন কষ্ট করে নির্মাণ করে থাকেন। কিন্তু বর্ষার মৌসুম আসলে তাদের একমাত্র চলাচলের সাঁকোটি পানিতে ভেসে যায়। এরপর চলাচলের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের।
কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, জনস্বার্থে এখানে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।
৩ বছর আগে
যশোরে কপোতাক্ষ নদের ওপর তৈরি বাঁশের সাঁকো এখন মরণফাঁদ!
যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের ওপর ১৯ বছর আগের তৈরি একটি বাঁশের সাঁকো এলাকাবাসীর কাছে এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
৪ বছর আগে
কমলগঞ্জে ২৫ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের ভরসা বাঁশের সাঁকো
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকা ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের জন্য ধলাই নদীতে একটি সেতুর অভাবে প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হচ্ছে বাঁশের সাঁকো।
৪ বছর আগে