জাতীয় সার্বভৌমত্ব
জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বেইজিং ঢাকাকে সমর্থন করে: চীনা রাষ্ট্রদূত
চীন জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং বাহ্যিক হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে, যাতে দেশটি অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে এবং উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন অর্জন করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এক-চীন নীতি অনুসরণ করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে। উভয় পক্ষ কৌশলগত সহযোগিতা আরও গভীর করতে এবং এর মাধ্যমে নতুন যুগে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও উচ্চ স্তরে উন্নীত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও চীন যৌথ উন্নয়নের ঘনিষ্ঠ অংশীদার।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক ঋণ, জিডিআই ও সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন তহবিলের উপযুক্ত ব্যবহার করবে বাংলাদেশ: প্রত্যাশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
সোমবার গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ এর দশম বার্ষিকী।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিআরআই-এর আওতায় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার ফল পাওয়ার সময়ে পৌঁছেছে।’
দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিআরআইতে যোগ দেয়।
এছাড়া গত সাত বছরে বিআরআই সোনালী বঙ্গোপসাগরে শিকড় গেড়েছে এবং প্রস্ফুটিত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু ও এর রেল সংযোগ, দাশেরকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলসহ আরও অনেক মেগা প্রকল্প একের পর এক সম্পন্ন হয়েছে, যা বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিআরআই'র ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘সামনের দিকে তাকিয়ে, উভয় দেশের উচিৎ উন্নয়নের নতুন ঐতিহাসিক সুযোগগুলো গ্রহণ করা, উন্নয়ন কৌশলগুলো আরও সংহত করা, উচ্চ মানের উন্নয়নের লক্ষ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা পরিচালনা করা এবং একে অপরের পরিপূরক হিসেবে আমাদের নিজ নিজ অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো কাজে লাগানো।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে বাংলাদেশিদের: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, আমরা অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি, নতুন জ্বালানি, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর করতে পারি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা অবশ্যই চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবনের চীনা স্বপ্ন এবং বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে পারব।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক ঘন ঘন যোগাযোগের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে উদ্ভূত হয়। চীন ও বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে জনগণ থেকে জনগণে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান আরও জোরদার করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য।
তিনি বলেন, ‘চীন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং কর্মী বিনিময়ের বিশাল চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি সুবিধাজনক ব্যবস্থা চালু করেছে।’
তিনি বলেন, আপাতত দুই দেশের মধ্যে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ৫০টি সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে, যার ধারণক্ষমতা ১০ হাজার।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। দূতাবাস দু'দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করতে সর্বস্তরের বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বাংলাদেশে চীনা উদ্যোক্তাদের সক্রিয়ভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের স্থানীয় সমাজের সঙ্গে আরও একীভূত হওয়ার আহ্বান জানান, যাতে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রসারে আরও বেশি অবদান রাখা যায়।
১৯তম এশিয়ান গেমস চীনের হাংঝুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, বাংলাদেশ ক্রীড়াবিদদের একটি ‘উদীয়মান’ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই তারা প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করুক এবং বাংলাদেশের নাম সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরুক।’
আরও পড়ুন: যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করছে, তারা কখনোই রাখাইন যায়নি: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
১ বছর আগে