বৈশ্বিক র্যাঙ্কিং
ডি গ্রেড নিয়ে বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অবস্থানের অবনতি
নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক সাময়িকী গ্লোবাল ফাইন্যান্সের রিপোর্ট কার্ড অনুসারে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানদের কর্মক্ষমতার বৈশ্বিক মূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ডি গ্রেড পেয়েছেন। এমনকি তার অবস্থান তার শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষেরও পিছনে।
রবিবার ম্যাগাজিনের সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড-২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও টাকার অবমূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল পারফরম্যান্সকে দায়ী করা হয়েছে।
এদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান শক্তিকান্ত দাস, ভিয়েতনামের নগুয়েন থি হং এবং সুইজারল্যান্ডের থমাস জর্ডান এপ্লাস (এ+) গ্রেড নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন। ভারতীয় গভর্নরের গ্রেড ২০২২ সালে এ থেকে ২০২৩ সালে এ+হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের গভর্নর নন্দলাল ওয়েরাসিনে এমাইনাস (এ-) পেয়েছেন, আর পাকিস্তানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের গভর্নর জামিল আহমেদ সি-গ্রেড পেয়েছেন।
১৯৯৪ সাল থেকে গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গভর্নরদের মূল্যায়ন করে আসছে।
'সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড' নিয়মিতভাবে সাময়িকীর বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে প্রকাশিত হয়। ১০১টি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের জন্য এই সর্বশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডলারের বিনিময় হার না বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও আবারও বেড়েছে
গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন জানিয়েছে, কোভিড-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল।
কিন্তু ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে টাকার ৯ দশমিক ৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়। দেশের বাজারে ডলার–সংকটে হিমশিম খান আমদানিকারকেরা। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য অনেকটা বেড়ে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণের কারণে মূল্যস্ফীতির মতো বাহ্যিক ধাক্কার মুখে নাজুক অবস্থানে পড়ে যায় বাংলাদেশ।’
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সিনিয়র অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেন, এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কর্মক্ষমতার চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থার প্রতিফলন বেশি।
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মনসুর বলেন, ‘এর জন্য তাকে (গভর্নর) ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করা উচিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা সরকারের আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন করেন।’
প্রাক্তন আইএমএফ অর্থনীতিবিদ মনসুর বলেছেন, ‘দেশের নীতিগুলো সহায়ক না হলে কোনও কেন্দ্রীয় গভর্নর একা ভাল কাজ করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, প্রতিবেদনে দেশের দুর্বল রাজস্ব আদায়, মূল্যস্ফীতি এবং টাকার মানের অবমূল্যায়নের প্রতিফলন ঘটেছে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য ডলার বুকিং নীতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বেশি দামে ডলার বিক্রি: ১০ ব্যাংকের কোষাগার প্রধানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ কী?
১ বছর আগে