ট্রুডো
ফ্রিল্যান্ডকে হারিয়ে ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মার্ক কার্নি
কানাডার ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নি। স্থানীয় সময় রবিবার (১০ মার্চ) ভোটের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে তিনি দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন। এক অস্থির সময়ে কানাডার দায়িত্ব নেবেন কার্নি। এমন এক সময় তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হলেন, যখন দেশটি দীর্ঘদিনের মিত্র প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে আছে।
নেতৃত্ব প্রতিযোগিতায় এক লাখ ৫২ হাজার দলীয় সদস্য ভোট দিয়েছেন। এতে ৫৯ বছর বয়সী কার্নি পেয়েছেন ৮৬ শতাংশ ভোট। ফলে সহজেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে তিনি পরাজিত করতে পেরেছেন।
এর আগে চলতি বছরের গত ৬ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয়প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো। দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দল নতুন নেতা নির্বাচন করার পর দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
কানাডায় খাদ্য ও বাসস্থানের মূল্যবৃদ্ধি, অভিবাসন বেড়ে যাওয়ায় ট্রুডোর ওপর পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা। নিজ দলের মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। নানামুখী চাপের কারণে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও জানুয়ারিতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার কথা জানান ট্রাম্প। এ ছাড়াও কানাডার পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি, যা গত সপ্তাহে কার্যকর হয়েছে।
কানাডার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ট্রাম্প মারাত্বক আঘাত হেনেছে বলে মনে করেন কানাডীয়রা। এতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন উত্তর আমেরিকার দেশটির নাগরিকরা। তারা আমেরিকাতে ভ্রমন, এমনকি প্রতিবেশী দেশটির পণ্য কেনাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বহুদিন ধরে চলা কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কানাডাবাসী বর্তমানে এমন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চান, যিনি আমেরিকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পরিবর্তে ট্রাম্পকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
তবে এসবের মধ্যেও জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। রবিবার লেবার পার্টি কাকে ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিবেন; তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে মার্ক কার্নির নাম।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মোকাবিলায় কানাডা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিচ্ছে?
কে এই মার্ক কার্নি?
কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি ইংল্যন্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। দায়িত্ব পালনকালে তিনি সফলতার সঙ্গে অর্থনৈতিক নানা সংকট মোকাবিলা করেছেন।
কানাডাতে ব্যাংক সুদের হার সর্বনিম্ন ১ শতাংশে নামিয়ে এনে ঋণ দেওয়া অব্যাহত রেখে বাজারে অর্থের প্রবাহ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন মার্ক কার্নি, এ কারণে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন।
তিনি যে কেবল ঋণ সম্পর্কে একটি ভালো নীতি তৈরি করেছিলেন, তাই নয়; জনগণের কাছে এমনভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন যা সবার বোধগম্য হয়। তিনিই প্রথম কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান যিনি সুদের হারকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এত কম রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন। তার এই পদক্ষেপ পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ অনুসরণ করেছে বলে জানা যায়।
জানুয়ারিতে কার্নিকে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকেই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে একের পর এক সমর্থন পেয়ে চলেছেন তিনি।
নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় কার্নির একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় তিনটি বিষয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নেলসন ওয়াইজম্যান। তার ভাষ্যে, প্রথমত, ক্রিষ্টিয়া ফ্রিল্যান্ড (অন্য প্রার্থী) ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
ট্রুডোর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ায় ফ্রিল্যান্ডও পিছিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করেন তিনি। দ্বিতীয়ত, সংসদে থাকা লিবারেল সদস্যদের সমর্থন আদায়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তৃতীয়ত, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি অন্যতম একটি বিষয়, কার্নির পেশাগত অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে ভুমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা দেন ওয়াইজম্যানে।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড্যানিয়েল বিল্যান্ড মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে কানাডার অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন ও বক্তব্য দিচ্ছেন, এরকম সংবেদনশীল একটি মুহূর্তে কার্নির শান্ত স্বভাব ও অসাধারণ পেশাদার জীবনবৃত্তান্ত অনেক কানাডিয়ানকে আশ্বস্ত করেছে।’
আরও পড়ুন: কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
কার্নির এই শান্ত স্বভাব কানাডার কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রের সম্পূর্ণ বিপরীত বলে মনে করেন তিনি। বিল্যান্ডের মতে, পলিয়েব্র একদম পুরোদস্তুর একজন রাজনীতিবিদ। তিনিও ট্রাম্পের মতো জনপ্রিয়তাবাদী বক্তব্য দেন।
ট্রাম্পের শুল্কারোপের ফলে কানাডার অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব রুখে দিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধান করে দেশের উন্নতিকে ত্বরান্বিত করবে এমন এক সরকারপ্রধান চান কানাডার নাগরিকরা। কানাডার নির্বাচন উত্তর আমেরিকার ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হয়ে উঠছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৬ দিন আগে
কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
প্রতিবেশী দেশ কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থেই’ যুক্তরাষ্ট্রের একান্নতম অঙ্গরাজ্য হিসেবে একীভূত করতে চাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এমন কথা বলেছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি জানিয়েছে, শ্রম ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ট্রুডো এসব কথা বলেন। তখন ভুলবশত মাইক্রোফোন চালু ছিল, যে কারণে ট্রুডোর এই বক্তব্য রেকর্ড হয়ে যায়।
ব্যবসায়ী নেতাদের ট্রুডো বলেন, কানাডার সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদের লোভেই ট্রাম্প এমন কথা বলছেন। আমাদের দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করেই এটা সহজে করা সম্ভব বলে তার মনে হয়েছে। তারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে সচেতন—আমাদের কী আছে এবং সেসব থেকে তারা কীভাবে সুবিধা নিতে পারেন। তার (ট্রাম্প) সঙ্গে আমার আলাপচারিতায়... (এরপরেই মাইক্রোফোন বন্ধ হয়ে যায়)।
এ নিয়ে ট্রুডোর অফিসের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে আলবার্টা ফেডারেশন অব লেবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে একদিনের একটি সম্মেলনের উদ্বোধনীতে দেওয়া বক্তব্যে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডীয় পণ্যে ট্রাম্পের চড়া শুল্কারোপের হুমকি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে; তা নিয়ে কানাডাকে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।’
‘শুল্কারোপ থেকে বাঁচতে কানাডা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাধাগুলো দূর করে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে হবে কানাডাকে,’ বলেন তিনি।
ট্রুডো বলেন, ‘আর এটিই সেই মুহূর্ত। দেশের ইতিহাসের এই সময়টি ব্যাপক গুরুত্ব বহন করছে।’
এরআগে সোমবার কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ মাদক ফেনটানিল পাচার ও অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধে সহযোগিতার শর্তে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদনে জোর দিতে ও কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব বাড়াতে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
৩৬ দিন আগে
ক্ষমতা ছাড়তে পারেন ট্রুডো
ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হতে পারেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দিনকে দিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে তার নিজের দল লিবারেল পার্টি বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে। তাদের অভিযোগ, ৯ বছর ক্ষমতায় থাকা এ প্রধানমন্ত্রী এখন আর দেশের অভ্যন্তরীণ সংকট সামাল দিতে পারছেন না।
বিগত কয়েক বছর ধরে বড় রকমের শ্রম সংকট চলছে কানাডায়। এর বাইরে কানাডার পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ করারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার অর্থনীতির চ্যালেঞ্জিংয়ের এ সময়ে গত বছর ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এরপরেই ট্রুডো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।
ডিসেম্বর থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে আসেননি। জনসমক্ষে সেভাবে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি। লিবারেল পার্টির ট্রুডো ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি রিসোর্টে ব্যক্তিগত সময় কাটাচ্ছেন। সেখান থেকে ফিরেই হয়তো পদে থাকা না-থাকা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সংসদে ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টির আসন ১৫৩টি। এর মধ্যে ২০ জন সাংসদ সরাসরি ট্রুডোর পদত্যাগ চেয়েছেন। বাকিদের অনেকেই পার্টি মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
এদিকে ট্রুডোর পদত্যাগের গুঞ্জনে ডলার বিপরীতে কানাডীয় মুদ্রার দাম বাড়তে শুরু করেছে। ২০২০ সালে ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা ৭ শতাংশ অবমূল্যায়ন হলেও, বর্তমান অবস্থান করছে ডলারের মূল্যের ওপরে।
আরও পড়ুন: কানাডায় ভারতের সহিংসতার অভিযোগ ট্রুডোর
তবে ট্রুডো ক্ষমতা ছাড়ার পর লিবারেল পার্টির কোন নেতা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। অনেকে ক্ষমতার চেয়ার নিয়ে দলীয় কোন্দলের শঙ্কাও করছেন।
দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চাইলে দল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রুডো নিজ পদ ধরে রাখতে পারেন। এদিকে দেশটির বিরোধী দল জানিয়েছে, সংসদের আগামী অধিবেশনে তারা সরকার পতনের ডাক দেবে। সব মিলিয়ে কানাডা বড় রকমের অস্থিরতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
৬৯ দিন আগে
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা: ট্রুডো
ভারতের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক বিরোধ সত্ত্বেও কানাডা সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দুই দেশের সম্পর্ক সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসার পর সম্প্রতি তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রুডো ঘোষণা করেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী এক শিখ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় ভারতের জড়িত থাকার সম্ভাব্য অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কানাডা।
তবে, এই দাবিকে 'অযৌক্তিক' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি।
গত জুনে কানাডার একটি মন্দিরের বাইরে খুন হন হরদীপ সিং নিজ্জার। নিজ্জার খালিস্তান আন্দোলন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ট্রুডো বলেন, ভারতকে 'গঠনমূলক ও গুরুত্বসহকারে' সম্পৃক্ত করা অপরিহার্য।
ন্যাশনাল পোস্ট তার বরাত দিয়ে জানায়, ‘ভারত একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দেশ। গত বছর আমরা যখন আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি উপস্থাপন করেছি, তখন আমরা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক ছিলাম।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে ট্রুডো নেতাদের নৈশভোজে যোগ না দেওয়ায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রুডোর সংক্ষিপ্ত বৈঠক হলেও তাদের শরীরী ভাষা 'শীতল' ছিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর কয়েকদিন পর কানাডার পার্লামেন্টে ট্রুডো জানান, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার সম্ভাব্য অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তারা।
এরপর থেকে দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। গত সপ্তাহে কানাডার কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে কানাডার নাগরিকদের ভিসা সেবা স্থগিত করে ভারত।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
ট্রুডো বৃহস্পতিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের তাৎপর্য নিয়ে কথা বলেন, তবে হত্যার তদন্ত অব্যাহত থাকবে বলেও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে, স্পষ্টতই আইনের শাসনের দেশ হিসেবে আমাদের জোর দিতে হবে যে কানাডার সঙ্গে কাজ করতে হবে ভারতকে, যাতে আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য পেতে পারি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারত জোর দিয়ে বলেছে এই হত্যাকাণ্ডে তাদের কোনো ভূমিকা নেই এবং ২০২০ সালে দিল্লি নিজ্জারকে সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করেছিল। যদিও তার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবে সেটি অস্বীকার করে।
পশ্চিমা দেশগুলোতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খালিস্তান বা একটি পৃথক শিখ রাষ্ট্রের দাবির বিষয়ে ভারত সরকার সবসময়ই কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া দিল্লিকে তদন্তে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তারা ভারতের সমালোচনা করেনি। যেটিকে তারা এশিয়ায় চীনের উত্থানের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
৫৩৪ দিন আগে