নির্ধারিত
সরকার নির্ধারিত দামে এখনো বিক্রি হয় না পেঁয়াজ-আলু ও ডিম
আলু, ডিম ও দেশি পেঁয়াজের জন্য সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দেড় মাস পরেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বরং এই সময়ের মধ্যে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেড়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভায় আলু, ডিম ও দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়।
বাজার সূত্রে জানা গেছে, যখন দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে, যা এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার: বাণিজ্য সচিব
এছাড়া প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা, যা এখন বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়।
তবে ওই সময়ের তুলনায় আলুর দাম বাড়েনি, স্থিতিশীল রয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর যখন আলুর দাম নির্ধারণ করা হয়, তখন আলুর দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা এখনো একই রয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এই মূল্য কার্যকর করতে বাজার অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরবরাহে ঘাটতি থাকায় তা কাজ করছে না।
প্রায় দেড় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও সেই ডিম এখনো দেশে আসেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহের মধ্যে ডিম আসার কথা বললেও এখন আমদানিকারকরা বলছেন, পূজার আগে তা সম্ভব নয়। পূজার ছুটিতে ভারত-বাংলাদেশ স্থলবন্দর বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: আমদানি করা ডিম বাজারে আসবে এ সপ্তাহেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
আলু কিনতে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দিতে হয়। যদিও নির্ধারিত হার ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। দেশি জাতের পেঁয়াজের নির্ধারিত দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। তবে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর কোথাও কোথাও প্রতি হালি (৪ পিস) ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা দরে, যেখানে সরকার নির্ধারিত প্রতি হালি ডিমের দাম ৪৮ টাকা।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন ইউএনবিকে বলেন, মন্ত্রণালয়গুলো পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। তবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো দাম বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা অসাধু ব্যবসায়ীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে উৎসাহিত করেছে।
আরও পড়ুন: চিংড়ি-মাছ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিতে বিবি’র নতুন নীতিমালা জারি
১ বছর আগে
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল
চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ২০২০ সালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার ৪৭১ দিনের মধ্যে সফট ওপেনিং করার কথা ছিল। আজ (২ অক্টোবর) চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার ২৪১ দিন। আগামী ৭ অক্টোবর সফট ওপেনিং হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন সফট ওপেনিং এ উপস্থিত থাকবেন। নির্ধারিত সময়ের আগে সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে তৃতীয় টার্মিনালের। সফট ওপেনিংয়ের অনুষ্ঠান তৃতীয় টার্মিনালের ভেতরে অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশের মানুষ যেন উদ্বোধনের দিন গণমাধ্যমের মাধ্যমে এই টার্মিনাল দেখতে পারেন, সেজন্য আমরা ভেতরে উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি।
তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি নিয়ে এম মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল সফট ওপেনিংয়ের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করা। বর্তমানে এখন প্রায় ৮৮ শতাংশের ওপরে অর্থাৎ ৮৯ শতাংশের কাছাকাছি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি ওপেনিংয়ের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে যাত্রীদের জন্য টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু (ফুল ফাংশনাল) করার। তবে আমাদের কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক আগে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। নির্ধারিত সময়ের আগে যাত্রীদের জন্য টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হবে বলে আশা করছি।
তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল আছে কি না- প্রশ্ন করা হলে মফিদুর রহমান জানান, জনবলের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। এ ছাড়া আমাদের এখন যারা আছেন তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নতুন টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে সেবার মান বাড়বে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই তৃতীয় টার্মিনাল করা হয়েছে যাত্রীসেবার মান উন্নয়নের জন্য। এভিয়েশন হাব হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এই তৃতীয় টার্মিনাল করা হয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও জানান, যাত্রী সেবা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশি একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদেশি সংস্থা কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকবে আমাদের হাতে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
তিনি বলেন, বিদেশি সংস্থাকে বলে দেওয়া হবে যেন যাত্রী সেবার মান সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর অথবা সমমনা বিমানবন্দরগুলোর মতো হয়। যাত্রীসেবার মান সুনিশ্চিত করতে পারবে। এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরে আমরা বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করব।
এ ছাড়া আমাদের দেশীয় স্টেকহোল্ডার যারা রয়েছে তাদেরও বলা হয়েছে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। নতুন টার্মিনালে যাদের যতটুকু প্রয়োজন ততটুক অনুযায়ী অফিসের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
নতুন তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রস্তুত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, এটা কোনো একক কাজ না। আমরা সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা করব, দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরের মতো।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ।
এ ছাড়া টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে