বান্দরবানের তিনাপ সাইতার
বান্দরবানের তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ভ্রমণের উপায় ও খরচ
বৃষ্টি ও ঝর্ণার মধ্যকার যোগসূত্র যতটা সহজাত, প্রাকৃতিক দৃশ্য দু’টির আকর্ষণটাও যেন ঠিক ততটাই অনিবার্য। অতি বৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢল যে রূপেই হোক না কেন, পাহাড়ের কোলে বৃষ্টির স্বতঃস্ফূর্ত বিসর্জনই যেন ঝর্ণার মুক্তি।
অন্যদিকে, একসঙ্গে হোক বা আলাদাভাবে, দৃশ্য দুটোর প্রতি আদিম ভালো লাগাটা নিঃসন্দেহে অপ্রতিরোধ্য। আর এই টানেই হয়তো প্রকৃতিপ্রেমীরা নিজেদের সপে দেন ঝর্ণা বা বৃষ্টিস্নানে।
পানি প্রবাহের দিক থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত বান্দরবানের তিনাপ সাইতার যেন সেই নৈসর্গিক অবগাহনেরই নামান্তর। বিশাল জলপ্রবাহের এই বিস্ময়কর নিদর্শন নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন, ডুব দেওয়া যাক রোমাঞ্চ ও সৌন্দর্য্যের এক অপূর্ব মিথস্ক্রিয়ায়।
তিনাপ সাইতারের নামকরণ
তিনাপ সাইতার বম ভাষার দুটি শব্দ, যেখানে তিনাপ মানে নাকের সর্দি, আর সাইতার বলতে বোঝানো হচ্ছে ঝর্ণা বা জলপ্রপাত। এত সুন্দর একটি প্রস্রবণের এমন বিচিত্র নাম কেন রাখা হলো তার কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি।
তবে পাইন্দু খালের গহীনে লুকিয়ে থাকা অপার এই বুনো সৌন্দর্য্যকে স্থানীয়রা পাইন্দু সাইতার নামেও ডাকে।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
তিনাপ সাইতারের অবস্থান
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্তর্গত পাইন্দু ইউনিয়নের পাইন্দু খালে অবস্থিত এই দানবাকৃতির জলপ্রপাত। এর সবচেয়ে কাছাকাছি লোকালয়ের নাম রনিন পাড়া, যেটি ঝর্ণা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে।
তিনাপ সাইতার ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালে বৃষ্টি যত বাড়তে থাকে এই জলপ্রপাত ততই আপন মহিমায় অধিষ্ঠিত হয়। তাছাড়া রৌদ্রোজ্বল দিনে এখানে পানির উপর রংধনুর খেলা দেখতে হলে বর্ষাকালই একমাত্র ভরসা। তাই অতি বৃষ্টির মৌসুম জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস এই জলপ্রপাত দেখার সেরা সময়।
কিন্তু এর সঙ্গে দুর্গম পিচ্ছিল পাহাড়ি পথ আর কোমড় সমান পানির পাইন্দু খাল পেরোবার ধকল সামলাতে হবে। একদিকে মেঘলা রোদে ঘামে ভেজা শরীর, অন্যদিকে বৃষ্টির জন্য ঠাণ্ডা বাতাসের সুরসুরি। সেই সঙ্গে জোঁকের উৎপাতে শরীরকে টেনে নিয়ে চলাটা দায় হবে। তাই সাঁতার না জানলে আপাতত পাইন্দু খাল অতিক্রমটা এড়িয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫টি ঐতিহ্যবাহী স্থান
১ বছর আগে