২০২৫-২৬ অর্থবছর
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জ্বালানি বাজেট নিয়ে সিপিডির উদ্বেগ
দেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জ্বালানি বাজেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের বেসরকারি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বাজেটের জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি ঝোঁক দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর ও দীর্ঘমেয়াদি টেকসইযোগ্যতাকে হুমকিতে ফেলছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে অনুষ্ঠিত ‘২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: জ্বালানি রূপান্তরের অগ্রাধিকার নিয়ে ভাবনা’ অনুষ্ঠানে এই বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিকার সমিতির (ক্যাব) সহসভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি ব্যারিস্টার বিদ্যা অমৃত খান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মনোয়ার মোস্তফা এবং বিকেএমইএ’র সহসভাপতি মো. আখতার হোসেন অপূর্ব।
সিপিডির এই সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাজেট অন্তর্বর্তী সরকারের তিন শূন্য অঙ্গীকার—দারিদ্র্য শূন্য, নিঃসরণ শূন্য ও বেকারত্ব শূন্য—বিশেষ করে ‘নিঃসরণ শূন্য’ লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ ছাড়া, জরুরি সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তরে আরও পিছিয়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
চলতি বছরের ২ জুন উপস্থাপিত বাজেট উত্থাপন করা হয়। পরে ২২ জুন বাজেটটি অনুমোদন করা হয়। এবারের বাজেটের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা’।
কিন্তু সিপিডির ভাষ্যে, এই বাজেটে নবায়নযোগ্য জ্বালানির চেয়ে জীবাশ্ম জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে—যেটি এই প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও তার গবেষক দলের পরিচালিত গবেষণায় বাজেট সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুতর সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।
চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে—প্রথমত, ভর্তুকি ও ট্যারিফ পরিবর্তনের পরও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) ভোক্তাদের খরচে লাভ করছে।
দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বর্তমানে জাতীয় মোট ভর্তুকির ৪১ শতাংশ, যেখানে ২০২৫–২৬ অর্থবছরে এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।
তাছাড়া, অভ্যন্তরীণ গ্যাস অনুসন্ধান স্থবির হয়ে পড়ায় এলএনজি আমদানিতে ব্যবহৃত হচ্ছে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল।
একই সঙ্গে সক্ষমতা ও সরবরাহে অসামঞ্জস্যও দেখা দিয়েছে। কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়লেও, ত্রুটিযুক্ত চাহিদার পূর্বাভাস ও জ্বালানি আমদানির সীমাবদ্ধতায় লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে।
এর পাশাপাশি, ২০২৪ সালের মার্চে চালু হওয়া বাজারভিত্তিক জ্বালানির মূল্য পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং এটি কর ও বিনিময় হারজনিত ধাক্কায় সহজেই প্রভাবিত হয়।
এ ছাড়াও, সৌর প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আনতে ব্যর্থ হয়েছে বিপিডিবি; ৩৭টি আগ্রহপত্র (এলওএল’স)বাতিল হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ খাতে পাওনাদি পরিশোধে স্বল্পমেয়াদি উচ্চ সুদের ঋণের ওপর নির্ভর করছে সরকার, যা দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।
ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যানের মতো মূলনীতি পর্যালোচনার আওতায় থাকায় পরিকল্পনায় বিলম্ব ঘটছে।
কয়লা উত্তোলন ও এলএনজি আমদানিকে গুরুত্ব দিয়ে ‘নিঃসরণ শূন্য’ অঙ্গীকার থেকে বাজেট দূরে সরে গেছে বলেও উঠে এসেছে সিপিডির বিশ্লেষণে।
জ্বালানি রূপান্তরের লক্ষ্য পুনরুদ্ধারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি। এরমধ্যে রয়েছে— জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর ছাড় বাতিল করা, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে কার্বন কর ও শুল্কারোপ, জীবাশ্ম জ্বালানি ও এলএনজির সকল ভর্তুকি তুলে নেওয়া, গ্যাস উন্নয়ন তহবিল ব্যবহার করে ঘরোয়া গ্যাস অনুসন্ধান অগ্রাধিকার দেওয়া, অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র ধাপে ধাপে বন্ধ করা, আগাম অনুমোদনপ্রাপ্ত স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী চুক্তি পুনরায় আলোচনার মাধ্যমে পরিমার্জন করা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং আমদানিকৃত সরঞ্জামে শুল্ক ও ভ্যাট কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি ভর্তুকি তহবিল তৈরি, স্মার্ট গ্রিডে বিনিয়োগ বাড়ানো-যাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সহজে যুক্ত করা যায়, স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিবর্তে স্বল্প সুদের বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়ন চাওয়া এবং ২০৪০ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা মাথায় রেখে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নীতি পর্যালোচনা করা।
আসন্ন অর্থবছর সরকারের জলবায়ু ও জ্বালানি রূপান্তর অঙ্গীকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হবে বলে মন্তব্য করেছে সিপিডি।
আরও পড়ুন: নতুন বাজেট সংস্কারহীন ও পুরনো ধাঁচের: সেমিনারে বক্তারা
১৬১ দিন আগে
নতুন বাজেট সংস্কারহীন ও পুরনো ধাঁচের: সেমিনারে বক্তারা
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে ‘পুরনো ধাঁচের’ উল্লেখ করে এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, এটি আগের বাজেটগুলোর থেকে খুব বেশি ভিন্ন কিছু নয়। বাজেটে সাহসী কোনো সংস্কার কিংবা উদ্ভাবনী উদ্যোগের দেখা মেলেনি, যা বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি ছিল।
রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘সিপিডি বাজেট সংলাপ ২০২৫: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
ওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আপনি যদি সদয়ভাবে বলেন, তাহলে বাজেটটি পুরনো ধাঁচে করা হয়েছে, যদি একটু কঠোর হন, তাহলে বলবেন সংযত, আর বাস্তবিক দিক থেকে দেখলে এর কোনো বিশেষ প্রভাব নেই।
জাতীয় বাজেটকে ‘সরল ও সাধারণ’ আখ্যায়িত করে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ও ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘ক্ষমতায় যদি রাজনৈতিক সরকার থাকত তাহলে বাজেটটি ভিন্ন হতো।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সরকারের সময় পরিকল্পনা থাকে, একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। এসব না থাকলে বাণিজ্য, ব্যবসা ও অর্থনীতির সুদিন আশা করা যায় না।’
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ উল্লেখ করেন, অর্ন্তবর্তী সরকার বাজেট প্রণয়নের সময় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করেনি।উপদেষ্টা পরিষদ বাজেটের প্রতি ‘হ্যাঁ’ বললেও কালো টাকার বিরুদ্ধে ‘না’ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ছোট মন্ত্রিসভায় চারজন অর্থনীতিবিদ রয়েছেন, তারা পরিকল্পিতভাবে এত বাজে বাজেট উপস্থাপন করেছে। এটি আমাদের রাজনৈতিক সরকারের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) নেতা শামীম হায়দার পাটওয়ারীও বাজেটটিকে খুবই পুরনো ধাঁচের বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি মন্তব্য করেন, ‘এই বাজেট মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।’
আরও পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদে নতুন অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, ‘বাজেটে কোনো মৌলিক পরিবর্তন নেই। দর্শনীয় দিক থেকে এটি শান্ত, কাঠামোগত দিক থেকে এটি একঘেয়ে, এবং এর পন্থাও মোটেও বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ নয়।’
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বাজেটটিকে খুবই সাধারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাজেট সংকোচনের মানে আমার কাছে দুর্ভিক্ষের দিকে অগ্রসর হওয়া।’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ অন্তবর্তী সরকারকে তথ্য ও তথ্যাবলীতে মিথ্যা উপস্থাপনার অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, কারখানাগুলো নিয়মিত শ্রমিক ছাঁটাই করছে, কিন্তু সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না। তিনি সরকারের উপদেষ্টাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মূল বক্তব্য দেন।
১৬৫ দিন আগে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব, সন্তুষ্ট ডিএসই-ডিবিএ ও সিপিডি
পুঁজিবাজারে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ২০২৫-২৬ বাজেটে আলাদা কর সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি বাজারবান্ধব সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার(৩ জুন) সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে আলাদা কর সুবিধার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ সুবিধা অনুযায়ী, লেনদেনের শর্ত মেনে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির জন্য করপোরেট কর হবে ২০ শতাংশ। তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে এ করের হার সাড়ে ২৭ শতাংশ।
করহারে ব্যবধান বাড়ায় ভালো এবং বিদেশি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে বলে মনে করে সিপিডি।
এছাড়া ডিএসই'র পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম পুঁজিবাজার বান্ধব বাজেট উত্থাপন করায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মমিনুল ইসলাম বলেন, ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির মধ্যে করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি, মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার কমানো এবং লেনদেনের উপর উৎসে কর কমানোর মতো সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
আগামীতে বাজেট প্রস্তাবনায় সরকারের মালিকানা রয়েছে এমন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা, বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকা করতে প্রণোদনা দিলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মমিনুল।
বাজেট প্রসঙ্গে আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: পতনের মুখে ঢাকার পুঁজিবাজার, চট্টগ্রামে সামান্য উত্থান
সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, এবারের বাজেটে ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর উৎসে কর হার ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করা হয়েছে, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের পার্থক্য আড়াই শতাংশ বৃদ্ধি করে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সাইফুল আরও বলেন, ‘বাজেটে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন বাজার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখবে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, ইস্যুয়ার কোম্পানি, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে।’
পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের সঠিক উপলব্ধি, সদিচ্ছা ও কার্যকর পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছে ডিবিএ।
১৮৪ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির গভীরতা ও গুরুত্ব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগামী অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিকালে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ প্রস্তাব করেন।
বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় ইকোসিস্টেম মূল্যায়ন, জলবায়ু সহনশীলতা অর্জনে গণমাধ্যমের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ওষুধের দাম কমছে
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে বায়ু, পানি ও মাটি দূষণ প্রতিরোধ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রশমন, স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানানো হয়।
১৮৫ দিন আগে
বরাদ্দ কমলো প্রাথমিকে, বাড়ল মাধ্যমিক আর মাদ্রাসায়
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, বিপরীতে বরাদ্দ বেড়েছে মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি খাতে। সোমবার (২ জুন) টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছিল ৩৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা।
অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছিল ৪৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা।
এছাড়া কারিগরি ও মাদ্রাসা খাতে বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছিল ১১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, আধুনিক ও বিশ্বমানে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক মানের ‘আউটকাম বেইজড এডুকেশন’ পদ্ধতিতে কারিকুলাম হালনাগাদ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ল ৫০১ কোটি টাকা, পিএইচডি সুবিধা পাবে নার্সরা
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ৬২টি প্রকল্পের মাধ্যমে এক হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এছাড়া চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫১ লাখ, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ লাখ এবং স্নাতক পর্যায়ে ১ লাখ ৬৫ হাজার অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সংশোধিত পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহের লক্ষ্যে ১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাবের পাশাপাশি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বোনাস বৃদ্ধি এবং গ্রাচ্যুইটি প্রদানসহ সব স্তরের শিক্ষকদের মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করার প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা।
১৮৫ দিন আগে
আজ জাতির উদ্দেশ্যে বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা
আজ জাতির সামনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে যে, পূর্ব-রেকর্ডকৃত বাজেট ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে পূর্বনির্ধারিত বিকাল ৪টার পরিবর্তে বিকাল ৩টায় সম্প্রচারিত হবে।
এছাড়াও, জাতীয় বাজেটের ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করার জন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলোকে বিটিভি থেকে ফিড গ্রহণ করে বাজেট ভাষণটি একই সময়ে সম্প্রচার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে। সূত্র অনুযায়ী, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রকৃত আয় কমার উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও মূল করনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য বার্ষিক আয়করমুক্ত থাকার সীমা গেল বছরের মতো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে এ সীমা বাড়ানোর দাবি থাকলেও তা বিবেচনা করা হয়নি।
তবে, ব্যবসায় কর কিছুটা বাড়বে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়; এমন কোম্পানিগুলোর করহার ২.৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ২৭.৫ শতাংশ করা হতে পারে। বার্ষিক ৩০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন থাকা কোম্পানিগুলোর ন্যূনতম ট্যাক্স (কর) ০.৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ক্ষেত্রে, কর ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫ শতাংশ করা হতে পারে। তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য বর্তমান ২০ শতাংশ কর অপরিবর্তিত থাকবে।
কিছু লক্ষ্যভিত্তিক কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে—নতুন করদাতাদের উৎসাহ দিতে ন্যূনতম কর ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার পরিবর্তে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা হতে পারে।
আরও পড়ুন: আগামীকাল বিকাল ৩টায় বাজেট ঘোষণা করা হবে
জমি কেনাবেচায় কর কমিয়ে ঢাকায় ৬ শতাংশ, বিভাগীয় শহরে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকায় ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে, যা বর্তমানে যথাক্রমে ৮, ৬ ও ৪ শতাংশ।
আয়কর রিটার্ন দাখিলে বাধ্যবাধকতা শিথিল হতে পারে। বর্তমানে ৪৫টি সেবায় রিটার্নের প্রমাণপত্র লাগে—এ সংখ্যা কমানো হতে পারে। সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে রিটার্ন লাগবে না, তবে ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক থাকবে।
আত্মীয়দের উপহার হিসেবে অর্থ দিলে করমুক্তির সুযোগ স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা ও সন্তানের পাশাপাশি ভাই-বোনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। বেসরকারি খাতের কর্মীদের করমুক্ত ভাতা ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হতে পারে।
নিয়োগকারীরা এখন তাদের কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক সুবিধা (যেমন: গাড়ি, বাড়িভাড়া, বোনাস ইত্যাদি) বাবদ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় বাড়তি কোনো হিসাব বা জটিলতা ছাড়াই করপত্রে দেখাতে পারবেন। আগে এই সীমা ছিল ১০ লাখ টাকা।
এছাড়া, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ এবং সার্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে আসা আয় করমুক্ত থাকবে।
জমি ও ফ্ল্যাট কেনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত থাকতে পারে, তবে এলাকাভেদে বেশি হারে কর দিতে হতে পারে। অর্থের উৎস ঘোষণার বিধানও থাকতে পারে। বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের ঘোষণা আসতে পারে, বিশেষ করে যারা নাগরিকত্ব ত্যাগ করেও দেশ থেকে আয় করছেন।
ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার নিচে কোনো আবগারি কর (এক্সসাইজ ডিউটি) না থাকলেও, এই সীমা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে।
মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধির কারণে ফ্রিজ, এসি ও মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে। তবে আমদানি শুল্ক হ্রাসের কারণে বাস, মাইক্রোবাস, চিনি, মাখন, সফট ড্রিংকস, বিশেষ ধরনের কাগজ ও ক্রিকেট ব্যাটের দাম কমতে পারে। রড, ফেসওয়াশ, লিপস্টিক ও চকলেটের দাম বাড়তে পারে।
১৮৬ দিন আগে
ভিন্ন আঙ্গিকে ২ জুন বাজেট উপস্থাপন
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন আঙ্গিকে আগামী ২ জুন (সোমবার) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সংসদ না থাকায় এবারের বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন খবর দিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর। এদিন বিকাল ৪টায় ধারণ করা বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচার হবে।
পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিওগুলোকে বিটিভি থেকে নিয়ে ওই বক্তৃতা সম্প্রচার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
সবশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত ও শৃঙ্খলাপূর্ণ: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
সেদিনও ছিল সোমবার। বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তৃতা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ধরা হতে পারে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় তা সাত হাজার কোটি টাকা কম।
ব্যাংক থেকে বড় ঋণ নিয়ে কিংবা টাকা ছাপিয়ে এবারের বাজেট করা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। গত ১৩ মে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ব্যাংক থেকে বড় ঋণ নিয়ে এবারের বাজেট করা হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা মোটামুটিভাবে বাজেটটাকে বাস্তবায়ন করবো। বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে বাজেট করব না। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে ধার করে ডেফিসিট দিয়ে এগুলা করব না। ব্যাংক থেকে বড় ঋণ করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা এসব করব না। কিছুটা তো ডেফিসিট থাকবে। সেটা আমরা আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাথে বসে প্রজেক্টের ব্যাপারে নেগোশিয়েট করবো।’
এদিকে, উন্নয়ন বাজেট ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
১৮৯ দিন আগে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিবিবরণী (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শেষ নাগাদ জিডিপির ১১ দশমিক ২ শতাংশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
এতে বলা হয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ফলাফলের উন্নয়নে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে একটি পরিমিত বাজেট ঘাটতি ( সাধারণত জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ ) বজায় রেখে একটি সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব অবস্থান বজায় রেখেছে।
এছাড়া বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত তার সমকক্ষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এজন্য সরকার রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে।
তবুও এটি বলেছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্রুত গতি অনুপাত বাড়ানোকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।
যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে করের পরিমাণ ও করদাতার সংখ্যা উভয়ই বৃদ্ধি করে রাজস্ব আদায় ধীরে ধীরে বাড়বে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি ব্যয় নীতিমালার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা এবং সম্পদের দক্ষ পুনর্বণ্টন নিশ্চিত করার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং এভাবেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জীবনযাত্রার মান হ্রাস থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি জীবন বাঁচানোর দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করে।
এতে বলা হয়, এ জন্য সরকার কর্মসংস্থান বজায় রাখা, আয় সহায়তা প্রদান, সরবরাহ শৃঙ্খল সচল রাখা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুনরায় সক্রিয় করা এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
এজন্য সরকার ব্যয় বৃদ্ধি করে এবং ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যাপক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
প্রণোদনা প্রচেষ্টা ভাল কাজ করেছিল এবং ফলস্বরূপ অর্থনীতি দ্রুত উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে এসেছিল যখন অন্যান্য দেশগুলো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।
যাইহোক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আবারও যথেষ্ট ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য সরকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারি ব্যয়কে যুক্তিসঙ্গত করার নীতি অনুসরণ করছে।
কল্যাণ ও উন্নয়ন সর্বাধিক করার জন্য অর্থনীতি পরিচালনার সময় সরকার মধ্যমেয়াদে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ বাজেট ঘাটতি বজায় রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, রাজস্ব সংগ্রহ এবং বাজেট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশে জিডিপির তুলনায় সরকারি ব্যয়ের আকার কম ছিল।
পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানোর জন্য কিছু কৌশল গ্রহণ করেছে সরকার।
আরও পড়ুন: আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে জিডিপির প্রায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ।
তাছাড়া, সরকার এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট (পিএফএম) সংস্কার প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।
সামগ্রিক জনসেবা প্রদান, বাজেট বরাদ্দের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বাস্তবায়নের রিয়েল-টাইম মনিটরিং এবং পুনরাবৃত্ত ও মূলধন ব্যয়ের সংহতকরণের জন্য পিএফএম অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২৩) বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে এবং সংশোধিত পিএফএম সংস্কার কর্মপরিকল্পনা (২০২৪-২০২৮) সম্প্রতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
পিএফএম সংস্কারের আওতায় পেনশন অটোমেশন এবং ই-চালান অটোমেশন সিস্টেমগুলো আইবিএএস ++ সফ্টওয়্যারের সাহায্যে চালু করা হয়েছে।
এই ব্যবস্থা বাজেট ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সহজীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। একই সঙ্গে আইবিএএস++ সফটওয়্যারের সাহায্যে গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি) পেমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে, যা সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা আনবে।
এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সব প্রতিষ্ঠানের সব সরকারি বরাদ্দ মধ্যমেয়াদে আইবিএএস++ পদ্ধতির মাধ্যমে ট্রেজারি সিঙ্গেল অ্যাকাউন্টের (টিএসএ) আওতায় আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
৭৭৫ দিন আগে