তদন্ত
নিউইয়র্ক পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কুইন্স এলাকায় নিউইয়র্ক পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহতের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক উইন রোজারিওর বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায় যে, পুলিশের গুলি করার প্রয়োজন ছিল না। এট অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং এর তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে পুলিশের 'অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া' বা দোষ প্রমাণিত হলে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও এমভি আব্দুল্লাহ জাহজকে মুক্ত করার জন্য সোমালিদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। খুব শিগগিরই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে আশা করি।’
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের চর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি জানান, বাংলাদেশি নাবিকরা সবাই কেবিনে আছেন, ভালো আছেন। তাদের ওপর জলদস্যুরা কোনো নির্যাতন করছে না।
বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সামরিক সদস্যদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ জানান, মিয়ানমারের মেজর, ক্যাপ্টেন ও সার্জেন্ট র্যাংকের তিন সামরিক সদস্য নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে আছেন। এই তিনজনসহ বাংলাদেশে আগে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সব সামরিক সদস্যকে খুব শিগগিরই নৌপথে ফেরত পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন ড. ইউনূস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কুমিল্লায় অবন্তিকার বাড়িতে তদন্ত কমিটি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি কুমিল্লার বাড়িতে গিয়ে তার মা তাহমিনা শবনমের সঙ্গে কথা বলে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে দলটি নগরির বাগিচাগাঁওয়ের অরনিকা পার্কের বাসার দ্বিতীয় তলায় ঘটনাস্থলে যায়।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ডে জবি’র সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী
ঘটনাস্থলে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে অবন্তিকার মায়ের সঙ্গে কথা শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। পরে তারা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় গিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, আমরা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছি। অবন্তিকার মায়ের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করেছি।
অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বলেন, তদন্ত দল ঢাকা থেকে আমার কাছে এসেছেন। উনারা তথ্য নিয়েছেন। আমি উনাদের সব বলেছি। উনারা আমার কথা শুনেছেন এবং তা লিখেও নিয়েছেন। উনারা বলেছেন ন্যায় বিচার পাব।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৫ মার্চ) অবন্তিকা সহকারী প্রক্টর দীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেইসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মানের নাম উল্লেখসহ বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: জামিন পাননি দ্বীন ইসলাম, রিমান্ড শেষে জেলে আম্মান
অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
শিশু আয়ানের মৃত্যু: তদন্তের জন্য নতুন কমিটি গঠন
রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খাতনা করতে গিয়ে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কমিটি গঠনের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চিকিৎসায় অবহেলায় ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃতদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মাকসুদুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া কমিটিতে আরও দুইজন চিকিৎসক, দুইজন সিভিল সোসাইটির সদস্য ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে রাখা হয়েছে। কমিটি এক মাসের মধ্যে আয়ানের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন- রিটকারী আইনজীবী শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- ব্যারিস্টার সাঈদ আহমেদ রাজা।
আরও পড়ুন: থানা-আদালত প্রাঙ্গণে জব্দ করা মালামালের তথ্য জানাতে আইজিপিকে হাইকোর্টের নির্দেশ
এর আগে ১৫ জানুয়ারি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুলে আয়ানের পরিবারকে কেন পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
এ আদেশ অনুসারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে উপপরিচালক ডা. পরিমল কুমার পালের সই করা ১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন ২৮ জানুয়ারি আদালতে দাখিল করা হয়।
উল্লেখ্য, সুন্নতে খাতনা করানোর জন্য আয়ানকে বাড্ডার সাঁতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান অভিভাবকরা। খাতনা শেষ হওয়ার পর আয়ানের জ্ঞান না ফেরায় তাকে সেখান থেকে পাঠানো হয় ইউনাইটেড হাসপাতালে। সেখানে সাত দিন শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মারা যায় সে।
আরও পড়ুন: দেশের আদালতে দণ্ডিত সবাইকে ফিরিয়ে আনা হবে: আইনমন্ত্রী
পদ্মা ফেরিডুবি: সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জাতীয় কমিটির
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে বুধবারের ফেরিডুবির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর)।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সংগঠনের সভাপতি মো. শহিদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ফেরিডুবি, নিখোঁজ ২৫
অজ্ঞাতপরিচয় বাল্কহেডকে দোষারোপ না করে ডুবে যাওয়া ফেরি 'রজনীগন্ধা' তৈরির সময় কোনো ত্রুটি ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সংগঠনটি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) জানায়, বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ফেরিটি ডুবে গেছে।
আরও পড়ুন: পদ্মায় ফেরিডুবির ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন
বিআইডব্লিউটিসির বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ফেরিটির নির্মাণ ত্রুটি ও সর্বশেষ ফিটনেস জরিপসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা প্রয়োজন।
দুর্ঘটনার পর থেকে জাতীয় কমিটি উদ্ধার তৎপরতাসহ পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি ডকইয়ার্ডে ফেরিটি নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাল্কহেড ধাক্কা দেওয়ায় ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
এত অল্প সময়ের মধ্যে বাল্কহেডের (বালুবহনকারী ছোট জাহাজ) ধাক্কায় এত বড় জাহাজের হাল ভেঙে নদীতে পড়ে যাবে তা অবিশ্বাস্য।
জাতীয় কমিটির নেতারা অবিলম্বে ফেরিসহ ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধার এবং নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় যানবাহন নিয়ে ফেরিডুবি, চালক নিখোঁজ
হবিগঞ্জে থানায় আসামির মৃত্যু: ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি
হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানায় চুরির মামলার আসামি গোলাম রাব্বানীর (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেবেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হাসিবুল ইসলাম। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন কমিটিকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মৃত গোলাম রাব্বানী হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নন্দিপাড়া গ্রামের মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে। রাব্বানীর বড় ভাই মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন তার ভাইয়ের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্নের একটি ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে ভাই হত্যার বিচার চান।
গ্রেপ্তারের পর রাব্বানীকে হাজতে রাখার কথা, কেন তাকে অন্য কক্ষে রাখা হবে বা পুলিশ কোথায় ছিল- এ প্রশ্ন তুলে তিনি তার ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বদলি
মঈন উদ্দিন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ আমার ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা পরিবারের কেউ বিষয়টি জানতাম না। সন্ধ্যা ৭টায় আমরা জানতে পারি সে বানিয়াচং থানায় আছে। তখন আমার মা থানায় যান। থানা থেকে আমার মাকে জানানো হয় রাব্বানীর বুকে ব্যথা, তাই তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাত ১০টার পর বানিয়াচং থানা থেকে জানানো হয়, রাব্বানী থানার রেস্টরুমে তার স্যান্ডো গেঞ্জি ও কোমরের বেল্ট খুলে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’
মুঠোফোনে উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করার কথা স্বীকার করেন। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি পরে ফোন দিয়ে জানাবেন বলে কল কেটে দেন।
মঙ্গলবার রাতেই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গোলাম রাব্বানীর সুরতহাল হয়। বুধবার হবিগঞ্জ মর্গে গোলাম রাব্বানীর ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ময়নাতদন্ত সম্পর্কে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আরএমও ডা. নাজমা আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে গোলাম রাব্বানীকে একটি টমটম চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করেন এসআই মনিরুল ইসলাম। তাকে হাজতে না রেখে পাশের একটি কক্ষে রাখা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
ওসি বলেন, সন্ধ্যায় রাব্বানীকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় গেঞ্জির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
রাব্বানীর বিরুদ্ধে ৭/৮টি চুরি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জ কারাগারে আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
জাতীয় নির্বাচন: হবিগঞ্জের ডিসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ ইসির
গাজীপুরে রেললাইন কাটাকে নাশকতা বলে তদন্তের দাবি বিএনপির
গাজীপুরে রেললাইন কাটার ঘটনাকে নাশকতা আখ্যায়িত করে দোষীদের খুঁজে বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
এক বিবৃতিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিরোধী দলের উপর দোষ চাপানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা ১১ দফায় অবরোধ চলছে
তিনি বলেন, ভাওয়াল রেলস্টেশনের কাছে একটি ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি নাশকতার ঘটনা। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যারা এ ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা মানবতার শত্রু।
আমরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। বিএনপির পক্ষ থেকে ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি দুর্ঘটনায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিবৃতিতে রিজভী বলেন, কিছু গণমাধ্যম ট্রেন দুর্ঘটনার দায় বিরোধী দলগুলোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘এটা গভীর ষড়যন্ত্র। এটা প্রমাণ করে এবং মানুষ বিশ্বাস করে যে এই ধরনের নাশকতা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলগুলোর চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে কিছু গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং অন্যের পাপের শাস্তি দিতে বিরোধী দলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে।
বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের ৩৬ ঘণ্টার রেল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের শেষ দিন বুধবার ভোরে গাজীপুর রেলস্টেশনের কাছে বাঁখারিয়ায় ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতার ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
বিএনপি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
১০৩ বার পেছালো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৯ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। এ নিয়ে ১০৩ বার পেছালো প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল করেনি।
এ জন্য ঢাকা মহানগরীর ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী এ তারিখ ঠিক করেন।
শেরেবাংলা নগর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ তথ্য জানান।
মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন।
আরও পড়ুন: ১০২ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন
অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজ ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যা মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে: র্যাব
র্যাব হেফাজতে নওগাঁর জেসমিনের মৃত্যু: তদন্ত প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে ওই প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, প্রতিবেদনটি অস্পষ্ট। প্রতিবেদনে সুলতানা জেসমিনকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারের পর আত্মীয় স্বজনকে জানানো হয়েছিল কি না— সে বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে আদালত এ প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট নয়।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য প্রস্তুতের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুল শুনানির জন্য আগামী ২৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজওয়ার পার্থ উপস্থিত ছিলেন।
পরে অ্যাডভোকেট মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, আদালত নওগাঁর ঘটনা তদন্তে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন দেখে সন্তুষ্ট হননি। জেসমিনকে গ্রেপ্তারের পর আত্মীয় স্বজনকে জানানো হয়েছিল কিনা? থানাকে অবহিত করা হয়েছিল কিনা? এসব বিষয় স্পষ্ট করা হয়নি প্রতিবেদনে। তবে আদালত আগামী ২৯ নভেম্বর এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির ৩০২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ৮ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি ৩০২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন। গত ২২ মে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কমিটির প্রধান করা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
জানা যায়, স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৫–এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে। এনামুল হককে সঙ্গে নিয়েই র্যাব ওই অভিযান চালায়।
এনামুল হকের অভিযোগ, সুলতানা জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে। আটকের পর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে তাকে নওগাঁর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। ২৪ মার্চ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করুন: হাইকোর্ট
পরিবারের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর জানা যায়, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হক একটি মামলা করেছেন, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেলে। এ মামলার আসামি জেসমিন ও তার কথিত সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আল-আমিন।
এদিকে, র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত ২৭ মার্চ হাইকোর্টের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। পরে আদালতের নির্দেশে ২৮ মার্চ তিনি হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করেন।
রিটে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র্যাবের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। ওই দিনই রিট আবেদনের আরজি তুলে ধরে রিটকারী মনোজ কুমার আদালতে বলেন, ‘এ ঘটনায় কোনো বিষয়ও বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। র্যাব গঠন করা হয়েছিল দাগি চোর-ডাকাত, মাদক চোরাকারবারি ধরতে। এই নারীকে (সুলতানা জেসমিনকে) আটক করা হয় ২২ মার্চ। আর ২৪ মার্চ তার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার পুলিশের থাকলেও র্যাবের নেই।
তাছাড়া, ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৭ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি।'
শুনানি গ্রহণ শেষে গত ৫ এপ্রিল হইকোর্ট কোন মামলা ছাড়াই নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে (৪৫) র্যাবের হেফাজতে নেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত যে প্রক্রিয়া তা আইনগতভাবে কতটুকু সঠিক ছিল এবং র্যাবের কোন এখতিয়ার ছিল কিনা তা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কমিটিতে নওগাঁর জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন এবং সেখানকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়ে। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
তদন্তকালীন জেসমিনকে আটকের সঙ্গে র্যাবের যেসব সদস্য জড়িত ছিলেন তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে, মামলা ছাড়াই সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া ও পরবর্তী পদক্ষেগুলো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। ওই আদেশ অনুযায়ী ২২ মে ৮ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ
দুদক এর তদন্তে কারো ব্যক্তিগত পরিচয় দেখে না: সংস্থাটির সচিব
গ্রামীণ টেলিকমের ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীরা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তারা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখেন এবং কিছু অভিযোগ অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে দুদক একটি মামলা করেছে এবং তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্তের অংশ হিসেবে কমিশন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।’
অর্থ পাচার ও আত্মসাতের মামলায় ড. ইউনূসকে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস
ড. ইউনূসের ব্যক্তি ইমেজের প্রভাবে দুদকের তদন্ত প্রভাবিত করার সুযোগ আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দুদক কারো ব্যক্তিগত পরিচয় দেখে না। প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ নেই।’
তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি আত্মগোপন করতে পারেন কিংবা আলামত নষ্ট করতে পারেন অথবা সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন সে ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করতে পারেন অথবা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় পদক্ষেপ নিতে পারেন।’
আরও পড়ুন: আত্মসাৎ মামলা: দুদকে ড. ইউনূস
অর্থ পাচার ও আত্মসাতের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে হাজির হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো।’
দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ডব্লিউপিপিএফ’র কোনো অনিয়মের সঙ্গে তার মক্কেল জড়িত নন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ম অনুযায়ী লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, ড. ইউনূস 'আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল' হওয়ায় জাতিসংঘে বৈঠক থাকা সত্ত্বেও তদন্তে তাদের সহায়তা করতে দুদকে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে মামলা
পাইলটের মৃত্যুর ঘটনায় গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
বাহরাইনের জাতীয় পতাকাবাহী গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে উড্ডয়নের সময় অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া এক পাইলটের মৃত্যুর তদন্তে বাধা সৃষ্টিকরার অভিযোগ উঠেছে।
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ারের কথিত অবহেলার কারণে জর্ডান-আমেরিকান পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দি মারা যান।
নিহত পাইলটের বোন মার্কিন নাগরিক তালা এলহেনডি জোসেফানো শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন।
তিনি দাবি করেন, গালফ এয়ারের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহ তার ভাইয়ের মৃত্যুর তদন্তে বাধা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বিমানে পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে: প্রতিমন্ত্রী
ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তালা এলহেন্দি দাবি করেন, কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহ মামলার প্রধান সাক্ষী হলেও সহযোগিতা করছেন না, যা পিবিআই তদন্তের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
প্রয়াত পাইলটের বোন জানিয়েছেন, মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির অবহেলাজনিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আটকে রাখা এবং গালফ এয়ারের প্রধান সাক্ষীদের বক্তব্য আটকে দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছে।
এই মামলায় ইশা শাহকে 'প্রধান সাক্ষী' উল্লেখ করে তালা আরও বলেন, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে ঈসা শাহ ২৫ জুন একটি কোম্পানির অনুষ্ঠানে ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু কেন তিনি পিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, জবানবন্দি দিতে পারেননি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হাজির করতে পারেননি তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলস্বরূপ, আমাদের পরিবার ন্যায়বিচারে বাধা দেওয়ার জন্য ইশা শাহ এবং গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে নিজ দেশ জর্ডান ও আন্তর্জাতিক আদালতে জুরিসডিকসনে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের পিবিআই তদন্তে সহযোগিতা করতে বাধা দিতে গালফ এয়ারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আরও পড়ুন: ড্রিমলাইনারে বিদেশি পাইলটদের 'লাইন ট্রেনিং' দিচ্ছে বিমান
তালা আরও বলেন, ‘এই ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতা ছাড়াও তারা গণমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতিও দিয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় ফ্লাইট চালুর জন্য ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে গালফ এয়ার। এছাড়া তারা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) অডিট সদ্য শেষ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এমন পরিস্থিতিতে গালফ এয়ার আমার ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ও ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) কাছে গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।’
তালা বলেন, এই বিশেষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলের মান ও কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এফএএ ও আইএটিএকে গালফ এয়ারের কথিত অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবহিত করা, যা আমার পাইলট ভাইয়ের মৃত্যুর প্রধান কারণ।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই গুরুতর অভিযোগগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে।’
আরও পড়ুন: বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ