কূটনীতিক
কূটনীতিকরা স্টেশন ছাড়ার বিষয়ে কোনো তথ্য জনসম্মখে প্রকাশ করা হয় না: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন বলেছেন, কোনো রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার স্টেশন ছেড়ে গেলে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আয়োজক দেশকে জানানো একটি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া; তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জনসম্মখে প্রকাশ করে না।
তিনি বলেন, ‘এটি প্রকাশ্যে জানানোর কথা ছিল না।’
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ছুটির বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন কোনো রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার স্টেশন ছেড়ে যান, তখন তারা একটি কূটনৈতিক নোটের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন এবং সেই বিশেষ কূটনীতিকের অনুপস্থিতিতে কে মিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হবেন তাও উল্লেখ থাকে।
আরও পড়ুন: ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার বিষয়বস্তু কী হবে তা তাদের ব্যাপার: মুখপাত্র
মুখপাত্র বলেন, তাদের নিজ নিজ সদর দপ্তরেও এ তথ্য জানাতে হবে।
সেহেলী আরও বলেন, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একজন মুখপাত্র থাকায় ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, একইভাবে যদি কোনো বাংলাদেশি কূটনীতিক স্টেশন ত্যাগ করেন, তাহলে তিনি তা আয়োজক দেশ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌঁছে দেন।
রাষ্ট্রদূত হাসের বাংলাদেশের বাইরে যাওয়া নিয়ে সকাল থেকে অনেক আলোচনা চলছে, যদিও ঠিক কী ঘটেছে তা জানতে মার্কিন দূতাবাসের কাছে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছুটি কাটাতে শ্রীলঙ্কার কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ এখনো ঠিক হয়নি: সেহেলী সাবরীন
বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র
ভারত থেকে কানাডার ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার
ভারত সরকার তাদের কূটনৈতিক নিরাপত্তা (ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি) প্রত্যাহারের পরে ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করেছে কানাডা। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত জুন মাসে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে দেশটির নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত থাকতে পারে বলে কানাডার অভিযোগের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধের কারণে সর্বশেষ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারত কানাডাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ‘সন্ত্রাসীদের’ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেছে। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগটিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে নাকচ করেছে এবং অভিযোগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ভারতে থাকা কানাডার ৬২ কূটনীতিকের মধ্যে ৪১ জনকে তাদের পরিবারসহ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জোলি বলেন, বাকি ২১ কানাডিয়ান কূটনীতিক ভারতে থাকবেন।
জোলি বলেন, ‘৪১ জন কানাডিয়ান কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের ৪২ জন সদস্য তাদের কূটনীতিক নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঝুঁকিতে ছিলেন। এটি প্রত্যাহারে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ফিরে এসেছেন।’
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা: ট্রুডো
জোলি বলেন, কূটনৈতিক নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া বিষয়টি নতুন নয়, কিন্তু এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তবে এ কারণে কানাডা ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে একই জিনিস করার হুমকি দেবে না।
জোলি বলেন, ‘কূটনৈতিক বিশেষাধিকার ও মর্যাদার একতরফা প্রত্যাহার আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি করার হুমকি দেওয়া অযৌক্তিক ও উসকানিমূলক।’
জোলি বলেন, ভারতের সিদ্ধান্ত উভয় দেশের নাগরিকদের পরিষেবাপ্রাপ্তিকে প্রভাবিত করবে।
তিনি বলেন, চণ্ডিগড়, মুম্বাই ও ব্যাঙ্গালোরে ব্যক্তিগত পরিষেবা বন্ধ করে দিচ্ছে কানাডা।
কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি ভারতে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, কানাডায় ভারতের কর্মকর্তাদের চেয়ে ভারতে কানাডার কর্মকর্তাদের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত মাসে বলেছিলেন, ভ্যাঙ্কুভারের বাইরে সারেতে জুন মাসে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের হাতে নিহত ৪৫ বছর বয়সী শিখ নেতা নিজ্জার হত্যায় ভারতীয় জড়িত থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ রয়েছে।
কয়েক বছর ধরে ভারত অভিযোগ করে আসছে, ভারতে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান নাগরিক নিজ্জার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত।
তবে নিজ্জার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
ভারত কানাডিয়ানদের ভিসাও বাতিল করেছে, তবে কানাডা এজন্য প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এর আগে কানাডা একজন সিনিয়র ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করার পরে, ভারতও কানাডার একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল।
তবে ট্রুডোকে কূটনৈতিক বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, কানাডা ‘উসকানি বা উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে না।’
একজন কানাডিয়ান কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছিলেন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের নজরদারির মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার তথ্য জানা গেছে।
এছাড়া, তাদের প্রধান মিত্রদের নিয়ে গঠিত একটি গোয়েন্দা বাহিনীও একই তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ফাইভ আই’ গোয়েন্দা-শেয়ারিং জোট এ বিষয়ে কিছু গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। ‘ফাইভ আই’ গোয়েন্দা শেয়ারিং জোটে কানাডা ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড রয়েছে।
ভারতের সর্বশেষ কূটনৈতিক বহিষ্কারের পদক্ষেপ এই দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
নয়াদিল্লিতে সাম্প্রতিক গ্রুপ অব ২০ বৈঠকের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রুডোর হিমশীতল কথোপকথন হয়।
এর কয়েকদিন পরে, ভারতে একটি বাণিজ্য মিশন বাতিল করে কানাডা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন উত্তপ্ত দ্বন্দ্বের মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, অভিযোগের বিষয়টি ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
নিজ্জার খালিস্তান নামে পরিচিত একটি স্বাধীন শিখ আবাসভূমি তৈরির আন্দোলনের এক সময়ের শক্তিশালী একজন নেতা ছিলেন।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০’র দশকে একটি রক্তাক্ত শিখ বিদ্রোহ উত্তর ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সেসময় দেশটিতে শিখ নেতাসহ হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।
খালিস্তান আন্দোলন তার রাজনৈতিক শক্তি হারিয়েছে। কিন্তু এখনও ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে এ আন্দোলনের সমর্থক শিখ রয়েছে।
কয়েক বছর আগে সক্রিয় বিদ্রোহ শেষ হওয়ার সময় ভারত সরকার বারবার সতর্ক করেছে যে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালে ভারত কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দা, অস্থায়ী বিদেশি কর্মী এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য শীর্ষ দেশ ছিল।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
মিলার বলেন, কূটনীতিকদের মর্যাদা অপসারণের ভারতের সিদ্ধান্তের ফলে কানাডার অভিবাসন বিভাগ ভারতে কানাডিয়ান কর্মীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।
মিলার আরও বলেন, শ্রমিকদের ভিসা ও পারমিট প্রদানেও বাধা সৃষ্টি করবে।
ঊর্ধ্বতন কানাডিয়ান কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত কানাডিয়ান কূটনীতিকদের সংখ্যা এবং কূটনৈতিক মর্যাদা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় ছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত আরও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা বিভিন্ন পারমিট বাতিল করবে। যেমন- কূটনীতিকদের স্বামী/স্ত্রীকে ভারতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া এবং গাড়িতে কূটনৈতিক প্লেট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নেলসন ওয়াইজম্যান বলেছেন, কানাডার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভারত সর্বশেষ যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অর্থহীন।
ওয়াইজম্যান বলেছেন, ‘কানাডিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কার ভারতীয়দের বিচলিত মানসিকতা প্রকাশ করে; এতে বোঝা যায় যে তারা জানে যে তারা কানাডায় একজন কানাডিয়ান হত্যার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা হত্যার তদন্তে কানাডার সঙ্গে তাদের সহযোগিতার অভাব থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে।’
বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রথম দিনেই বৈঠক করল ইইউ টিম
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে নির্বাচনী পরিবেশ অনুসন্ধান মিশনের (ইইএম) সদস্যরা সফরের প্রথম দিন দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বিদ্যমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে একটি ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন।
রবিবার প্রতিনিধিদলের নেতা চেলেরি রিকার্ডো এবং তার দলের সদস্যরা ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনীতিকরা আলোচনায় অংশ নেন।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সফরকারী প্রতিনিধিদল জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
তবে বৈঠকের বিষয়ে কূটনীতিকদের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ‘সমাধান খোঁজার’ বিষয়ে অসন্তোষ মোমেনের
রিকার্ডোর নির্বাচনী ক্ষেত্রে ব্যাপক পেশাদার অভিজ্ঞতা রয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়াগুলোতে পর্যবেক্ষণ, তত্ত্বাবধান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা কভার করে।
দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রতিনিধি দলটি ২৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবে।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ রফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, এই মিশনের কাজ হবে মূল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের পরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, সরবরাহ ও নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইইউ’র সঙ্গে সংযুক্ত নয়: রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ঢাকায় ইইউ প্রতিনিধিদল জানিয়েছে, তদন্ত মিশনের বাংলাদেশে অবস্থানকালে তারা সরকারি প্রতিনিধি, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক।
পরিস্থিতি মূল্যায়ন কার্যক্রম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দল (ইওএম) পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ঢাকায় ইইউ মিশনের তথ্যানুসারে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের (ইওএম) ‘পরামর্শযোগ্যতা, উপযোগিতা এবং সম্ভাব্যতা’ মূল্যায়ন করাই (ইইএম) -এর মূল উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: ইইউ ও বাংলাদেশ সুশাসনের মাধ্যমে পুষ্টি বৃদ্ধিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
বিদেশি কূটনীতিকরা সীমা অতিক্রম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, কোনো বিদেশি কূটনীতিক সীমা অতিক্রম করলে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগেও এমন একটি পর্যায় ছিল। যদি এটি (ক্রসিং লাইন) আবার ঘটে তবে আমরা এটিকে বিবেচনায় নিয়ে পদক্ষেপ নেব। তবে, আমি এখন পর্যন্ত কিছু জানি না।’
সোমবার নির্বাচন কমিশনে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সফর এবং একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এর আগে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বাংলাদেশের গত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন এবং বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নাওকির মন্তব্যকে বাংলাদেশ ‘অপ্রত্যাশিত’ বলে বর্ণনা করেছিল।
আরও পড়ুন: ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে অতিরঞ্জন ও অসঙ্গতি রয়েছে: শাহরিয়ার আলম
কৌশলগত অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পর্ক গড়তে চায় জাপান: রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি
বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা অনেক দেশের তুলনায় ভালো: শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, অন্য অনেক দেশের তুলনায় ‘অনেক ভালো ও দক্ষ উপায়ে’ সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে এবং দক্ষতার সঙ্গে নিরাপত্তা দেওয়া অব্যাহত রাখবে।’
তিনি আরও জানান যে সরকার এই বিষয়ে অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং তাদের হাতে আরও অনেক কাজ রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘(এ বিষয়ে) আমরা অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছি।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বর্তমানে বিশেষ শাখা থেকে দুজন গানম্যানসহ ১৫৮ জন নিরাপত্তা কর্মী পরিষেবা পাচ্ছে।
এরমধ্যে প্রত্যেক দূতাবাস, বাসভবন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৩৯ জন করে নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে এবং এগুলোর মোট সংখ্যা ১১৭ জন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন দূতাবাসের অন্যান্য কূটনীতিকদের বাসভবনের জন্য আরও ৩৯ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এসকর্ট হিসেবে ব্যবহার করা অতিরিক্ত ৮জন কর্মীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে বর্তমানে ৩৯ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং দুইজন গানম্যান রয়েছে এবং ৭ জন অতিরিক্ত কর্মীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যমান সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ঢাকা-সিউল উচ্চ পর্যায়ের সফর প্রয়োজন: শাহরিয়ার
অন্যদিকে, ভারতের হাইকমিশন ৪০ জন নিরাপত্তা কর্মী পায় এবং ঢাকায় সৌদি দূতাবাস ৪৮ জন নিরাপত্তা কর্মী পায়।
এর আগে বুধবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, আগামীকাল বা রবিবার ঢাকায় কূটনৈতিক মিশনের জন্য আনসাররা যে বিকল্প নিরাপত্তা পরিষেবা সরবরাহ করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার জানিয়েছে।
বাংলাদেশের আনসার ও ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তারা (আনসার) তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছে।
আমরা এক ধরনের ধারণা পেয়েছি, সেই তথ্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমরা বিদেশি মিশনে জানিয়ে দেবো।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, আগামীকালের মধ্যে সম্ভব না হলে রবিবার (২১ মে) একটি নোট মৌখিকভাবে মিশনগুলোকে জানাবেন তারা।
আনসার মহাপরিচালক বলেছেন, আনসার ব্যাটালিয়ন অবিলম্বে রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রোটোকল দিতে প্রস্তুত।
আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ইতোমধ্যে সংসদসহ সারা দেশে এ ধরনের প্রটোকল দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র সচিব বলেছিলেন যে সরকার চার কূটনীতিকের জন্য ‘অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট’ প্রত্যাহার করায় বিকল্প হিসেবে ঢাকাস্থ বিদেশি মিশনগুলোতে আনসার (একটি আধাসামরিক সহায়ক বাহিনী) পরিষেবা অফার করবে।
পররাষ্ট্র সচিব বুধবার তারা (আনসার বাহিনী) কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে পারবেন এবং এই সেবা নিতে ইচ্ছুক মিশনগুলোর সঙ্গে কিভাবে সংযোগ গড়ে তুলতে পারেন সে বিষয়ে আনসার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সরকার ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে আয়োজক দেশ হিসেবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং বিদেশি মিশন ও তাদের কর্মীদের নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের জন্য বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে: পররাষ্ট্র সচিব
‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ সেবা প্রত্যাহারে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না: পররাষ্ট্র সচিব
সরকার বিদেশি মিশনে আনসারদের মাধ্যমে বিকল্প সুবিধা দেবে: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, চার কূটনীতিকের জন্য 'অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট' প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় বিকল্প হিসেবে সরকার ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি মিশনগুলোতে আধাসামরিক সহায়ক বাহিনী আনসারের সেবা দেবে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা কি ধরনের নিরাপত্তা সুবিধা দিতে পারবে তা জানতে এবং এই সেবা নিতে ইচ্ছুক মিশনগুলোর সঙ্গে যাতে সংযোগ স্থাপন করতে পারে সে বিষয়ে তারা বুধবার আনসার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আনসারের সঙ্গে কথা বলব এবং মিশনগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’ অতিরিক্ত এসকর্ট প্রধানত ট্র্যাফিক ক্লিয়ারেন্সের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় স্বাগতিক দেশ হিসেবে সরকার দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত এবং বিদেশি মিশন ও তাদের কর্মীদের জন্য নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
মোমেন বলেন, তারা দেশে কোনো নিরাপত্তা ঘাটতি ও জঙ্গিবাদ দেখছেন না এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে পুলিশ কর্মীদের অভাব বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
কূটনীতিকদের গাড়িতে পতাকা ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি এমন একটি বিষয় যা মূলত ব্যক্তির বিবেচনার ওপর নির্ভর করে এবং তিনি মনে করেন যে কূটনীতিকরা কোথায় পতাকা ব্যবহার করবেন বা করবেন না তা তারা বুঝবেন।
কূটনীতিক হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোমেন বলেন, নিউইয়র্কে থাকার সময় পতাকা ব্যবহারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, কিন্তু অনেক দেশেই রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় পতাকা ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি কোনো মার্কেটে বা কোনো সহকর্মীর ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে যাই তবে আমি সেই সময় পতাকাটি ব্যবহার করব না। এটা ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।’
এর আগে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা (বিদেশি মিশনগুলো) চাইলে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে তা পেতে পারে। আমরা করদাতাদের টাকা দিয়ে এই অতিরিক্ত (নিরাপত্তা) এসকর্ট সার্ভিস দেব না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দেয় না।’
মন্ত্রী বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: স্বাগতিক দেশকে অবশ্যই কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে: মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ১৫ মে (মার্কিন সময়) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে কথা বলতে চাচ্ছি না।’ তবে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনও দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও এর কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে হবে এবং কর্মীদের ওপর কোনও আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর সব পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঢাকায় মার্কিন ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্যাটেল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বিশেষে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর
অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সক্রিয় হতে হবে: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ টেকসই করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে তৎপর হতে বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হতে হবে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে দোহায় তার বাসভবনে অনুষ্ঠিত একটি আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে এই নির্দেশনা দেন।
এসময় তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে চলেছে, তাই যেসব দেশে বাংলাদেশ তার ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারে সেদিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সব দেশের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতা করতে হবে। যাতে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারি, এগিয়ে যেতে পারি এবং ভবিষ্যতে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারি।’
তিনি বলেন, একসময় কূটনীতি ছিল রাজনৈতিক ইস্যু, আর এখন এটা অর্থনৈতিক বিষয়। ‘সুতরাং, আমরা যে যেখানে (বিভিন্ন দেশে) কাজ করছি, তাদের সেখানে বাণিজ্য ও ব্যবসার সুযোগ খুঁজে বের করতে হবে, যাতে আমরা প্রতিযোগিতামূলক দামে আমাদের রপ্তানি এবং পণ্য আমদানি বাড়াতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পণ্যের চাহিদা আছে, তাই যেখানে আমাদের পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ আছে সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করুন।’
আরও পড়ুন: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫টি মূল সহায়তা প্রয়োজন: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হল 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়'।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। কিন্তু যখন অন্যায় হবে, তখন বাংলাদেশ অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কথা বলবে, যেমনটি মিয়ানমারের সঙ্গে করেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘...আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াইনি। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) বিষয়ক জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগ দিতে কাতারে অবস্থান করছেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি গত শনিবার কাতারে পৌঁছেছেন। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ সম্মেলনে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন শনিবার
সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম উম্মাহের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকায় অবস্থানরত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা’র (ওআইসি) সাতটি সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন- আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাবাহ লারবি, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিম, মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সমীর, ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফফার বিন আব্দুল করিম আল-বুলুশি, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রামাদান, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে উন্নয়নের এই স্তরে পৌঁছাত না বাংলাদেশ’: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেছিলেন এবং এর পরে তিনি নিজেই ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহকে সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের বিগত ১৪ বছরের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা;বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ ভালো থাকুক ও সুখী থাকুক এই কামনা করেন। সুতরাং, মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে তারা (রাষ্ট্রদূতরা) এতে আনন্দিত ও গর্বিত।
তারা উল্লেখ করেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রায় ৭০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছে। যা আয়োজক দেশগুলোর অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে। তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে তার সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ পালাবে না, বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তিনি চান নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। জনগণ যদি তাকে ভোট দেয় তাহলে তিনি আবার ক্ষমতায় আসবেন, অন্যথায় তিনি আসবেন না। কারণ তিনি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী।
নিজের জন্য নয়; দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার লক্ষ্য দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধন করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ঘর নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রায় ৪০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই বাড়িগুলো বিতরণের পরে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ২৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতায় অজুহাতের জায়গা নেই: ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকরা
ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধের প্রচারে যোগ দিয়েছেন। তারা এক্ষেত্রে অজুহাতের কোনো জায়গা নেই বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন বলেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ক্ষেত্রে অজুহাতের কোনো জায়গা নেই এবং প্রত্যেকেরই এর বিরুদ্ধে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে।
শুক্রবার এক টুইট বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, 'পুরুষ ও ছেলে, ছেলে ও বাবা; আসুন আমরা এক হয়ে নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করি।'
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাকে 'না' বলে বিশ্বজুড়ে সবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।ইউরোপীয় কমিশন অনুযায়ী, নারীর প্রতি সহিংসতাকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং নারীর প্রতি বৈষম্যের একটি রূপ হিসাবে বোঝানো হয়। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা যেসব ক্ষেত্রে সংঘটিত হতে পারে- শারীরিক ক্ষতি, যৌন ক্ষতি, মানসিক ক্ষতি, নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি বা ভোগান্তি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ইরানের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জ্বালানি সম্পর্ক জোরদারের আলোচনা
বাংলাদেশ-ইইউ ‘অংশীদারি সহযোগিতা’ চুক্তি সই করতে আগ্রহী
ব্রুনাই থেকে বছরে ১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি পাবে বাংলাদেশ
কূটনীতিকদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ: মোমেন
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের কূটনৈতিক নিয়ম মেনে চলার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, তাদের (কূটনীতিকদের) মনে রাখা উচিত যে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। কূটনীতিকদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িত থাকার সংস্কৃতি আজ হোক কাল হোক পাল্টাতে হবে।
সোমবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: আপনার বাবা ছিলেন বিদেশে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর: টেড কেনেডি জুনিয়রকে মোমেন
তিনি বলেন, ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ২২তম আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টার মিটিংয়ে প্রায় ১৬টি দেশের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের অংশগ্রহণ থাকবে।
মোমেন বলেন, বৈঠকে ভারতের প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের অংশগ্রহণ থাকবে।
তিনি বলেন, ঢাকায় অবস্থানকালে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সিনিয়র অফিসিয়ালস মিটিংয়ের (সিওএম) আগে ২২-২৩ নভেম্বর আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টারস মিটিং এর আয়োজন করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) বর্তমান চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট), সচিব (পূর্ব) ও সচিব (পশ্চিম) উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মোমেনকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে সুখবর নেই: মোমেন