বিজ্ঞান চর্চা
জ্ঞান অর্জন ও বিজ্ঞান চর্চা কর: ঢাবির সমাবর্তনে তরুণদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
জ্ঞান অর্জন ও বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে দেশকে উন্নত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমার জন্য যা যা সম্ভব আমি তাই করছি। তরুণদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়।’
রবিবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সড়ক যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনায় বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদানের লক্ষ্যে এই বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
নয়াপল্টন ও শাপলা চত্বরে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত সরকারবিরোধী সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবারের সহিংসতার প্রতিবাদে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা হরতাল সত্ত্বেও কর্মসূচি পালন করা হয়।
শেখ হাসিনা গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘গবেষণাকাজে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি গবেষণায় আমরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। আজ আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে এবং দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তারপর আমাদের চাঁদে যেতে হবে। চাঁদে যাওয়ার জন্য আমি ইতোমধ্যে লালমনিরহাটে এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার একমাত্র লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আমার কাছে কিছুই নয়। আমি অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রী হতে পারতাম। কিন্তু আমি এটা এভাবে চাইনি।’
তিনি বলেন, তিনি জনগণের কল্যাণে ক্ষমতা ব্যবহারে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, ‘আমি যা করছি তা হলো জাতির পিতা যেভাবে দেখতে চেয়েছিলেন, সেভাবেই দেশের উন্নয়ন করা। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।’
তিনি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের কথা ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ মানুষ যত বেশি উন্নত হবে, দেশের জন্য তত ভালো হবে। মুষ্টিমেয় মানুষের অগ্রগতি কাম্য নয়। এটি সর্বজনীন হতে হবে। আমাদের উন্নয়ন তৃণমূল থেকে, গ্রাম থেকে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বাংলাদেশ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বার বার উল্লেখ করেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কৃষি, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর গুরুত্বারোপ করার কথা বলতেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন ব্যর্থ হবেই: আনোয়ারায় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে এবং বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার প্রতিটি বাণী হৃদয়ে ধারণ করে এবং তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা তা করতে সক্ষম হয়েছি। আমি এভাবেই করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তবে করোনা ও যুদ্ধ গোটা বিশ্বের জন্য বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন, রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এই স্বাধীনতার সুফল সবার কাছে পৌঁছে দেব। এই বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব লজ’ প্রদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়। আমি যদি আবার ভর্তি হতে পারতাম, এখান থেকে মাস্টার্স শেষ করতে পারলে খুশি হতাম।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অনেক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এতে সন্তুষ্ট নই। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তা পাইনি। যদিও আমাকে এখান থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়েছিল, তবে আমি যদি এখানে আবার পড়াশোনা করতে পারতাম তবে আরও ভালো হতো।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের কাছ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টোল নিয়ে ঝুমুরের স্বপ্ন পূরণ
১ বছর আগে