টিক্কা
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার নির্বাচনের নামে উপহাস করতে চায় বলেই দেশে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঝড় বইছে।
রবিবার ভার্চুয়াল সংবাদ তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করতে চলমান ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের পর তারা আরও কর্মসূচি নিয়ে আসবেন।
রিজভী বিএনপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে পারে।
তিনি বলেন, 'সারা দেশে গ্রেপ্তারের ঝড় চলছে। এই গ্রেপ্তার অভিযানে আপনারা (সরকার) জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। যারা ক্ষমতায় আছে তারা ভয়ংকর ডাকাতের মতো আচরণ করছে।’
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে এবং টাকার বিনিময়ে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিচ্ছে। আবার অনেককে টাকা নেওয়ার পরও ছেড়ে দিচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের আত্মগোপনে চলে যাওয়া এবং ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করার জন্য সমালোচনা করেন।
রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করেন, বিএনপি নেতারা কোথায়? তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেন, আমরা গুহা থেকে ব্রিফিং করি। টিক্কা খান (১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডার) নির্মম সামরিক অভিযান ও অপারেশন সার্চলাইট চালানোর পর এ ধরনের মন্তব্য করতেন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারেনি কারণ তাদের ঘরবাড়ি, গ্রাম ছেড়ে দেশের সীমানা অতিক্রম করতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী কারাগারে
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সে সময় টিক্কা খান ও নিয়াজি ঠিক একই কথা বলেছিলেন। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্বৃত্ত বলে অভিহিত করে। ওবায়দুল কাদের এখন ঠিক একই ভাষা ব্যবহার করছেন।’
রিজভী বলেন, ১৯৭১ সালে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, এখন বাংলাদেশেও সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
ওবায়দুল কাদের এখন টিক্কা খান ও নিয়াজির ভূমিকা অনুসরণ করছেন এবং বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দল ও বিএনপিকে নির্মূল করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জনগণের রক্ত ঝরিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'তারা (সরকার) নীরব পরিবেশে নির্বাচনের নামে উপহাস করবে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ হাসিনার তালিকা অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, যে দেশে পুলিশ নিজেরাই দাঙ্গার গাড়ি থেকে ককটেল নিক্ষেপ করছে, সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
তিনি বলেন, 'কীভাবে পুলিশকে এ দেশের মানুষের বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা যায়। তারা (পুলিশ) শেখ হাসিনার পেশী হিসেবে কাজ করছে এবং জনগণকে শত্রু বানাচ্ছে।’
এমতাবস্থায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, 'সরকার নানাভাবে নাশকতার চেষ্টা করতে পারে এবং এর দায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে।’
তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৬১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ছাড়া একই সময়ে ১ হাজার ৬০ জনকে আসামি করে নতুন করে নয়টি মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ও হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলায় ১২২টি নতুন মামলায় বিএনপির ৫ হাজার ২৮৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩ হাজার ৪৯৮ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও অনুসারী আহত হয়েছেন। একজন সাংবাদিকসহ নয়জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাস ফের কারাগারে, ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য
টঙ্গী থেকে বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে র্যাব
১ বছর আগে