ঝুঁকিতে
জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিতে নেট-জিরো লক্ষ্যমাত্রা: ইউএনইপি
পৃথিবীতে চলতি দশকে কয়লা, তেল ও গ্যাসসহ জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা হ্রাস পাবে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) এবং গবেষণা অংশীদারদের প্রকাশিত একটি যৌথ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
২০২৩ সালের প্রডাকশন গ্যাপ রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের সরকারগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে ১১০ শতাংশ বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন করার পরিকল্পনা করেছে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা বায়ুমণ্ডলীয় উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংরক্ষণ নীতি পুনরুদ্ধারের ঘোষণা ব্রাজিলের
ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন বলেন, 'জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন সম্প্রসারণের সরকারের পরিকল্পনা নেট-জিরো নির্গমন অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি রূপান্তরকে দুর্বল করছে এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
অ্যান্ডারসেন বলেন, পরিচ্ছন্ন ও কার্যকর জ্বালানি দিয়ে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই জ্বালানি সংকটের অবসান ঘটানো এবং একই সঙ্গে নির্গমন কমানোর একমাত্র উপায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনার আগে ২০২৩ সালের প্রডাকশন গ্যাপ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ৩৫০ শতাংশ এবং ১৫০ শতাংশ। এটি ১ দশমিক ৫ বা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উষ্ণতা সীমিত করার প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সংকট ও বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহের উপর চাপ উৎপাদক দেশগুলোর মধ্যে নতুন তেল ও গ্যাস অবকাঠামোতে বিনিয়োগের পরিকল্পনাকে উৎসাহিত করেছে। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার ন্যূনতম প্রচেষ্টাও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ এর আগেই জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের সুপারিশ সংসদীয় কমিটির
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে কয়লা, তেল ও গ্যাসের বৈশ্বিক উৎপাদনের মাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে যথাক্রমে ৪৬০, ২৯ ও ৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো নির্গমন অর্জনের জন্য সরকারগুলোকে এখন থেকে শুরু হওয়া অন্যান্য জলবায়ু প্রশমন পদক্ষেপের পাশাপাশি সমস্ত জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদনে বিশ্বব্যাপী হ্রাসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।’
প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ও স্টকহোম এনভায়রনমেন্ট ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী প্লয় আচাকুলউইসুট জোর দিয়ে বলেন, মানবজাতির জন্য একটি সবুজ ও বাসযোগ্য ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৌর ও বায়ুর মতো পরিচ্ছন্ন জাতগুলোতে দ্রুত স্থানান্তর জরুরিভাবে প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি তহবিল সম্পূর্ণরূপে চালু করুন: ধনী দেশগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
১ বছর আগে