ঘোড়া
আন্দোলন মানে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয়: তথ্যমন্ত্রী
আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে, কিন্তু আন্দোলন মানেই গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও জনগণ সমর্থন করে না।
রবিবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
হাছান বলেন, আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। আমার পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। ‘সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু সেটা মানে এই নয় যে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো। এটিকে কেউ সমর্থন করেনি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনেক সদস্য তাদের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। আরও অনেকে বিদেশ থেকে নিন্দা জানিয়েছে। বিএনপি নানাভাবে অনেককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ড কেউ সমর্থন করেনি, করতে পারে না্।’
তিনি আরও জানান, অবরোধের নামে আগের রাত থেকে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে। আজ অবরোধ ডাকলে, গতকালই শুরু হয় গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো। মানুষ ভেবেছিল, যেহেতু আগামীকাল অবরোধ, সেহেতু আজ গাড়ি-ঘোড়ার ওপর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালাবে না। কিন্তু গতকাল থেকেই তা শুরু হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি এটি হতে পারে না। এগুলোকে শুধু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললে কম হবে।
‘মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। একটি গাড়ি পোড়ানো মানে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে দেয়। একটি পরিবারের স্বপ্ন পুড়িয়ে দিয়ে তাদের স্বপ্নকে পথে বসানো। যারা রাজনীতি করেন, তারা এ কাজ করতে পারেন না। হ্যাঁ, তারা রাস্তায় নেমে এসে ব্যারিকেড দিক, মানুষকে বলুক—আমরা অবরোধ ডেকেছি, আপনারা পালন করুন। সেটি তো তারা করে না।’
চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। এ নিয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে যাওয়া কিংবা না যাওয়া—সেই অধিকার যেকোনো রাজনৈতিক দলের আছে। তারা নির্বাচনে যেতে পারে, না-ও যেতে পারে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার এখতিয়ার কারো নেই।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলা মানেই দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী কথাবার্তা। যারা এমন ধরনের বক্তব্য রাখবে কিংবা অপচেষ্টা চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখা। এ জন্য যা কিছু করা দরকার, সেটা করা হবে।’
আরও পড়ুন: ডিস লাইন ডিজিটালাইজড করার সময় বাড়ানো হবে: তথ্যমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টু প্লাস টু বৈঠক করেছে ভারত। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। সে বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই বৈঠক ছিল একান্তই দ্বিপাক্ষিক। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে, সেটা পত্রপত্রিকায় এসেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত যেটি বলেছে, সেটি যথার্থ বলেছে। কাজেই বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন এ বিষয়ে এ দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচনের মাধ্যমে কে ক্ষমতায় আসবে, তাও বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় প্রধান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের হাতে নেই, এটা তো আইনের হাতে, আদালতের হাতে। সরকার চাইলেও তাকে মুক্তি দিতে পারবে না। সরকারের হাতে যতটুকু ক্ষমতা ছিল, তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে ঘরে মুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা, সেটা সরকার করে দিয়েছে।
এ সময়ে মাতারবাড়ি সমদ্রবন্দরের কারণে সামুদ্রিক বাণিজ্যের দুয়ার ও সম্ভাবনা খুলে গেছে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর হবে। এটি ছোটোবেলা থেকে শুনে এসেছি, হয়নি। এবার সত্যিকার অর্থে গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়িতে হয়েছে। এটি আমাদের সামুদ্রিক বাণিজ্যের বিশাল দুয়ার খুলে দিয়েছে। সেখানকার পুরো এলাকা বদলে গেছে। কক্সবাজার শহর বদলে গেছে। এভাবে দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রাম বদলে গেছে। মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরেরই একটি অংশ। গতকালকের অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরের আয়োজনেই হয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তখন দেশ ধ্বংসের জন্য পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে জনগণের ওপর। তারা কোনো উন্নয়ন দেখতে পান না। এই ধ্বংস ও পেট্রোল বোমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে সোচ্চার হলে আমি মনে করি, এগুলো বন্ধ হবে,’ বলেন হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন: হামলার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে