বাংলাভাষী
ঢাকায় বাংলাভাষী কূটনীতিকদের পেয়ে গর্বিত: রুশ রাষ্ট্রদূত
ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মানতিৎস্কি বলেছেন, রাশিয়ায় শেখানো হয় এমন অন্যান্য এশীয় ভাষার মধ্যে বাংলা একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় কাজ করতে ইচ্ছুকদের আকর্ষণ করে।
তিনি বলেন, ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস বাংলাভাষী কয়েকজন কূটনীতিককে নিয়ে গর্বিত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের দক্ষতা শুধু কূটনৈতিক মিশনের দৈনন্দিন কার্যক্রমেই অপরিহার্য নয়, বরং বিভিন্ন প্রটোকল অনুষ্ঠানেও এর চাহিদা অনেক বেশি প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন: উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও তাসখন্দ স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের রেক্টরের বৈঠক
তিনি বলেন, এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষণটি মস্কো স্টেট ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিয়েল-টাইম মোডে বাংলায় অনুবাদ করা। বর্তমানে তিনি ঢাকায় কর্মরত।
শুক্রবার(৯ ফেব্রুয়ারি) এক বার্তায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, '১০ ফেব্রুয়ারি পেশাদার ছুটি উদযাপনের এই দিনে রুশ কূটনীতিকদের কাজকে অর্থবহ ও আনন্দময় করার জন্য বাংলাদেশের অতিথিপরায়ণ ও বন্ধুপ্রতীম জনগণকে ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাচ্ছে’
১০ ফেব্রুয়ারি কূটনৈতিক কর্মী দিবস - একটি পেশাদার ছুটির দিন। এদিন মস্কো এবং বিদেশে অনেক মিশনে কর্মরত সমস্ত কর্মচারীকে একত্রিত করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
যদিও ছুটির দিনটি বেশ সম্প্রতি ২০০২ সালেআনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু করলেও তারিখের পছন্দটি বিরাট ঐতিহাসিক তাৎপর্য বহন করে। কারণ এটি ১৫৪৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার বৈদেশিক সম্পর্কের দায়িত্বে থাকা প্রথম রাষ্ট্রদূত প্রিকাজের প্রাচীনতম নথিভুক্ত করাকে তুলে ধরে।
রাষ্ট্রদূত মানতিৎস্কি বলেছেন, এই ছুটির দিনটি রাশিয়ার কূটনৈতিক পরিষেবার ধারাবাহিকতার প্রতীক। এর পেশাদার ঐক্য এবং মহৎ পথনির্দেশক নীতি ও আদর্শ প্রদর্শন করে।
আরও পড়ুন: বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
তিনি বলেন, শত শত বছরের ইতিহাস জুড়ে রুশ কূটনীতিকরা যেসব দেশে সেবা প্রদান করেন, সেসব দেশের ভাষা শেখার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছেন।
মানতিৎস্কি বলেছেন, জাতীয় ঐতিহ্য এবং অভ্যাস, আকাঙ্ক্ষা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতি বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধা সর্বদা রাশিয়ান কূটনৈতিক পরিষেবার ঘোষিত মৌলিক মূল্যবোধ।
সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাশিয়ার সম্রাট পিটার দ্য গ্রেটের শাসনামলে এশীয় দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
বাণিজ্য ও রাজনৈতিক যোগাযোগের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার জন্য স্বাভাবিকভাবেই ভাষাগত এবং যোগাযোগ দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন,‘এই প্রয়োজনীয়তা রাশিয়ায় প্রাসঙ্গিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার দিকে ধাবিত করে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, আজ প্রাচ্য গবেষণায় গভীর শিক্ষা প্রদান করে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- এশিয়ান ও আফ্রিকান দেশগুলোর ইনস্টিটিউট এবং মস্কোর এমজিআইএমও বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট-পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটির ওরিয়েন্টাল অনুষদ, ভ্লাদিভোস্টকের ফার ইস্টার্ন ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এবং বিমসটেক মহাসচিবের সাক্ষাৎ
১০ মাস আগে
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কিত গবেষণা
সারসংক্ষেপ
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ চীনের শিক্ষার ক্ষেত্রে ‘নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ’র প্রতিভা প্রশিক্ষণের জন্য নতুন প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই নিবন্ধে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভার (চীনের বাংলা ভাষার শিক্ষার্থী) বর্তমান পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য তুলে ধরে চীনে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোন দেশে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার, বেশি মানসিক রোগ?
মূল শব্দ: ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’, বাংলাভাষী প্রতিভা
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই চীন ও বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল। নিউ তাং রাজবংশের দ্বিতীয় খণ্ডের ২২১(পর্ব) প্রাচীন ভারতীয় মগধ রেকর্ড করেছে। মিং ইতিহাসের ৩২৬ খণ্ডেও ‘বাংলা’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে চীন ও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর উভয়পক্ষ রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতা করেছে। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা দুই দেশ সফর করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় বাড়ছে এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে।
(১) নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণের কৌশলগত তাৎপর্য
নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, "আপনি যদি কোনো লোকের সঙ্গে এমন ভাষায় কথা বলেন যা তিনি বোঝেন, এটি তার মনে থাকবে। আপনি যদি তার নিজের ভাষায় তার সঙ্গে কথা বলেন, তিনি স্মরণ করবেন।” ভাষা ও চিন্তার সম্পর্ক নিয়ে অনুমানকে সামনে রেখেছিলেন আমেরিকান সাপির ও তার শিষ্য ওল্ফ। তারা বিশ্বাস করেন, সমস্ত উচ্চ পর্যায়ের চিন্তাভাবনা ভাষার উপর নির্ভর করে। (সাপির, ১৯২১), ভাষার কাঠামো একটি নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্যদের আচরণ ও চিন্তাভাবনা নির্ধারণ করে অনুমানটি স্পষ্ট করেন সাপির-ওল্ফ। সুতরাং, অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনা বোঝার জন্য, আরও ভালো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও মিডিয়া বিষয়ক যোগাযোগ বাড়াতে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশ্বিক কৌশলগত বিন্যাস ও সম্প্রসারণে, অনেক দেশ নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণকে জাতীয় কৌশলের উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে। চীনের নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ কৌশল নির্মাণকাজ একবিংশ শতাব্দীতে একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ আন্ডারগ্রাজুয়েট ট্যালেন্ট ট্রেনিং বেস’ ও ‘স্পেশালিটি কনস্ট্রাকশন সাইটস’ সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। চীন তার নিজ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কযুক্ত দেশগুলোর সরকারি ভাষা (৮৮টি নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ) পড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়কে সহায়তা দেবে।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ নির্মাণের মূল চাবিকাঠি হলো আন্তঃসংযোগ। আর ভাষার আন্তঃযোগিতা হলো আন্তঃসংযোগ অর্জনের ভিত্তি। ভাষা পরিকল্পনার কৌশলগুলো প্রচারের ফলে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের প্রতিভা প্রশিক্ষণের পরিমাণ, গুণমান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির উচ্চতর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
(২) চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য
বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির মাতৃভাষা, জাতিগত সংস্কৃতি, ধারণার বাহক ও জাতীয় আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্য সৃষ্টির জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য ‘ভাষা আন্দোলন’ হয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের জাতিগত ভাবনা জাগিয়ে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশিদের কাছে বাংলা ভাষা হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক প্রতীক, জাতীয় গর্ব ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। ‘বাংলাদেশি সংস্কৃতি একটি সম্মিলিত সংস্থান; যা শ্রেণি, অঞ্চল ও ধর্মীয় সীমানা জুড়ে বাংলাদেশিদের ঘনিষ্ঠ ইউনিটে আলোকিত করতে পারে।’ (উইলিয়াম ভন শ্যান্ডেল, ২০১১)
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’র অন্তর্ভুক্ত একটি দেশ হিসাবে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং মূলত কয়েকটি বড় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে চীনের সঙ্গে একমত হয়। আন্তর্জাতিক বিষয়ে চীন ও বাংলাদেশের নেতারা নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরালোভাবে বিকাশ লাভ করেছে। চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠেছে। চীনের দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ এবং তৃতীয় বৃহত্তম ইঞ্জিনিয়ারিং চুক্তি বাজার। বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণ চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে এবং আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বিকাশে নবদিগন্তের হাতছানি
২. ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের বর্তমান পরিস্থিতি
(১) পেশাদার প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির পরিমাণ কম
চীনের মূল ভূখণ্ডে বর্তমানে শুধু পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক পর্যায়ের কোর্স চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনান ন্যাশনালিটিস বিশ্ববিদ্যালয়, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ও ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়াও, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইনর কোর্স হিসেবে বাংলা ভাষা চালু রয়েছে।
নিবন্ধনের বছর অনুযায়ী, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এখানে বাংলা বিভাগ ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ পর্যন্ত মাত্র সাতটি ব্যাচ এখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মেজর ২০১৬ সালের পরে নামভুক্ত হয়। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটি ২০১৬ সালে, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ ২০১৭ সালে, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ২০১৮ সালে এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০ সালে।
তালিকাভুক্তির পরিমাণের ক্ষেত্রে, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০ জন, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজে প্রায় ১২ জন, ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ১৫ জন, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ জন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সামগ্রিক অর্থে শিক্ষার্থী ভর্তির পরিসর ছোট এবং প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির পরিকল্পনাও নেই। ২-৪ বছরের মধ্যে শুধু একবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
তবে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ প্রতি বছর বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তি করে। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এত ঘন ঘন শিক্ষার্থী ভর্তির স্কুল আর নেই। বর্তমানে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের প্রথম বাংলা ভাষা স্নাতক কোর্সের দুটি ব্যাচ রয়েছে।
(২) শিক্ষকদের দক্ষতা অপর্যাপ্ত
শিক্ষকদের দৃষ্টিকোণ থেকে, চীনের বাংলা ভাষা বিষয়ে চীনা শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বল্প, পেশাগত ডিগ্রি কম এবং শিক্ষণ অভিজ্ঞতাও অপর্যাপ্ত। যে কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রবীণ শিক্ষক ছিলেন তারা অবসর নিয়েছেন, কেবলমাত্র একজন শিক্ষক আছেন যিনি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা ভাষা পড়াচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে যেসব শিক্ষক আছেন তাদের বেশিরভাগই সবেমাত্র স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দুজন চীনা শিক্ষক আছেন। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। বেইজিং ফরেন স্টাডিজের বাংলা বিভাগে শুধু একজন চীনা শিক্ষক আছেন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের বাংলা ভাষা বিভাগে মোট ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন চীনা শিক্ষক ও ২ জন বাংলাদেশি শিক্ষক। মোট শিক্ষকের সংখ্যায় এখানে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে সর্বাধিক। তবে শিক্ষকদের একাডেমিক স্তর ও পাঠদানের অভিজ্ঞতাও উন্নত করা দরকার।
(৩) উচ্চ পর্যায়ের বাংলাভাষী প্রতিভার ঘাটতি
চীনে বাংলাভাষী প্রতিভার কাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে। প্রশিক্ষণ এখনও স্নাতক ডিগ্রি পর্যায়ে রয়েছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে এখনও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কোনো কোর্স চালু হয়নি। অনেক শিক্ষার্থী অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়েন বা সরাসরি চাকরি করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের চাকরির সঙ্গে বাংলা ভাষার কোনো সম্পর্ক নেই।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে, বাজারে এমন উচ্চ-পেশাদার প্রতিভার প্রয়োজন আছে; যারা দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিস্থিতি জানে এবং অর্থায়নে পেশাদার জ্ঞান অর্জন করে, যেমন- আইন, অর্থনীতি, বাণিজ্য ইত্যাদি। যে দেশে বিনিয়োগ করছেন, সে দেশের জাতীয় পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি না বোঝার কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ব্যর্থতা ও বিনিয়োগের ক্ষতির অনেক ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বেদনায় ভরা দিন: শেখ হাসিনা
১ বছর আগে