যোগাযোগ বন্ধ
বাংলা ব্লকেড: ঢাকাসহ সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
রাজধানীর কারওয়ান বাজার লেভেল ক্রসিং ও মহাখালী লেভেল ক্রসিংয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড দেওয়ায় ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’র অংশ হিসেবে বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা লগ বসিয়ে লেভেলক্রসিং অবরোধ করেন।
ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস জানান, বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারসংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দিয়ে ট্রেন চলাচলে বাধা দেন শিক্ষার্থীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানিম আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালে হাইকোর্টের আগের আদেশের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে এবং তা না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারে ‘বাংলা ব্লকেড’, সারাদেশে পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
৪ মাস আগে
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ
গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।
বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।
আরও পড়ুন: খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় কমিউটার ট্রেনের চারটি বগি এবং মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন।
তিনি বলেন, লাইনচ্যুত বগিগুলো রেললাইন থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনে এক ব্যক্তির মৃত্যু
ট্রেনে বন্ধুর ব্যাগ তুলে দিতে গিয়ে প্রাণ গেল কিশোরের
৬ মাস আগে
ফেনীতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: গাছ পড়ে যোগাযোগ বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ফেনী শহর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে গাছ ভেঙে সড়কে উপড়ে পড়েছে। এতে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে রাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ কেটে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। অন্যদিকে ঝড়ো বাতাসে ২৮২ হেক্টর জমিতে পাকা ও আধপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। এতে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে জেলায় শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে দুই হাজার ৩৯২ হেক্টর, দুর্যোগের কবলে পড়েছে ২৩ হেক্টর। সরিষা আবাদ হয়েছে ২০ হেক্টর জমিতে, দুর্যোগ কবলিত দুই হেক্টর জমির সরিষা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি
এ ছাড়া দুর্যোগের কবলে পড়েছে আধা হেক্টর জমির খেসারি। ঝড়ের কারণে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও রবিশস্য আবাদ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও ভারতীয় উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফুলগাজী বাজার প্লাবিত হয়েছে। শনিবার ভোরে ফুলগাজীর ভেতরের বাজার (কাঁচা বাজার) সংলগ্ন এলাকায় মুহুরী নদীর পানি গার্ডারের নিচ দিয়ে প্রবেশ করে। এতে ফেনী-পরশুরাম সড়কের কিছু অংশ পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, পরশুরামের শালধরে একটি বাঁধের মেরামত কাজ চলছিল। সেখানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে লোকালয়ে কিছুটা পানি প্রবেশ করেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দমকা হাওয়ায় জেলায় ৫৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি ঘরের চাল উড়ে গেছে।
ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া ও গাছ ভেঙে পড়ে ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৭২টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জেলার প্রায় ৬০ শতাংশ জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়নি। বিদ্যুৎ কর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ফেনীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন বলেন, দুর্যোগ আক্রান্ত আমন ফসলি জমির মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১১০ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ৭০ হেক্টর, ফুলগাজীতে ১৫ হেক্টর, পরশুরামে ২০ হেক্টর, দাগনভূঞায় ১৭ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ৫০ হেক্টর।
এছাড়া শীতকালীন সবজি ও সরিষা চাষ হয়েছে ফেনী সদর উপজেলায় ৬ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় সাড়ে ৪ হেক্টর, ফুলগাজীতে আড়াই হেক্টর, পরশুরামে ২ হেক্টর, দাগনভ‚ঞায় ৫ হেক্টর, সোনাগাজীতে ৫ হেক্টর, খেসারি আধা হেক্টর। ফেনীতে ১৭ নভেম্বর বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার ও ১৮ নভেম্বর বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬১ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি'র প্রভাবে ঢাকার বাতাসের মানে উন্নতি
তিনি আরও বলেন, ঝড়ো বাতাসের কবলে ধান হেলে পড়েছে।আক্রান্ত ধানের স্তর দানা ও পাকা পর্যায়ে রয়েছে। সবজি ও অন্যান্য আক্রান্ত ফসল আর বৃষ্টি না হলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
পরশুরামের বীরচন্দ্র নগর এলাকার কৃষক মো. আলী বলেন, ফলন ভালো হলেও আমন ধান ঘরে তুলতে পারব কি না জানি না। বাতাসে ২০ শতকের বেশি জমির ধান নুয়ে পড়েছে। এছাড়া সকাল থেকে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। সবকিছু স্বাভাবিক না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়েনের কে. পাহালিয়া এগ্রোর উদ্যোক্তা মো. মজিবুল হক রিপন বলেন, ঝড়ে এগ্রো ফার্মে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একশর বেশি পেঁপে গাছ ভেঙে পড়েছে। প্রতিটি গাছে এক-দেড় মণ পেঁপে ছিল।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া বলেন, সড়কের যেসব স্থানে গাছ পড়েছে তা রাতে থেকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস গাছ সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করেছে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত হলে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, মিধিলির প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। ঘর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে টিন দিয়ে সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসন। এই মুহুর্তে নগদ ২১ লাখ টাকা ও প্রায় ৮৯০ টন চাল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশু ও গো-খাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। গত বছরের ৪২ বান্ডেল টিন আছে যা অনুমতি সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সারা দেশে ৫১টি স্থানে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়েছে ফায়ার সার্ভিস
১ বছর আগে