প্রিম্যাচ্যুরিটি
প্রিম্যাচ্যুরিটির কারণে দেশে নবজাতক মৃত্যুর হার বেশি: ডা. নব কৃষ্ণ
প্রিম্যাচ্যুরিটির কারণে বাংলাদেশে নবজাতক মৃত্যুর হার বেশি বলে জানিয়েছেন ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পরিচালক (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. নব কৃষ্ণ ঘোষ।
তিনি বলেন, নবজাতক মৃত্যুহার কমানোর জন্য ঠিক সময়ে ডায়াগনসিস ও মায়েদের সচেতনতা দরকার।
বুধবার (২২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর মিরপুরে হাসপাতালটির আনোয়ারা খান মেমোরিয়াল কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন অধ্যাপক ডা. নব কৃষ্ণ ঘোষ।
বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস–২০২৩ ও বিশ্ব প্রিম্যাচ্যুরিটি দিবস–২০২৩ উপলক্ষে সেভ দ্য চিলড্রেনের সহায়তায় এই সেমিনারের আয়োজন করে এম আর খান হাসপাতাল।
এসময় নব কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, 'বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস এবং বিশ্ব প্রিম্যাচ্যুরিটি দিবস আমরা একসঙ্গে পালন করছি। যাতে সচেতনতা বাড়িয়ে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে পারি। আমাদের দেশে অধিকাংশ নবজাতক মৃত্যুর হার প্রিম্যাচ্যুরিটি ও কম ওজনের কারণে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিউয়োমনিয়ায় মৃত্যুর হার বেশি।'
আরও পড়ুন: নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করবে চক্ষু চিকিৎসক সমিতি ও অরবিস ইন্টারন্যাশনাল
সচেতনতার পরও নানা জটিলতায় প্রিম্যাচ্যুর বাচ্চা হলেও দ্রুত উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে অনেকাংশে শিশুর মৃত্যুহার কমানো সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন নব কৃষ্ণ ঘোষ।
সেমিনারে নিউমোনিয়া নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালটির পেডিয়াট্রিক পালমোনলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাকিবুর রহমান ও প্রিম্যাচ্যুরিটি নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালটির নিওনেটাল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আফরোজ।
সেমিনারের প্রধান অতিথি ও নবজাতক স্বাস্থ্যবিষয়ক জাতীয় কারিগরি ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, 'নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলেও অনেক অভিভাবক শিশুদের হাসপাতালে আনতে চায় না। গুরুতর হলেই কেবল আনা হয়। এতে বাড়ে মৃত্যুঝুঁকি। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে সরকারকেই মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।'
নিউবর্ন হেলথ প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. জহুরুল ইসলাম বলেন, ওষুধের চেয়ে নিউমোনিয়া প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো। ঠিক সময়ে ভ্যাকসিন, নিয়মিত হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ব্রেস্ট ফিডিং বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা নিউমোনিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। আবার যাদের অবস্থা সংকটাপন্ন তাদের চিকিৎসা পাওয়াটা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ফ্যামিলি সেন্টার খুবই জরুরি। যেখানে প্রতিরোধের পাশাপাশি চিকিৎসার পরবর্তীতে কী ধরনের ব্যবস্থা অভিভাবকদের নিতে হবে সেই পথ দেখিয়ে দিতে হবে। এতে সরকারের খরচ যেমন কমবে, একই সঙ্গে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে।
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমন্বিত কর্মপন্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়নই হেলথ প্রমোশন: সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, নিউমোনিয়ার প্রকোপ কমাতে হলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, নিউমোনিয়া বর্তমানে শিশু স্বাস্থ্যে বড় বোঝা আমাদের জন্য।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিউমোনিয়া সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য হলেও এখনো আমরা সেটি পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে পারিনি। আশপাশের ময়লা আবর্জনা, ধুলাতে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
নিউমোনিয়া নিয়ে ডা. নব কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, পরিবেশ, নবজাতকের বুকের দুধ না খাওয়া, বাবার ধূমপানের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া বেশি হয়। এসব কমাতে পারলে নিউমোনিয়া কমানো সম্ভব। পাশাপাশি সফল ভ্যাকসিনেশনেও নিউমোনিয়া কমানো সম্ভব।
ডা. নব কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ভাইরাল নিউমোনিয়া হচ্ছে ছোট বাচ্চাদের। ভ্যাকসিনের ফলে এই নিউমোনিয়াও কমানো সম্ভব।
সেমিনারে সমাপনী বক্তব্য দেন এম আর খান শিশু হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. আবদুল্লাহ্-আল মামুন।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিবন্ধী-বয়স্কদের সুযোগ প্রাপ্তির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ দরকার’
১১ মাস আগে