৮ শিক্ষার্থী
যবিপ্রবির ৮ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার
মারধরের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) আট শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলনকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৯৬তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তদন্ত কমিটির আগে তাদের সুপারিশ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় পাঠায়। কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা ও ঘটনার গুরত্ব বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: যবিপ্রবির ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত, ২ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর
সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন লিখিত বক্তব্য দেন।
রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অনেকে ভার্চুয়ালি এবং সশরীরে সভায় অংশ নেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি গত ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটর নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সময় উদ্ভূত ঘটনাগুলো রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের জানান।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায়, গত ১৪ অক্টোবর বিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে আজীবন বহিষ্কার, তানভীর আহমেদ আবিরকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
একই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মারামারির ঘটনায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী রেদওয়ান আহমেদ রাফিকে আজীবন, ফার্মেসি বিভাগের রাইসুল হক রানা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. বেলাল হোসেনকে দুই বছরের জন্য এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শোয়েব, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফয়সাল আহমেদ রকিকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
একইসঙ্গে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত, মিথ্যা ঘটনা সাজানো ও তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নৃপেন্দ্রনাথ রায়কে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে সভায় আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের শাস্তির মেয়াদ দুই বছর করা হয়।
তবে এ সময় তারা কেউ কোনো ধরনের অসদাচারণে জড়িত হলে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাদের আজীবন বহিষ্কারাদেশের শাস্তি পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
একই ঘটনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন, শাহিনুর ইসলাম ও মো. রাজিব রাজুকে সতর্কীকরণ চিঠি এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে স্বাক্ষর প্রদানের মাধ্যমে মুচলেকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এটি না করলে তাদেরও ছয় মাসের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া রিজেন্ট বোর্ডের সভায় গত ১৬ জুলাই কোষাধ্যক্ষের অফিস কক্ষে ডিন, প্রক্টর ও প্রভোস্টদের উপস্থিতির সময় অসাদাচরণ করায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী ও যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালকে সতর্কীকরণ চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন-
যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. আব্দুল মতিন, যুগ্ম সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, আইসিসিডিআরবি’র বায়োসেফটি অ্যান্ড বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরির প্রধান ড. আসাদুলগনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. কৌশিক সাহা, ইউজিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এম. এ. রশীদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব, যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, যশোর সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম আহসান হাবীব, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।
আরও পড়ুন: যশোরে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীসহ পাঁচ ভুয়া পরীক্ষার্থী আটক
উত্তরপত্র মূল্যায়নে অসঙ্গতি: যবিপ্রবির এক শিক্ষকের পদাবনতি
১০ মাস আগে