বৈশ্বিক বাণিজ্য
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যেই শুরু জি-৭ সম্মেলন
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ও চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য বিরোধের মধ্যেই জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার রকি পর্বতমালায় একত্রিত হয়েছেন গোষ্ঠীটির বিভিন্ন নেতারা।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই এই সম্মেলন শুর হয়।
এদিকে, এক মার্কিন কর্মকর্তাই বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেটোয় সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি। তবে নিঃসন্দেহে এ তথ্যটি ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা নির্দেশ করে।
চলমান এই সংঘাত নিয়ে সম্মেলনে তীব্র আলোচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তাছাড়া সম্মেলনের আগেও তিনি ট্রাম্প ও ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বকলে জানান।
এবারের সম্মেলনের আয়োজক ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকায় কোনো সম্মেলন নিয়ে কোনো যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবেনা। যদিও এই বিবৃতি জি-৭-এর দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।
এ ছাড়া,সম্মেলনের আগে গ্রিনল্যান্ড সফর করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। এ সময় ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন তিনি। ম্যাঁখো বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং তা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যও নয়।’
রবিবার সন্ধ্যায় আলবার্টায় পৌঁছান ট্রাম্প। আজ (সোমবার) কার্নির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক সেশন।
ব্যাপক অংশগ্রহণ, পুরনো উত্তেজনা
ভারত, ইউক্রেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারাও সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়েছেন। এবার বাণিজ্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী শুল্ক কৌশল আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, ওয়াশিংটন ছাড়ার আগে ট্রাম্প বলেন, সম্মেলনে নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসতে পারে।
তবে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কিছু নেতার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। এর আগে ইউক্রেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তার ওপর।
ট্রাম্প সম্পর্কে সাবেক কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্রেতিয়ান নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি ট্রাম্প মনোযোগ আকর্ষণে কোনো দৃশ্য তৈরি করতে চান, করতে দিন। শান্ত থাকুন ও নিজের কাজ চালিয়ে যান।’
গত মাসে যানবাহন, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক কমাতে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র, তবে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এদিকে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিত— ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া নার জানানোয় কানাডিয়ানদের কাছ থেকে সমালোচিত হয়েছেন স্টারমার।
এর জবাবে স্টারমার বলেন, ‘কানাডা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ এবং কমনওয়েলথের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ এ ছাড়া, সম্মেলনের আগে ওটোয়ায় কার্নির সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন স্টারমার।
অন্যদিকে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ওভাল অফিসের বিতর্কিত বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের আবার বৈঠকের কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর বিশ্ববাজার ও ওয়াল স্ট্রিটে পতন হয়েছে ও তেলের দাম বেড়েছে।
জার্মান কর্মকর্তারা জানান, সম্মেলনটি ‘জি-৬ বনাম ট্রাম্প’ হয়ে উঠবে এমন জল্পনা ভিত্তিহীন, কারণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যেও মতপার্থক্য বিদ্যমান।
তবে ক্রেতিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কী করবেন, তা তার মেজাজ বা সংবাদ শিরোনামে থাকার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে—এটাই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত দিক।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলার মধ্যেই যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রত্যাখান ইরানের
১৭৩ দিন আগে
বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রবণতা ও প্রভাব নিয়ে দোহা ফোরামে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন দোহা ফোরামে ' নিয়ারশোরিং অ্যান্ড ফ্রেন্ডশোরিং – চেঞ্জিং প্রায়োরিটিস ইন গ্লোবাল ট্রেড’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) কাতারের দোহায় শুরু হয় এ প্যানেল আলোচনা।
বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রভাব এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের রুটগুলো আবার নির্ধারণের পাশাপাশি লাভের বিষয়ে আলোচনা করেন মোমেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) মালিকের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
তিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় ও তার আগে টিকাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনের কথাও তুলে ধরেন।
এর আগে তিনি ফোরামের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
দু'দিনব্যাপী এই ফোরামে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের পাশাপাশি নীতি নির্ধারক, বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানির আমন্ত্রণে দোহা ফোরামে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
২১তম দোহা ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো- 'বিল্ডিং শেয়ার্ড ফিউচার'। প্রতি বছর অনুষ্ঠিত এই ফোরামে বৈশ্বিক নীতি নির্ধারক, সরকারি নেতা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি সংস্থাগুলো একত্রিত হয়ে ইস্যুভিত্তিক সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মানে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নেন মোমেন।
এছাড়া নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশ সৌদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: 'দোহা ফোরাম ২০২৩'-এ যোগ দিতে কাতারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৭২৬ দিন আগে