সুতিভোলা খাল
হাতিরঝিলের আদলে সুতিভোলা খাল সাজানো হবে: ডিএনসিসি মেয়র
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ৪০ বছর পর সুতিভোলা খাল দিয়ে নৌকায় চড়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাতায়াত করছি। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। তবে আমরা যেতে চাই বহুদূর। সুতিভোলা খাল হয়ে সাতারকুল দিয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু হবে সেভাবেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দখল ও দূষণমুক্ত করে হাতিরঝিলের আদলে সুতিভোলা খালকে নান্দনিকভাবে সাজানো হবে। নতুনবাজার একশো ফিট থেকে ঐতিহ্যবাহী সুতিভোলা খাল হয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে। এছাড়া আধুনিকভাবে খালের পাড় বাঁধানো হবে, সবুজায়ন করা হবে। পাড় দিয়ে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: রাস্তা বাড়াতে জায়গা ছাড়ার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৩) দুপুরে সুতিভোলা খাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র স্থানীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে সাতারকুল ব্রিজের নিচ থেকে নৌকায় চড়ে সরেজমিনে সুতিভোলা খাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সাতারকুল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এলাকাবাসীর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন তিনি
মেয়র বলেন, আমি আজ সুতিভোলা খালে নৌকায় চড়েছি। স্থানীয় লোকজন আমাকে জানাল দীর্ঘ ৪০ থেকে ৫০ বছর আগে এ ঐতিহ্যবাহী সুতিভোলা খাল দিয়ে নিয়মিত নৌকা চলত। কারওয়ান বাজার থেকে মালামাল নিয়ে মানুষ এ খাল দিয়ে নৌকায় করে যাতায়াত করত। আজ আবার দীর্ঘ সময় পরে আমি এ খালে নৌকায় চড়লাম।
তিনি বলেন, সাতারকুল ব্রিজের নিচ থেকে সুতিভোলা খালে কাউন্সিলরদের নিয়ে নৌকায় চড়ে দেখলাম মানুষ কীভাবে ময়লা ফেলে খালটিকে নোংরা করেছে। খালের পাড়ে ময়লায় ভরপুর। সিটি করপোরেশন থেকে ফ্লোটিং এক্সকেভেটর দিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দখলে থাকার কারণে আগে যেখানে নৌকা চড়ে যাওয়া যেতো আজ তা পুরোপুরি পারিনি। কারণ একটু আগাতেই দেখি দখল হয়ে গেছে। খাল পারে বাড়ি উঠে গেছে। একটা বাড়ি খালের পাশে উঠে গেল দেখার কেউ নেই! কে অনুমতি দিয়েছে? কীভাবে অনুমতি দিল সেটা যাচাই করতে সমস্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আবার খালের ভেতর বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে মাছ চাষ করছে। এগুলো কারা করছে? এভাবে খাল দখল করে বাড়ি যা খুশি তাই করা যাবে না। খালের সীমানা ছেড়ে মাছ চাষ করেন। জনগণের খাল ব্যবহার করে মাছ চাষ করা যাবে না। এগুলো সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিচ্ছি। নিজেরা না সরালে ম্যাজিস্ট্রেট কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। সিটি জরিপ নয়, সিএস ম্যাপ অনুযায়ী খাল উদ্ধার করা হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্জ্য সম্পদে পরিণত হবে: ডিএনসিসি মেয়র
তিনি আরও বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী সুতিভোলা খাল দিয়ে নৌকা নিয়ে সাতারকুল হয়ে আফতাবনগর দিয়ে হাতিরঝিল ঘুরে বালু নদীতে নৌকা চলাচল করা। নতুন একটি নৌপথ চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খাল পরিষ্কার থাকলে মশা জন্মাবে না। মানুষ স্বস্তি পাবে। এজন্য জনগণকে সতর্ক হতে হবে। আর কেউ যেন খাল দখল না করে। আমরা আজ কচুরিপানা পরিষ্কার করে দিলাম। নতুন করে যেন কেউ দখল না করে। সেজন্য ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা আছে। খাল রক্ষায় এলাকাবাসীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমরা খাল নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করছি। এডিবি (এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আমাদের খালের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। আজকে এডিবির একজন কনসালটেন্ট আমাদের সঙ্গে পরিদর্শনে এসেছেন। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে নৌপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সুতিভোলা খালে নৌপথ চালু হবে। এছাড়াও মিরপুর রূপনগর খাল হয়ে তুরাগ নদী পর্যন্ত নৌপথ চালু হবে। এক্সপার্টদের সঙ্গে আলাপ করছি কীভাবে সব নৌপথে সংযোগ সৃষ্টি করা যায়। অনেক বাজেট প্রয়োজন। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলাপ করছি। আশা করছি জনগণের সহযোগিতায় দ্রুতই কার্যক্রম চালু করতে পারবো।
নগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, জনগণের নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ববোধ জাগ্রত হতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাল পরিষ্কার রাখতে হবে, দখলমুক্ত রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: অনুমতি ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কেউ গাছ কাটতে পারবে না: ডিএনসিসি মেয়র
১ বছর আগে