১০ মাস বয়সী শিশু
কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে ১০ মাস বয়সী শিশু: প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট
হবিগঞ্জের কারাগারে কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে শিশুটির থাকা এবং শিশুটির অবস্থা সম্পর্কিত বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কারা মহাপরিদর্শক ও হবিগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৮ জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কারাগারের কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন নিশ্চিতে বিধি বা নীতিমালা বা প্রবিধান তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ আদেশ দেন।
গত ৩০ নভেম্বর ‘ফাঁসির সেলে কেমন আছে ১০ মাসের মাহিদা’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়।
এতে বলা হয়, হবিগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় মায়ের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় তার সঙ্গেই ফাঁসির সেলে আছে ১০ মাসের শিশু মাহিদা। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে শিশুটির জন্য পর্যাপ্ত খাবার, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিতে নির্দেশনা চেয়ে ১৪ ডিসেম্বর একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
আরও পড়ুন: সাবেক ভিপি নুরকে হাইকোর্টে তলব
রবিবার আদালতে রিটের পক্ষে তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, রুলের পাশাপাশি কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে শিশুটির থাকা এবং শিশুটির অবস্থা সম্পর্কিত বিষয়ে তদন্ত করে কারা মহাপরিদর্শক ও হবিগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৮ জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পরবর্তী আদেশের জন্য ২১ জানুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলায় পাঁচ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে ২৬ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক জাহিদুল হক।
রায় ঘোষণার দিন মা হুছনা আক্তারের সাথেই আদালতে এসেছিল ১০ মাসের শিশু মাহিদা। রায় ঘোষণার পর মায়ের সঙ্গে মাহিদার জায়গা হয় হবিগঞ্জ কারাগারের ফাঁসির সেলে। হবিগঞ্জ কারাগারের ওই সেলে সরাসরি পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।
আরও পড়ুন: বনানীর হোটেল শেরাটনের বিষয়ে হাইকোর্টের পরবর্তী শুনানি ১৮ জানুয়ারি
ছোট বালতিতে করে পানি পাওয়া যায়, তাও সবসময় নয়, ওই পানিতেই চলতে হয় তাদের। একজন সশ্রম কারাবন্দি যে হারে খাবার পান ফাঁসির সেলে বন্দিদের একই নিয়মে খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দেড় ঘণ্টার জন্য ১০ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়।
তালা খুলে দেওয়ার পর দেড় ঘণ্টার জন্য ওই কক্ষের শিশু মাহিদাসহ চার বাসিন্দার পরবর্তী গন্তব্য কক্ষের সামনের ৬ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের বারান্দা। জেল কোডের ৭৩৫ বিধিতে সেলের কথা বলা হলেও এর আয়তন কী তার উল্লেখ নেই।
তবে জানা গেছে, বিভিন্ন কারাগারে ৬ ফুট বাই ৬ ফুট থেকে ১০ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের সেল রয়েছে। হবিগঞ্জ কারাগারে নারী বন্দিদের জন্য দুটি সেল রয়েছে। হবিগঞ্জ কারাগারে ফাঁসির সেলের আয়তন প্রায় ১০ ফুট বাই ১০ ফুট।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী-শাশুড়ি কারাগারে
১০ মাস আগে