পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল
খুলনায় পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষেও গতি নেই কাজের
খুলনায় প্রথম ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের কাজের গতি নেই।
কার্যাদেশের দুই বছরে কাজ এগিয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ। এরই মধ্যে ফুরিয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। ফলে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এই ভবনে শুধু ক্যান্সার রোগীদের সেবাই নয়, সেবা পাবে কিডনী ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরাও। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে দাবি গণপূর্ত বিভাগের।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ক্যান্সার, কিডনী ও হৃদরোগের পৃথক তিনটি ইউনিট হবে।
হাসপাতালের বহির্বিভাগের পেছনে ২৩ হাজার ২৫০ দশমিক ৪৬ বর্গমিটার জমিতে দুটি বেজমেন্ট ফ্লোর ও ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হবে। এই ভবন নির্মাণের জন্য এমবিপিএল ও এসএনবিপিএল (জেভি) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গণপূর্ত বিভাগের চুক্তি হয়েছিল ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর। সেই অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৩১ এপ্রিলের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। আর প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এগিয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৩০ টাকায় প্রতি প্যাকেট ‘কুকুরের মাংসের বিরিয়ানি’ বিক্রি, গ্রেপ্তার ৪
গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, খুলনায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। প্রকল্পের ডিপিপি মূল্য ১৭৫ কোটি ৭২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮২ কোটি ৩৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে বেজমেন্টসহ ১৫ তলা ভবন নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। যার ২১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে গণপূর্তের দাবি।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় দুটি বেজমেন্ট ও ১৫ তলা ভবনসহ ১৭ তলা পাইল ফাউন্ডেশন হবে।
বেজমেন্ট-২ থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত হবে ক্যান্সার ইউনিট। এতে থাকবে লিনিয়র এক্সলেটর, সিটি সিমুলেটর, ব্রাকিথেরাপি, কেমোথেরাপি।
৮ম তলা থেকে ১১ তলা পর্যন্ত হবে কিডনী ইউনিট। এখানে থাকবে কিডনী ডায়ালাসিস ইউনিট, কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট ওটি, পোস্ট ট্রান্সপ্লান্ট, আইসিইউ।
আর ১২ তলা থেকে ১৫ তলা পর্যন্ত হবে হৃদরোগ ইউনিট। এই ইউনিটে থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ, কার্ডিয়াক ওটি, পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যাথ ল্যাব।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় থাকবে র্যাম্প, চলন্ত সিঁড়ি এবং কোভিড-১৯ এর লিফট ইত্যাদি। থাকবে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এস.টি.পি), ৩০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, ১০০০ কেভিএ জেনারেটর, লিফট, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএন বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক শেখ দাউদ হায়দার বলেন, প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হলেও জমিতে স্থাপনাসহ নানা জটিলতার কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। বর্তমানে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে।
ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার শেখ গোলাম কুদ্দুস বলেন, দুটি বেজমেন্টের কাজ শেষ হয়েছে। প্রতি মাসে ভবনের একটি করে ছাদ ঢালাই দেওয়া সম্ভব। একদিকে ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলবে, অন্যদিকে ফিনিশিংয়ের কাজ চলবে। দ্রুত ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, প্রকল্প গ্রহণের অনেক পরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এটি সময় সাপেক্ষ। এখন পর্যন্ত ২১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৭৯৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ: পুলিশ
১০ মাস আগে