বিদিশা এরশাদ
বিদিশা এরশাদসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মালামাল চুরির অভিযোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকসহ (বিদিশা এরশাদ) তিনজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়ার আদালতে সোমবার (২৯ জুলাই) মোরশেদ মঞ্জুর রুবেল নামের এক ব্যবসায়ী মামলার আবেদনটি করেন।
বিদিশা এরশাদ ছাড়া বাকি দুই বিবাদী হলেন- গাইবান্ধার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও শাহজাদা খন্দকার।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় তিন নাশকতার মামলায় ৬৭ জন গ্রেপ্তার
ব্যবসায়ী মোরশেদ মঞ্জুর নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন শফি টাওয়ারের বাসিন্দা। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার রুবেল সুপার মার্কেট ও ঢাকার ইসলামপুরের মেসার্স লতিফা বাহাদুর ফেব্রিক্স নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাশেম বলেন, ‘আবেদনের পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশের জন্য আগামী ৫ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন।’
মামলার আবেদনে বলা হয়, বিদিশার স্বামী তথা এরিক এরশাদের বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক বিভিন্ন জটিলতায় বিদিশা ও এরিক আর্থিক অসুবিধায় পড়েন। মানবিক কারণে বাদী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রচুর আর্থিক সাহায্য করেন। ভাড়ায় লাগিয়ে এ অর্থ পরিশোধের জন্য বিদিশার পরামর্শে এরিক তাদের ট্রাস্টের পাঁচটি নিশান, জিপ, মাইক্রোবাস আমমোক্তারমূলে বাদীর কাছে হস্তান্তর করেন। বিদিশাও গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ৩৯ লাখ টাকায় তার মালিকানাধীন একটি সিডান গাড়ি বাদীর কাছে বিক্রি করে দখল হস্তান্তর করেন এবং মালিকানা হস্তান্তরের জন্য হলফনামাও সম্পাদন করে দেন। এছাড়া বিভিন্ন তারিখে বিদিশা ও তার ছেলে এরিকের কঠিন সময়ে বাদী নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ধারও দেন। বিপরীতে বিদিশার পরামর্শে এরিক বাদীকে ৯০ লাখ টাকার দুইটি চেক প্রদান করেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, বিদিশা অপর দুই বিবাদীর সহযোগীতায় গত ২১ এপ্রিল বাদীর খুলশীর শফি টাওয়ারের বাসা থেকে বৃদ্ধ বাবা মাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ২২টি হাতঘড়ি, মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এন আর বি গ্লোবাল ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অলিখিত ও স্বাক্ষরবিহীন ৬টি চেক বই, দুটি স্যামসাং এনড্রয়েড মোবাইল ও একটি অপ্পো মোবাইল, বিদিশার কাছ থেকে কেনা গাড়ির ডকুমেন্টস ফাইল, এরিক থেকে কেনা গাড়ির ডকুমেন্ট ও স্ট্যাম্প, বিদিশার সঙ্গে ৩টি ব্যবসায়িক চুক্তি ও ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত বিদিশার কাছ থেকে নেওয়া একটি রেস্টুরেন্টের দোকান ভাড়ার দলিল, মোটরসাইকেলের ক্রয় রশিদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও দলিলাদি, ব্যাগে রক্ষিত নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
এসময় বাদীর পিতা-মাতাকে বলা হয়, তোমাদের পোলা আমাদের ম্যাডামের সঙ্গে টক্কর দিতে আসছে। বাঁচতে চাইলে ম্যাডামের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে হবে।
বাদীর বাসা থেকে এসিসহ আরও বেশ কিছু জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও মামলার আবেদনে বলা হয়।
বিবাদীরা একটি সংঘবদ্ধ দল, যারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে খায় উল্লেখ করে আবেদনে আরও বলা হয়, প্রাপ্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা শোধের জন্য এরিককে আইনি নোটিশ দিলে বিবাদী বিদিশা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদিশা এরশাদ গণমাধ্যমকে জানান, মোরশেদ মঞ্জুর তাদের গাড়িচালক ছিলেন। তাদের গাড়ি চুরির অভিযোগে মোরশেদ মঞ্জুর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলা থেকে বাঁচতে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিটিভি ভবনে নাশকতা মামলায় বিএনপির শিমুল বিশ্বাসসহ ৭ জন রিমান্ডে
সাম্প্রতিক সহিংসতায় আরও ১৪ মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ২৪৩: ডিএমপি
৩ মাস আগে
কবি আবু বকর সিদ্দিক আর নেই
বিজয়ের মাসের শেষ প্রান্তে এসে নীরবে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন বিদিশা এরশাদের বাবা কবি আবু বকর সিদ্দিক।
বৃহস্পতিবার (২৮ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৬টার দিকে খুলনা মহানগরীর ৫নং মুন্সিপাড়ায় ছোট বোনের বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
কবির ছোট বোনের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রয় একযুগ যাবৎ মামা আবু বকর সিদ্দিক আমাদের বাসায় থাকতেন। আজ বৃহস্পতিবার বাদ যোহর খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে কবির জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
মৃত্যুকালে কবি ৫ মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সিটি মেয়র রিফাত আর নেই
বরেণ্য শিক্ষক ও কবি আবু বকর সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
আবু বকর সিদ্দিক একাধারে ছিলেন কবি, কথাসাহিত্যিক, ছড়াকার, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও সমালোচক। তিনি ১৯৩৪ সালে ১৯ আগস্ট রবিবার বাগেরহাট জেলার গোটাপাড়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃনিবাস একই জেলার বৈটপুর গ্রামে। বাবা মতিয়র রহমান পাটোয়ারী ছিলেন একজন সরকারি চাকুরে।
বাবার চাকরিসূত্রে ১৯৩৫ সাল থেকে তিনি হুগলি শহরে এবং ১৯৪৩ সাল থেকে বর্ধমানে বসবাস করেন। বাল্যকাল থেকেই লেখাপড়ার প্রতি তার ছিল প্রবল ঝোঁক। ১৯৪৬ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে থাকাকালীন তার প্রথম কবিতা আবদুস সাত্তার সম্পাদিত বর্ধমানের কথা পত্রিকায় ছাপা হয়।
তিনি বাগেরহাট মাধ্যমিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক, ১৯৫৪ সালে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই কলেজ থেকে ১৯৫৬ সালে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৫৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাগত জীবনে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি পর্যায়ক্রমে চাখার ফজলুল হক কলেজ, দৌলতপুর বিএল কলেজ, কুষ্টিয়া কলেজ, বাগেরহাট পিসি কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রবীণ সাংবাদিক এম ওয়াহিদুল্লাহ আর নেই
১৯৯৪ সালের ৭ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর কুইন্স ইউনিভার্সিটি ও ঢাকার নটর ডেম কলেজে অধ্যাপনা করেন।
তিনি কবিতা লিখতে বেশি পছন্দ করতেন। তার প্রকাশিত ধবল দুধের স্বরগ্রাম (১৯৬৯), বিনিদ্র কালের ভেলা (১৯৭৬), হে লোকসভ্যতা (১৯৮৪), মানুষ তোমার বিক্ষত দিনসহ (১৯৮৬) আঠারোটি কাব্যগ্রন্থ আছে। আছে হট্টমালা (২০০১) নামে একটি ছড়াগ্রন্থও।
তার লেখা গল্পগ্রন্থের সংখ্যা ১০টি। তিনি জলরাক্ষস (১৯৮৫), খরাদাহ, একাত্তরের হৃদয়ভস্ম, বারুদপোড়া প্রহর (১৯৯৬) নামে উপন্যাসও লিখেছেন।
সাহিত্যে অবদানের জন্য কবি আবুবকর সিদ্দিক ভূষিত হয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, বঙ্গভাষা সংস্কৃতি প্রচার সমিতি পুরস্কার (কলকাতা), খুলনা সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, বাগেরহাট ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ঋষিজ পদকসহ দেশি-বিদেশি বহু পুরস্কার ও সম্মাননায়।
আরও পড়ুন: সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান আর নেই
১০ মাস আগে