আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী
নির্বাচন করতে পারছেন না শাম্মী আহমেদ ও সাদিক আবদুল্লাহ
বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে দায়ের করা আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে শাম্মী আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
এদিকে, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ'র আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ প্রার্থিতা বাতিল আদেশ বাহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার জন্য শাম্মী আহমেদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার বিচারপতির আদালত শুনানির এ দিন ধার্য করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটির শুনানি হয়।
আদালতে আজ শাম্মী আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, শাহ মঞ্জুরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজুসহ এক ডজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।
১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয় বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। পরে ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শাম্মী আহমেদ।
১৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
পরে ২২ ডিসেম্বর সকালে প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবারও আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ।
ওই দিন শাম্মীর আইনজীবীরা চেম্বার আদালতে বলেন, ‘শাম্মী আহমেদের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন গ্রহণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। সবদিক বিবেচনা করে শাম্মী আহমেদকে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দিন।’
তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, ‘আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। এসব বিষয়ে তো আমি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। আগামী ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সব বিচারপতি মিলে শুনব।’
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রার্থীতা বৈধা ঘোষণা করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক।
১৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল শুনানি শেষে বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রার্থিতা বাতিল করে ইসি। পরে এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সাদিক আব্দুল্লাহ।
তার করা রিটের শুনানি নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। ফলে সাদিক আবদুল্লাহর মনোয়নপত্র বৈধতা পায়।
পরদিন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন জাহিদ ফারুক। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতির আদালত।
এর ফলে সাদিক আব্দুল্লাহর নির্বাচন আটকে যায়। পরে সাদিক আব্দুল্লাহ চেম্বার বিচারপতির দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। যে আবেদনের ওপর আজ শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ খারিজ করে দেন।
১১ মাস আগে