প্রক্রিয়া
এলএনজি টার্মিনালের দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পেট্রোবাংলা
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাতিল করা বেসরকারি খাতের দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য নতুন দরপত্র প্রক্রিয়া কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়- তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশন পেট্রোবাংলা।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্প দুটির জন্য দরপত্র আহ্বান করার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০০৮ অনুসরণ করে হবে, নাকি বাস্তবায়নের জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অফিসে পরামর্শ করা হবে সে সম্পর্কে তারা স্পষ্ট নন।
বাতিল হওয়া প্রকল্প দুটির মধ্যে একটি টার্মিনালের জন্য পেট্রোবাংলার সঙ্গে সামিট গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছিল। আর আরেকটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছিল।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পর পেট্রোবাংলাকে প্রকল্প দুটি বাতিলের নির্দেশ দেন।
২০১০ সালের দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় কোনো দরপত্র ছাড়াই বেসরকারি কোম্পানিকে এ চুক্তি দেওয়া হয়।
বাতিল হওয়া এই প্রকল্পগুলো মহেশখালীতে অবস্থিত। ২০১০ সালের একই বিশেষ বিধান আইনে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত দুটি বিদ্যমান ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ), যা সাধারণত এলএনজি টার্মিনাল নামে পরিচিত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট ২০১৮ সালে মহেশখালীতে দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ করে।
স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ ২০১৯ সালে মহেশখালীতে ৫০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করে।
এই দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে পেট্রোবাংলা বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে প্রায় ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘটফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ করছে।
প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে আমদানি করা ১ হাজার ১০০ এমএমসিএফডি এলএনজিসহ বর্তমানে বাংলাদেশের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার ১০০ এমএমসিএফডি।
ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি কোম্পানি, এক্সিলারেট এনার্জি এবং সামিট গ্রুপের মাধ্যমে একই ক্ষমতা সম্পন্ন আরও দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করে তাদেরকে চুক্তি দিয়েছিল।
এসব চুক্তির আওতায় এক্সিলারেট ও সামিট গ্রুপ এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন সেবা দিতে বার্ষিক শত শত কোটি ডলারের চুক্তি করেছিল।
তবে, আরও স্বচ্ছ এবং প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের পুনরায় চুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে আগের সরকারের পতনের পরে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন প্রকল্পগুলো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে দুটি এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য নতুন করে দরপত্র প্রক্রিয়া চালুর ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয় পেট্রোবাংলা।
বিষয়টি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০০৮ অনুসরণ করবে, নাকি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পি) ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করবে- তা তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ইউএনবিকে বলেন, ‘ আইনগুলোর কোনটি অনুসরণ করা হবে, তা নির্ধারণ করতে আমরা এখনও উভয় আইনি কাঠামো মূল্যায়ন করছি।’
তিনি বলেন, ‘একজন বিশিষ্ট প্রকিউরমেন্ট এক্সপার্টও এ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছেন।’
তিনি উল্লেখ করেন, দরপত্র প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে গেলে পেট্রোবাংলা এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য একটি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করবে।
চেয়ারম্যান স্বীকার করেন, বেসরকারি খাতে এর আগে কোনো প্রকল্প উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়িত না হওয়ায় পেট্রোবাংলাকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
১ সপ্তাহ আগে
‘শ্রমিক সংগঠনের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে’
শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার আরও কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ অনুরোধ জানান।
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতি বা স্বাক্ষর নেওয়ার হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে প্রক্রিয়া সহজ করা হবে বলে তাদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৈঠক শেষে আনিসুল হক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: স্বতন্ত্ররা আলাদা থাকলে বিরোধী দলে প্রাধান্য পাবে জাতীয় পার্টি: আইনমন্ত্রী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রথম সচিব ও লেবার অ্যাটাসের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক অধিকার নিয়ে তারা তাদের বক্তব্য বলেছেন। এই আলোচনা কিন্তু গত বছর থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের হচ্ছে। সময়ে সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে এবং আরও কোনো অগ্রগতি সম্ভব কি না, সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকি। সেই আলাপ-আলোচনার একটা পদক্ষেপ হিসেবেই আজকে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে যে শ্রম আইনটা গিয়েছিল, সেটি একটি বিশেষ কারণে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণটা আগেও আপনাদের ব্যাখ্যা করেছি। সেই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছে।’
মন্ত্রী বলেন, থ্রেস হোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার) সম্বন্ধে এবং অন্যান্য ইস্যু সম্বন্ধে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, এই ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে কাজ করতে চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন, এটা তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।
বাংলাদেশ সরকার এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে উল্লেখ করে মন্ত্রী তাদের জানান, এবার প্রধানমন্ত্রী শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়টা নিজের হাতে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক কারণে সংসদ সদস্যের সংখ্যা নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
আনিসুল হক বলেন, ‘আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আইএলওর গভর্নিং বডির মিটিং মার্চ মাসে। দুই-একটা বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন, সেই মিটিং এরপরে তাদের আমরা জানাব। আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি বা এমন কিছু তোলেনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
তারা কি শ্রমিকদের স্বাক্ষর ১০ শতাংশ চাইছে- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের ইমপ্লয়ার্স ও ওয়ার্কার্স ফেডারেশনগুলো সব সময় বলে আসছে আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশ শ্রমিকের অধিকারের ক্লাইমেট অনুযায়ী এটা কমানো হবে। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। সেজন্য আমরা আস্তে আস্তে কমানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেব।’
আরও পড়ুন: দ্রুত ন্যায়বিচার করে জনদুর্ভোগ কমানোর আহ্বান আইনমন্ত্রীর
৯ মাস আগে