কনকনে শীত
কনকনে শীতেও তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যেই চলছে লোডশেডিং
অত্যন্ত ঠান্ডা সত্ত্বেও তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় দেশে লোডশেডিং হচ্ছে।
দেশের সঞ্চালন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্যে দেখা যায়, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ৯১১৩ মেগাওয়াটের নিচে নেমে আসার পর দেশে প্রায় ৩২২ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমের তুলনায় তীব্র শীতকালে চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। গ্রীষ্মে চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট।
আরও পড়ুন: লোডশেডিং: বিপিডিবি চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি
পিজিসিবির তথ্যে আরও দেখা যায়, এ সময় দেশে চাহিদার পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৪৫০ মেগাওয়াট এবং গ্যাসভিত্তিক উৎপাদন ১১ হাজার ৭০৮ মেগাওয়াটের বিপরীতে ৪ হাজার ৫৩ মেগাওয়াটে নেমে আসে, যা দেশের মোট গ্রিড সংযোগের ২৫ হাজার ৯৫১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৪৫ দশমিক ১২ শতাংশ।
এতে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস সংকটের কারণে গত ২১ জানুয়ারি বেলা ১১টায় দেশে সবচেয়ে বেশি ৮০৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার কাছে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গ্যাসের অভাবে প্রায় ৩০টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে, যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনিক মেঘনাঘাট ৫৮৪ মেগাওয়াট, ডরিন নরসিংদী ২২ মেগাওয়াট এসআইপিপি, ডরিন টাঙ্গাইল ২২ মেগাওয়াট এসআইপিপি, সামিট মেঘন। ৩৩৫ মেগাওয়াট, এইচপিএস (১০০ মেগাওয়াট), সিদ্ধিরগঞ্জ (২x১২০ মেগাওয়াট), টঙ্গী (৮০ মেগাওয়াট), আগ্রেকো (জিএসএল)-১৪৫ মেগাওয়াট রেন্ট, এইচপিএল (৩৬০ মেগাওয়াট), চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি, এপিএস ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি, আশুগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট মডুলার, এপিএস ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি ই, সিকলবাহা ৪০ মেগাওয়াট, রাউজান (২x২১০ মেগাওয়াট), এস.বাজার ১০০ মেগাওয়াট, এস.বাজার ৩৩০ মেগাওয়াট, কে.গাঁও ৩ বছরের রেন্ট ৫০ মেগাওয়াট, এস.বাজার ৩ বছরের রেন্ট ৫০ মেগাওয়াট, কে গাঁও ১৪২ মেগাওয়াট, হবিগঞ্জ ১১ মেগাওয়াট এসআইপিপি, বিবিয়ানা-৩ ৪০০ মেগাওয়াট, এফ.গঞ্জ ১৫ বছরের ভাড়া ৫১ মেগাওয়াট, এফ.গঞ্জ ৩ বছরের ভাড়া ৫০ মেগাওয়াট, বগুড়া ৩ বছরের ভাড়া (২০ মেগাওয়াট), বগুড়া ১৫ বছরের ভাড়া (২০ মেগাওয়াট), বাঘাবাড়ী (১০০+৭১ মেগাওয়াট, এনডব্লিউপিজিসিএল ইউনিট - ১,২,৩, আগ্রেকো ৯৫ মেগাওয়াট এবং ভেড়ামারা ৩৬০ মেগাওয়াট।
এসব কেন্দ্রের সম্মিলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬০১২ মেগাওয়াট, যা থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে অনাবৃষ্টি ও ব্যাপক লোডশেডিংয়ে আমনের খেত ফেটে চৌচির
তথ্য থেকে আরও জানা যায়, পেট্রোবাংলা তার মোট ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে দৈনিক ২৫৮২.৬ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস উৎপাদন করছে, যার ঘাটতি দেড় হাজার এমএমসিএফডির বেশি।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা এই সংকটকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
একজন কর্মকর্তা বলেন, 'দুটি এলএনজি টার্মিনালের সম্মিলিত সক্ষমতা মোট ১০০০ এমএমসিএফডি এবং তারা ৫২৯টি এমএমসিএফডি সরবরাহ করছে যা তাদের সক্ষমতার প্রায় অর্ধেক।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে চলমান ডলার সংকট প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে ঢাকা ও অন্যত্র আবাসিক ক্রেতারা তাদের দৈনন্দিন রান্নায় মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ ছাড়া শিল্প কারখানাগুলো চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের বেলায় তারা গ্যাস পান না, তাই রান্না করতে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
পেট্রোবাংলা ও তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার সংকট পুরোপুরি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা সরবরাহে উল্লেখযোগ্য উন্নতির কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।
এদিকে ঢাকা শহরের পরিস্থিতির শিগগিরই উন্নতি হবে বলে আশাবাদী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, তার মন্ত্রণালয় এলপিজি আমদানি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে কারণ ৮০ শতাংশ গৃহস্থালি গ্রাহক এই তরলীকৃত গ্যাস ব্যবহার করেন এবং মাত্র ২০ শতাংশ পাইপযুক্ত গ্যাস ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুন: লোডশেডিং: ১৩ ও ১৬ জুন মহানগরীগুলোতে রোডমার্চ করবে বিএনপি
১০ মাস আগে
হাড় কাঁপানো শীতে সীমাহীন ভোগান্তিতে নওগাঁবাসী
কুয়াশার দাপট কম থাকলেও সোমবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ ও কনকনে শীতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নওগাঁর বাসিন্দাদের।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এটাই এই মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে রবিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই কুয়াশা কম থাকলেও আকাশ মেঘলা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে রাজশাহীর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন থেকে দুপুরের পর একটু সূর্যের দেখা পাওয়া গেলেও উত্তাপ ছড়াতে না পারায় বিকাল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হতে শুরু করে। আর দিনভর থাকছে হিমেল বাতাস। সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে।
এদিকে হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। জীবিকার তাগিদে সকাল হলেই এসব মানুষ মোটা গরম কাপড় পরে কেউ সাইকেল নিয়ে আবার কেউ হেঁটে কর্মস্থলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন।
শহরের ডিগ্রি কলেজ মোড় এলাকার রিকশাচালক সোলায়মান বলেন, যে শীত পড়েছে এতে করে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। কিন্তু কিছুই করার নেই। রিকশা না চালালে সংসার চলবে না।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে বগুড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকার আরেক রিকশাচালক জব্বার বলেন, সোমবার সকাল থেকে কুয়াশা কম। তবে আকাশ পরিষ্কার নয় আবার বাতাসও অনেক। এই কারণে শীত বেশি লাগে। এত শীত হলে আমাদের মতো গরিব মানুষের সংসার চালানো সমস্যা হয়ে যাবে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক জানান, সোমবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই শীত বেশি পড়ছে। এ রকম তাপমাত্রা আরও দুই থেকে একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে তীব্র শীতে প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
১১ মাস আগে