মোটরবাইক
রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
নিত্য নতুন ফিচার এবং প্রযুক্তির সংযোজনে দেশের মোটরবাইকগুলো আরও উন্নত হচ্ছে; সেই সঙ্গে রাইডারদের অভিজ্ঞতাতেও আসছে বৈচিত্র্য। যন্ত্রকৌশলে এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন বিকশিত করছে দেশের সমগ্র অটোমোবাইল শিল্পকে। এই পরিবর্তনের প্রথম সারির অগ্রপথিক হচ্ছে নবাগত রয়্যাল এনফিল্ড। এর ৩৫০ সিসির চারটি ভিন্ন মডেলে সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার। ক্লাসিক, বুলেট, হান্টার ও মিটিওর শিরোনামের মোটরযানগুলোকে দেশের রাস্তায় দেখার জন্য রীতিমতো মুখিয়ে আছেন বাইকপ্রেমীরা। চলুন, এই আইকনিক মডেলগুলোর প্রধান ফিচারগুলো সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০
আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে এনফিল্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার কারণেই মূলত এর জন্য ক্লাসিক নামটি বাছাই করা হয়েছে।
এর বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে ক্র্যাঙ্ক আর্মের ৬ হাজার ১০০ আরপিএম (রিভোলিউশ্যন পার মিনিট) ঘূর্ণন ক্ষমতা।
অপরদিকে,গতি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ২০ দশমিক ২ বিএইচপির (ব্রেক হর্সপাওয়ার)। এটি ৪ হাজার আরপিএমের প্রতি ফুট দূরত্বে সরবরাহ করবে ১৯ পাউন্ড টর্ক।
যানের বডিকে ঠান্ডা রাখার জন্য রয়েছে শীতলীকরণ প্রক্রিয়া সমৃদ্ধ একক সিলিন্ডার।
সজ্জাগত দিক থেকে সর্বাঙ্গে থাকা স্টিলের ফ্রেমটি কেবল নান্দনিকই নয়; যথেষ্ট উপকারীও বটে। কারণ এতে চালক ও যাত্রী দুজনের উচ্চতা ও বসার অবস্থানের সঙ্গে হ্যান্ডেলবার ও হ্যান্ড গ্রিপগুলোকে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখে।
সামনের সাস্পেনশনে রয়েছে ৪১ মিলিমিটার টেলিস্কোপিক ফর্ক। আর পেছন থেকে একে সাপোর্ট দেয় টুইন সাইড সুইং আর্ম। সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই আছে হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক, যেটি এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম)-এর কাজ করবে।
যাবতীয় যান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে শক্তিশালী ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিন।
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০: বাংলাদেশের প্রথম ৩৫০ সিসি মোটরবাইক
রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০
ইঞ্জিন ও ক্র্যাঙ্ক শিফটিং-এ বুলেট ক্লাসিকের মতোই। তবে পার্থক্য হচ্ছে গতি সামলানোর জন্য ক্র্যাঙ্কটি ৪ হাজার আরপিএম-এর প্রতি ফিট দূরত্বে ১৯ দশমিক ৯ পাউন্ড টর্ক পাবে।
১৩ লিটারের জ্বালানি ট্যাঙ্ক পুরোটা একবার ভরে নিলেই মাইলেজ পাওয়া যাবে ৩০০-এরও বেশি।
বুলেটের নকশার বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনফিল্ডের ঐতিহাসিক ডিজাইন শৈলী। পুরো ভিন দেশি এই নকশাই মডেলের মূল আকর্ষণ। অবশ্য ইউএসবি চার্জিং পোর্টটিও আলাদাভাবে দৃষ্টি কাড়ে।
সিট সেট-আপ ডুয়্যাল এবং মোটা-প্যাডের হওয়ায় তা ৮০৫ মিলিমিটার উচ্চতায় চালক ও যাত্রীর বসার জায়গাকে আরামদায়ক করে তোলে।
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০
চার মডেলের মধ্যে প্রযুক্তিগত দিক থেকে সব থেকে এগিয়ে হান্টার। অন্য দুটোর মধ্যে এখানেও একক সিলিন্ডার আর ইঞ্জিন ৩৪৯ সিসির। গতির ক্ষেত্রে ৬ হাজার ১০০ আরপিএমের সঙ্গে ব্রেকিং ক্ষমতা ১৪ দশমিক ৮৭ কিলোওয়াট বা ১৯.৯ এইচপি (১ কিলোওয়াট = ১ দশমিক ৩ হর্সপাওয়ার)। হর্সপাওয়ারের হিসেবে এটি ক্লাসিক ও বুলেট থেকে কিছুটা কম। অবশ্য ৪ হাজার আরপিএমে সরবরাহ করা টর্ক ২৭ এনএম (নিউটন-মিটার)। প্রতি ফুট দূরত্বে পাউন্ডের হিসেবে এটি প্রায় ১৯.৯ পাউন্ড (১ পাউন্ড টর্ক = ১ দশমিক ৪ এনএম) অর্থাৎ বুলেটের টর্কের সমান।
অন্যগুলোর মতো এর বডিতেও স্টিলের ফ্রেম এবং সামনের সাস্পেনশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পেছনেরটিতে টুইন সাইড সুইং আর্ম। একই সঙ্গে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে সামনে ও পেছনের এবিস সমৃদ্ধ হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক।
হান্টারের ওজন সর্বোচ্চ ১৮১ কেজি এবং বসার জায়গাটির উচ্চতা ৭৯০ মিলিমিটার। অ্যালুমিনিয়ামের চাকাগুলোতে লাগানো টায়ারগুলো টিউবলেস। এ সবকিছুর মধ্যে ডিজিটাল পাওয়ার আউটলেটটি আলাদাভাবে নজর কাড়ে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০
ওজন, সিলিন্ডার ও ক্র্যাঙ্ক ঘূর্ণনের গতির ক্ষেত্রে মিটিওর অনুসরণ করেছে ক্লাসিক মডেলকে। আর গতি নিয়ন্ত্রণের টর্কের সাদৃশ্য রয়েছে হান্টারের সঙ্গে।
তবে যে বিষয়টি অন্যান্যগুলো থেকে একে আলাদা করেছে, তা হচ্ছে এর আরামদায়ক রাইডিং অভিজ্ঞতা। ইঞ্জিন ও গিয়ারের বোঝাপোড়াটা এতোটাই সঙ্গতিপূর্ণ যে,গতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেলেও চালক কম্পন অনুভব করবে না।
গ্রাউন্ড থেকে বসার অবস্থানের ডুয়্যাল সিট পর্যন্ত উচ্চতা ৭৬৪ দশমিক ৫ মিলিমিটার। বাকি বডি থেকে শুরু করে সাস্পেনশন ও হুইল আর্মার এবং ডিজিটাল যন্ত্রাংশ সব অন্য ৩ মডেলের মতোই।
মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
শেষাংশ
বিভিন্ন ধরনের বাইক রাইডারদের পছন্দগুলোর এক অভাবনীয় সন্নিবেশ ঘটেছে রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির চারটি মডেলে। তন্মধ্যে ‘ক্লাসিক’ শক্তিশালী যান্ত্রিক সজ্জার সঙ্গে দিচ্ছে পুরোনো ধাঁচের বৈশিষ্ট্য ফিরে পাওয়ার নস্টালজিয়া। ‘বুলেট’ তার অভূতপূর্ব ডিজাইন দিয়ে ইতোমধ্যেই দৃষ্টি কেড়েছে স্টাইল সচেতন ব্যক্তিদের। ঢাকার মতো জনাকীর্ণ শহরের জন্য একচেটিয়া অবস্থানে রয়েছে হাল্কা ওজনের প্রযুক্তি-বান্ধব ‘হান্টার’। ‘মিটিওর’-এর আরামদায়ক ও নিরাপদ দীর্ঘ ভ্রমণের ফিচারগুলো অনায়াসেই যেকোনো বাইকপ্রেমীর মন জয় করে নিতে সক্ষম।
উপরন্তু, ক্লাসিক, বুলেট, হান্টার বা মিটিওর; পছন্দ যেটাই হোক না কেন, তা দেশের রাস্তায় বাইক রাইডিং অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে।
সেকেন্ডহ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
১ মাস আগে
সেকেন্ডহ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় আকারে বেশ ছোট হওয়ায় যানজটের শহরে মোটরসাইকেলের জুড়ি মেলা ভার। ইঞ্জিনচালিত এই দ্বিচক্রযানে নেই প্যাডেল ঘুরানোর ক্লান্তি, সেইসঙ্গে দীর্ঘ যাত্রায় থাকে রোমাঞ্চের আনন্দ। এছাড়া নিত্যনৈমিত্তিক প্রয়োজনে বেরনোর সময় মুক্তি দেয় গাড়ি খোঁজার ঝামেলা থেকে।
এতসব সুবিধা একটু কম খরচে পেতে অনেকেই ঝুঁকে পড়েন পুরাতন মোটরবাইক কেনার দিকে। ব্র্যান্ডের নতুন মোটরবাইকে হাত দেওয়ার আগে এই যানগুলো ড্রাইভিংয়ে পরিপক্ক হওয়ার উপযুক্ত উপায়। তাই চলুন, সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার সময় কোন বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক।
পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় যে ১০টি বিষয় যাচাই করা উচিৎ
বর্তমান বাজার মূল্য
বাজেট অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত বাইকটি পেতে প্রথমেই বাজারে তার বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে খোঁজ-খবর করে নেওয়া জরুরি। এর ফলে কত দিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং কোনো কিছু মেরামতো বা পরিবর্তন করা হয়েছে কি না- তা বিবেচনা করে দামদর করতে সুবিধা হবে। এজন্যে সহায়ক তথ্যের জন্য বাইক সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটগুলো সহায়ক হতে পারে।
সরেজমিনে দেখার জন্য সরাসরি দোকানে চলে যাওয়াটা উত্তম। মূল্যের পরিধির ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে তবেই বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করা উচিৎ।
আরও পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০: বাংলাদেশের প্রথম ৩৫০ সিসি মোটরবাইক
এক নজরে বাহ্যিক দর্শন
বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করার সময় প্রথম দর্শনে বাইকের যতটুকু দৃষ্টিগোচর হচ্ছে তার সবটুকুই সুক্ষ্মভাবে খুঁটিয়ে দেখতে হবে। খেয়াল করতে হবে ফ্রেমে কোনো দাগ বা মরিচা পড়েছে কি না, সামনের ও পেছনের লাইটগুলো সঠিকভাবে জ্বলছে কি না এবং বসার সিট কভারে কোনো ছেঁড়া আছে কি না। বাইক স্টার্ট দেওয়ার চাবি কী হোলের ভেতর নির্বিঘ্নে ঢুকছে কি না এবং তা কোনো জ্যাম ছাড়াই ঘুরছে কি না- তা খতিয়ে দেখা জরুরি। চাকার কভার, হর্নের শব্দ এমনকি আয়নার মতো ছোট ছোট ব্যাপারও এ সময় এড়ানো যাবে না।
ইঞ্জিন, ট্রান্সমিশন ও ব্যাটারি
আসল যাচাইকরণ শুরু হবে ইঞ্জিন থেকে, যা বাইক স্টার্ট দেওয়ার সময়ই টের পাওয়া যাবে। ঠকঠক বা অস্বাভাবিক শব্দ হলে বোঝা যাবে বিয়ারিং বা ভালভে সমস্যা আছে। এর মাধ্যমে গিয়ারগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না তথা ট্রান্সমিশনটাও যাচাই হয়ে যাবে।
ইঞ্জিন চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই ইগ্নিশন লাইট জ্বলে উঠে কয়েক সেকেন্ড পর বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু লাইট জ্বলে থাকলে বুঝতে হবে ইঞ্জিনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় সমস্যা আছে। কোথাও কোনো রকম সংযোগ বিচ্ছিন্নতা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না। হেডলাইটের ক্ষীণ বা নিভু নিভু আলো মানেই দুর্বল ব্যাটারি। ব্যাটারির টার্মিনালগুলো পরীক্ষার জন্য সঙ্গে মাল্টিমিটার রাখার প্রয়োজন হবে। একটি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত ব্যাটারির হাইড্রোমিটার রিডিং ১২ দশমিক ৬ ভোল্ট হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: বাজাজ পালসার এন-২৫০: বাংলাদেশের প্রথম ২৫০ সিসি বাইক
ক্লাচ, ব্রেক ও সাস্পেনশন
স্টার্ট থেকে শুরু করে গিয়ার ধরতে পারছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য ধীরে ধীরে ক্লাচে চাপ বাড়িয়ে আবার একই ভাবে আস্তে করে ছেড়ে দিতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোথাও জ্যাম অনুভূত হলে বা বাইকের বডি কেঁপে উঠলে ক্লাচে সমস্যা আছে। ভালো ক্লাচের ক্ষেত্রে বাইক চালু করার পর প্রথম গিয়ারে থাকাকালীন হাল্কা কম্পন দিয়ে ধীর গতিতে সামনে এগোনোর কথা।
এ অবস্থায় আলতো করে ব্রেক চেপে দেখে নেওয়া যেতে পারে তা কতটা মসৃণভাবে কাজ করছে এবং কোনো শব্দ না করে বাইক থেমে যাচ্ছে কি না। ভালো ব্রেকিং সিস্টেমে ব্রেক ছেড়ে দিলে বাইক মসৃণভাবে আগের গতিতে ফিরে যায়।
ব্রেক টানার সময় সাস্পেনশনটারও পরীক্ষা হয়ে যাবে। শক অ্যাবজরভার ভালো থাকলে খুব বেশি ঝাকুনি অনুভূত হবে না। এছাড়া থেমে থাকা অবস্থাতেও সিটে বসে হাল্কা বাউন্স করে দেখা যেতে পারে। এ সময় সিট সমেত বাহকের শরীর স্প্রিং না করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
চাকা ও টায়ার
যত্ন নেওয়া মোটরবাইকগুলোর চাকা ও টায়ারগুলো বেশ নতুনের মতো থাকে। টায়ার রাবারের পুরুত্ব কমপক্ষে ১/১৬ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এগুলো অনেক বছর হয়ে গেলে বা অযত্নে ব্যবহার হলে ছিড়ে যায়। অধিকাংশ মোটরসাইকেলের টায়ার প্রায় ৬ বছর পরে বদলে নিতে হয়। তাই টায়ার বদলের সময় কাছাকাছি হলে বিষয়টিকে বাইকের দরদামের সময় উত্থাপন করা যেতে পারে।
ছোট ছোট গর্ত বা কার্ব থাকা চাকা নেওয়া যাবে না। সামনের ও পেছনের চাকাগুলোর অ্যালাইনমেন্ট ঠিক আছে কি না তা যাচাই করতে হবে। ঘোরার সময় কোনো বাধা ছাড়াই চাকাগুলো ঘুরতে পারছে কি না সেদিকটাও দেখা দরকার।
রাস্তাঘাটে মোড় নেওয়ার জন্য বাইকের স্টিয়ারিং ডানে-বামে নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘোরাতে পাড়াটা জরুরি। এটি পরীক্ষা করতে বাইককে কেন্দ্রীয় স্ট্যান্ডের উপর রাখলে সামনের অংশ মাটি থেকে কিছুটা উপরে উঠে যাবে। এতে বোঝা যাবে সামনের চাকা এবং হ্যান্ডেলবারগুলো মুক্তভাবে এদিক-ওদিক ঘোরানো যাচ্ছে কনা।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিলাসবহুল গাড়ি
জ্বালানি ট্যাংক
অনেক পুরনো হয়ে গেলে জ্বালানি ট্যাংকের ভেতরটা অন্ধকার হয়ে যায়। ব্যবহারযোগ্য ট্যাংকে জ্বালানি থাকলে তা উজ্জ্বল দেখায়। এই রঙ বোঝার জন্য ট্যাংকের ক্যাপ খুলে টর্চ লাইটের সাহায্যে ভেতরে একদম নীচ পর্যন্ত ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
ফ্রেম
প্রথম দর্শনে এক নজরে দেখার সময়ই চোখে পড়বে বডির দাগ বা মরিচাগুলো। পরবর্তীতে বাইকের সামনে হ্যান্ডেলবার এবং ফর্কগুলোর অ্যালাইনমেন্ট যথাযথভাবে যাচাই করে নিতে হবে। এছাড়া বাইকের হেড টিউব বাইকের সিট বা আসন টিউবের প্রেক্ষিতে কিভাবে বেঁকে আছে- তা দেখতে হবে। কেননা এখানেও অ্যালাইনমেন্ট থাকা আবশ্যক। এছাড়া বিচ্ছিন্নতা বা ফাটল খুঁজে বের করার জন্য স্টিয়ারিং হেড বিয়ারিংও পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন।
সার্ভিস রেকর্ড
মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ নিরীক্ষণ শেষে এবার কাগজপত্র দেখার পালা। বাইকের পূর্বের অবস্থা যেমন- দুর্ঘটনা, নেমপ্লেট পরিবর্তন, ও কোনো অংশ মেরামতো হয়েছে কি না- সে ব্যাপারে সম্যক ধারণ দিতে পারে সার্ভিস রেকর্ড। পাশাপাশি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলার সময় কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করা যেতে পারে যেমন, বাইকটি বিক্রি করা হচ্ছে কেন, শেষ কবে বাইকটি চালানো হয়েছিল এবং কোন পার্টস মডিফাই বা পরিবর্তন করা হয়েছে কি না ইত্যাদি। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে- বাইকের মালিকানা এ পর্যন্ত কতবার পরিবর্তন হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
অনেক বার হাতবদল হয়ে থাকলে সাধারণত বাইকের পূর্বাবস্থার সম্পূর্ণ বিবরণ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এর সঙ্গে মোটরসাইকেলের মেরামতের রেকর্ডও সম্পর্কিত। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ রেকর্ড মানে পূর্ববর্তী মালিকরা সময়মতো বাইকের সঠিক যত্ন নিয়েছিলেন।
কাগজপত্রের বৈধতা
একটি ঝামেলাহীন মোটরসাইকেল বেছে নেওয়ার জন্য এর কাগজপত্রের বৈধতা যাচাইকরণ অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে প্রথমেই দেখতে হবে নিবন্ধন কার্ড এবং হালনাগাদকৃত ট্যাক্স টোকেন। বাইকের ইঞ্জিন এবং চেসিস নাম্বার নিবন্ধনপত্র বা কার্ড ও ট্যাক্স টোকেনের সঙ্গে মিলিয়ে নেয়া যেতে পারে। মেয়াদ উত্তীর্ণ নিবন্ধন বা ট্যাক্স টোকেন কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সেই সঙ্গে যাচাই করতে হবে এই কাগজগুলোর সঙ্গে কোনো আইন সংক্রান্ত জটিলতা আছে কি না। মোটরবাইকটি কোনো মামলার সঙ্গে জড়িত আছে কি না, থাকলে তা নিষ্পন্ন হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে একটু অসাবধানতায় সমূহ বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন বাইকের নতুন মালিক।
আরও পড়ুন: নারীর একাকী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ১০ শহর
টেস্ট ড্রাইভ
যাবতীয় যন্ত্রাংশ খুটিয়ে দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছার আগে নিজে একবার মোটরসাইকেলটি চালিয়ে নেয়া উত্তম। এই টেস্ট ড্রাইভের জন্য অবশ্য বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা আবশ্যক।
এই ব্যবহারিক নিরিক্ষণে ইঞ্জিন থেকে শুরু করে ব্রেক, ট্রান্সমিশন, সাস্পেনশন সবকিছুর কার্যকলাপ পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। কিছুটা সময় নিয়ে চালানোর সুযোগ থাকলে মাইলেজের ব্যাপারেও একটা প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যাবে। সর্বতভাবে এই অভিজ্ঞতার আলোকেই ক্রেতা ঠিক করতে পারবেন যে, আসলেই বাইকটি তার কেনা উচিৎ কি না।
পরিশিষ্ট
পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় এই ১০টি বিষয় সামগ্রিকভাবে সঠিক যানবাহনটি বেছে নিতে সাহায্য করবে। এখানে ক্লাচ, ব্রেক, সাস্পেন্শন, চাকা ও বৈধ কাগজপত্র নিশ্চিত করবে সার্বিক নিরাপত্তার দিকটা। ব্যবহৃত যানটি আর কতদিন চালানো যাবে তা ঠিক হবে ইঞ্জিন, ব্যাটারি ও জ্বালানি ট্যাংকের মানের নিরিখে।
অবশ্য একটি মোটরযানের ন্যূনতম যোগ্যতার প্রত্যেকটি পূরণ করলেও পূর্ব ব্যবহারের ভিত্তিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কমবেশি হয়ে থাকে। উপরন্তু, শতভাগ ত্রুটিহীনতার সম্ভাবনা থাকে না মেনে নিয়েই সকলে কিনে থাকেন সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেল।
আরও পড়ুন: ঢাকায় গাড়ি চালানো শেখার জন্য কয়েকটি নির্ভরযোগ্য ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
৯ মাস আগে
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০: বাংলাদেশের প্রথম ৩৫০ সিসি মোটরবাইক
প্রাচীনতম ব্রিটিশ টু-হুইলার ব্র্যান্ড রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ -এর মাধ্যমে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্ষমতার নতুন মাত্রায় পৌঁছতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ৩৭৫ সিসির (কিউবিক সেন্টিমিটার) মাইলফলকের দিকে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপটি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে চলতি বছরের জুলাইতে। স্থানীয়ভাবে ইফাদ মোটরস নামক একটি মোটরসাইকেল কারখানাজাত প্রতিষ্ঠান দেশের বাজারে চালু করবে রয়্যাল এনফিল্ড। ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে যে, বিশ্ব বাজারে এর নামকরা ক্লাসিক, বুলেট, হান্টার ও মিটিওর সিরিজগুলো দেশের ভেতরেই প্রস্তুত করা হবে। কী কী ফিচার পাওয়া যাবে রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ মোটরসাইকেলের মডেলগুলোতে? আর কতটুকু নাগালের মধ্যে থাকতে যাচ্ছে এগুলোর দাম। চলুন জেনে নেয়া যাক।
রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির এক সঙ্গত সংমিশ্রণ রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০। বাতাস চলাচলের মাধ্যমে শীতলীকরণ প্রক্রিয়া সমৃদ্ধ একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিন একটি আদর্শ মোটরসাইকেল হিসেবে মডেলটিকে ন্যায্যতা দেয়।
৬ হাজার ১০০ আরপিএম (রিভোলিউশ্যন পার মিনিট)-এর সঙ্গে রয়েছে ২০ দশমিক ২ বিএইচপির (ব্রেক হর্সপাওয়ার) হর্সপাওয়ার এবং ৪ হাজার আরপিএমের সঙ্গে প্রতি ফুট দূরত্বে ১৯ পাউন্ডের টর্ক। তাই শহুরে যানজট বা খোলা-রাস্তা উভয় ক্ষেত্রেই চালনায় ভারসাম্য নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।
আরও পড়ুন: ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক: কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন
এনফিল্ড ঐতিহ্যের সমগ্র নান্দনিকতার ছোঁয়া পড়েছে নকশায়। স্টিলের ফ্রেমটি চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্যই স্বাভাবিক হ্যান্ড গ্রিপ্স, হ্যান্ডেলবার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ফুট পেগ নিশ্চিত করে। বাইক চড়ার মুহূর্তগুলোকে আরামদায়ক করার জন্য সামনের সাসপেনশনে রয়েছে ৪১ মিলিমিটার টেলিস্কোপিক ফর্ক আর পেছনেরটাতে একটি টুইন সাইড সুইং আর্ম। যথাযথ নিরাপত্তার স্বার্থে এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) হিসেবে কাজ করবে সামনে এবং পিছনে উভয় দিকের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক। সতর্ক সংকেত দেওয়ার জন্য যন্ত্রাংশ প্যানেলে রয়েছে চিরাচরিত স্পিডোমিটার ও একটি ফুয়েল লেভেল লাইট।
এছাড়াও সঙ্গে বহন করার জন্য আছে হার্ড সাইড কেস, পিছনের র্যাক ও ব্যাগ লাইনারসহ আনুষঙ্গিক নানাবিধ সংযোজনের ব্যবস্থা।
রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০
বুলেট মডেলকে রয়্যাল এনফিল্ড ঐতিহ্যের প্রতীক বলা যেতে পারে। ক্লাসিকের মতো এটাতেও রয়েছে ৩৪৯ সিসির জে-সিরিজ ইঞ্জিন ও ৬ হাজার ১০০ আরপিএম-এ ২০ দশমিক ২ বিএইচপি হর্সপাওয়ার। পাশাপাশি এটি ৪ হাজার আরপিএম-এ প্রতি ফিট দূরত্বে ১৯.৯ পাউন্ড টর্ক দিতে সক্ষম। অর্থাৎ উচ্চ-গতির জন্য নয়; এটি বরং প্রতি ঘন্টায় ৫০ থেকে ৬০ মাইল যাত্রার জন্য উত্তম।
সিরিজটি ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মোটরসাইকেল ডিজাইন। ১৯৫৫ সালে মূল প্রতিষ্ঠান এনফিল্ড সাইকেল কোম্পানি ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গঠন করেছিল এনফিল্ড অব ইন্ডিয়া। মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) কেন্দ্রিক এনফিল্ড সাইকেলের উত্তরসূরি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল এই রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট অ্যাসেম্বলির মাধ্যমেই। বুলেটের চিত্তাকর্ষক নকশায় এখনও সেই ঐতিহাসিক ছাপ বিদ্যমান, যা অনায়াসেই যে কোনও বাইক চালকের মন জয় করে নেয়। বুলেটের ভিন দেশী নকশা এবং ইউএসবি চার্জিং পোর্ট বিশেষভাবে নজর কাঁড়ে।
আরও পড়ুন: বারিধারার ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ: যেভাবে যাবেন, যা দেখবেন
স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হ্যান্ডলিং, সাস্পেনশন, এবং ডুয়্যাল সিট সেটআপ একা একা বা কাউকে সঙ্গে নিয়ে চালানো উভয় ক্ষেত্রে নেভিগেশনটা চালকের জন্য সহজাত করে তোলে। সিটটি মোটা-প্যাডের হওয়ায় তা ৮০৫ মিলিমিটার উচ্চতায় চালক ও যাত্রী দুজনের জন্যই বেশ সহজসাধ্য এবং আরামপ্রদ।
১৩ লিটার ধারণক্ষমতার জ্বালানি ট্যাঙ্ক একবার ভরে নিলে ৩০০ মাইলেরও বেশি নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা যাবে।
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০
উন্নত প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত হওয়ায় রয়্যাল এনফিল্ড পরিবারের সবচেয়ে আধুনিক সদস্য হচ্ছে হান্টার।
অবশ্য ক্লাসিক মডেলের ধারা অব্যাহত রেখে এর একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিনের ক্ষমতা একই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ৬ হাজার ১০০ আরপিএমে ১৪ দশমিক ৮৭ কিলোওয়াট এবং ৪ হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম টর্ক।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
সামগ্রিক নকশা অনুসারে এই সিরিজ শহুরে পরিবেশের জন্য উপযুক্ত। স্টিলের ফ্রেমটি নেভিগেশন এবং চালক ও যাত্রী দুজনের ফুটপেগের সহায়ক। এখানেও আছে সামনের সাসপেনশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের সাস্পেনশনে টুইন সাইড সুইং আর্ম।
এর আকার ও সর্বোচ্চ ১৮১ কেজি ওজন শামাল দিতে কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক বাইকারকেই হিমশিম খেতে হয় না। ৩১ দশমিক ১ ইঞ্চি বা ৭৯০ মিলিমিটারের উচ্চতায় বসার জায়গাটি যে কোনও চালক ও যাত্রীর জন্য স্বাভাবিক। তাছাড়া চলন্ত অবস্থায় সুরক্ষার জন্য সামনে এবং পিছনে এবিস সহ হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক তো থাকছেই।
হান্টার-৩৫০-এর যন্ত্রাদি ডিজিটাল হওয়ায় পাওয়ার আউটলেট, হার্ড সাইড কেস এবং স্টোরেজ কভারের সুবিধা আছে। অ্যালুমিনিয়ামের চাকাগুলোতেও লাগানো আছে টিউবলেস টায়ার।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০
অন্যান্য সিরিজগুলোর সঙ্গে খুব একটা তারতম্য নেই রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০-এর। ৩৪৯ সিসির একক সিলিন্ডার ইঞ্জিনে অপরিবর্তিত আছে ৪ হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম (নিউটন-মিটার) টর্ক এবং ৬ হাজার ১০০ আরপিএমে ২০ দশমিক ২ বিএইচপির ক্ষমতা।
টেকসই ও পালিশ করা সর্বাঙ্গে জেনুইন মোটরসাইকেল এক্সেসরিজের (জিএমএ) বিশাল বহর। ইঞ্জিন এবং গিয়ারের মাঝে সুষ্ঠু যোগসাজশ এক মসৃণ রাইডিং অভিজ্ঞতা দেয়। প্রতি ঘণ্টায় গতি ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেলেও কম্পন অনুভূত হবে না।
মিটিওর-৩৫০ও সমস্বরে জানান দেয় স্টিল ফ্রেম এবং সামনের ও পেছনের সাস্পেনশনে যথাক্রমে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও টুইন সাইড সুইং আর্মের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন: উবার ড্রাইভার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করবেন যেভাবে
গ্রাউন্ড থেকে ৩০ দশমিক ১ ইঞ্চি বা ৭৬৪ দশমিক ৫ মিলিমিটারের উচ্চতায় ডুয়্যাল সিট এবং সামনের-পেছনের দুই চাকাতে এবিএসের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক পূর্ণ নিরাপত্তার পরিপূরক।
স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, ট্রিপ ওডোমিটার, কম্পাস এবং নেভিগেশন সিস্টেমের ডিজিটাল যন্ত্রাংশ বিশ্বমানের সুবিধা হিসেবে আলাদা আকর্ষণ রাখে।
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০-এর সম্ভাব্য মূল্য
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিচিত্র রঙ ও এবিএস চ্যানেল ভেদে ক্লাসিক সিরিজের দাম চলছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০ রুপি থেকে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৫৫ রুপি পর্যন্ত। যেটি বাংলাদেশি টাকায় আড়াই লাখ থেকে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৬ টাকা (১ ভারতীয় রুপি = ১.৩২ বাংলাদেশি টাকা)। বেশ কিছু নতুন রঙের ভার্সন সংযোজন হয়ে বুলেট মডেলগুলোর মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬২ থেকে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৬ রুপি, যা প্রায় ২ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ টাকা থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩১ টাকার সমপরিমাণ।
১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ থেকে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৫ রুপি (প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১০৭ থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৩ টাকা) দামে ভারতীয় গ্রাহকদের নিকট পরিবেশিত হচ্ছে বর্ণীল হান্টারগুলো। আর ২ লাখ ৫ হাজার ৯০০ থেকে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ রুপি (প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার ১১৭ টাকা থেকে ৩ লাখ ৩ হাজার ৮৩৫ টাকা) দামের পরিধি নিয়ে মোটর বাইকারদের নজর কাঁড়ছে অবকাশ রাইডিংয়ের মিটিওর-৩৫০ ক্রুজগুলো।
আরও পড়ুন: মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
বাংলাদেশে মোটর বাইকগুলোর দাম নির্ভর করছে উদ্বোধনকালীন বাজার পরিস্থিতি এবং ডলার মূল্যের উপর। ইফাদ মোটরসের তথ্যমতে, ডলার রেট প্রায় ১২৫ (বাংলাদেশি) টাকা হলে রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ সিরিজগুলোর দাম হতে পারে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।
পরিশিষ্ট
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ -এর চারটি সিরিজই প্রতিনিধিত্ব করছে বিশ্বমানের মোটরবাইক শিল্পকে। তবে বাংলাদেশে এর প্রতিক্রিয়ায় বৈচিত্র্য আসতে পারে মোটরসাইকেলপ্রেমিদের ভিন্ন চাহিদার ভিত্তিতে। বয়সের সীমারেখা নির্বিশেষে ঐতিহ্যবাহী বাইকাররা তাদের নস্টালজিয়া অনুশীলনে সাদরে গ্রহণ করে নিতে পারেন ক্লাসিক মডেলটিকে। সাবলীলতা ও নির্ভরযোগ্যতায় ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দেয়া শ্রেণির প্রথম পছন্দ হতে পারে বুলেট সিরিজ।
শহুরে চালকদের বিশেষ করে স্বল্পবয়সীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থানটি দখল করতে পারে হান্টার ও মিটিওর। তবে এবিএস থাকলেও এগুলোর উচ্চ গতি বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোতে সতর্কতার দাবি রাখে। আর খারাপ সড়ক বা গ্রাম্য পথে দূর পাল্লায় হান্টারকে পরখ করে দেখা মোটেই উচিত হবে না।
আরও পড়ুন: বাজাজ পালসার এন-২৫০: বাংলাদেশের প্রথম ২৫০ সিসি বাইক
৯ মাস আগে
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
যে কোন ধরনের সড়কে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন হওয়ায় মোটরসাইকেল চালকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিক সতর্ক থাকতে হয়। গুরুতর আহত থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকায় মোটরবাইক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য পূর্ব সতর্কতার কোন বিকল্প নেই। ছোটখাটো বাধাও অনেক ক্ষেত্রে ভয়ানক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাড়ায়। সাধারণ গাড়িতে গাড়ির দৃষ্টিগোচর আকার সহ সিট বেল্ট বাধার নিরাপত্তাজনিত সুযোগ গ্রহণের অবকাশ থাকে। কিন্তু মোটরসাইকেলে এগুলোর কোনটাই নেই। তাছাড়া চালকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো আরো বিপজ্জনক করে তুলেছে ছোট এই যানটিকে। তাই চলুন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় সতর্কতামুলক কার্যকলাপগুলোর ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
মোটরবাইক দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানোর ১০টি সতর্কতামূলক পন্থা
মোড় ঘুরার জায়গাগুলোতে সতর্ক থাকা
শুধু মোটর বাইক নয়; যে কোন গাড়িই এই জায়গাগুলো পার হবার সময় হর্ন বাজিয়ে যায়। কিন্তু শুধু হর্নই নয়, গতিও কমিয়ে আনা উচিত। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের মত ছোট গাড়িগুলো প্রায়ই অন্যান্য বড় গাড়ি চালকদের চোখ এড়িয়ে যায়।
তাছাড়া ঢাকার রাস্তার কিছুক্ষণ পর পর মোড় থাকায় অনেকেই এসব ব্যাপার তেমন আমলে নেন না। অথবা মাথায় থাকলেও ঘন ঘন হর্ন বাজানো বা গতি কমানোর প্রতি ধৈর্য্য সবার থাকে না। আর ট্রাফিক জ্যামের কারণে এই জায়গাগুলো আরো দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তাই এমন অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখাও মোটরসাইকেল চালানোর একটি পূর্ব শর্ত।
পড়ুন: চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়
গতি কমানো বা থামার সময় সাবধানে পিছনটা দেখে নেয়া
সিগনালে বা রাস্তার পাশে থামার সময় স্বাভাবিক ভাবেই মোটরসাইকেল চালকদের গতি কমাতে হয়। এ সময়টা সতর্ক ভাবে লুকিং গ্লাসে পেছনে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। এমন অবস্থায় প্রধান সড়ক থেকে ফুটপাত সংলগ্ন পাশে চলে আসতে হবে এবং ব্রেক লাইট কয়েকবার ফ্ল্যাশ করতে হবে। সিগনালের থামার সময় সব গাড়িই গতি কমাতে থাকে, তাই এক্ষেত্রে সংঘর্ষ লাগার আশঙ্কা কম থাকে।
কিন্তু নিজের প্রয়োজনে বা কোন সমস্যার কারণে থামতে হলে পিছনে দ্রুত বেগে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। বাইক পুরো না থামিয়ে গিয়ারে রাখা যেতে পারে। এতে সবেগে আসন্ন কোন গাড়ি কাছে এসে আঘাত করবে বলে মনে হলে চট করে বাইক দূরে সরিয়ে নেয়া যাবে।
ট্র্যাফিক জ্যাম এবং পার্ক করা গাড়ির মাঝে মোটরসাইকেল চালানোর সময় সতর্ক থাকা
ঢাকার মত রাস্তায় এটি খুব সাধারণ একটি দৃশ্য হলেও এর ফলাফল অনেক ভয়াবহ হতে পারে। দেখা গেলো হুট করে কোন একজন চালক বা প্যাসেঞ্জার তার গাড়ির দরজা খুলে দিলো। আবার পেছনের কোন একটি গাড়ি চালক ভুল করে অ্যাক্সেলেটারে চাপ দেয়ায় ঠেলে বাইককে সামনে নিয়ে যেতে পারে। এতে বাইক সহ বাইক চালক ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পড়ুন: চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়
আবার যে কোন এক পাশের কোন এক গাড়ির পাশ দিয়ে একজন পথচারী বেরিয়ে আসলো। এ সময় সংঘর্ষ এড়াতে মোটর বাইকের সাথে পাশের কোন গাড়ির সাথে সংঘর্ষ লেগে যেতে পারে।
নিজেকে খুব সহজে দৃষ্টিগোচর করে তোলা
প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গাড়ি চালক রাস্তায় চলার সময় মোটরসাইকেল খেয়াল করে না। মোটরসাইকেল অন্য গাড়ির তুলনায় আকারে ছোট। তাই মোটর বাইক চালকদেরকেই আগ বাড়িয়ে নিজেদের অবস্থানের জানান দিতে হবে। এর সমাধান হিসেবে উজ্জ্বল বর্ণের পোশাক পরিধান করা যেতে পারে। বিশেষ করে রাতে বাইকের লাইটগুলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে এবং অন্ধকারে স্পষ্ট চোখে পড়ে এমন বর্ণের পোশাক পড়তে হবে।
মোড় ঘুরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মোটর বাইক চালক অন্যান্য গাড়ি চালকদের ব্লাইন্ড স্পটে পড়ে না যান। এজন্য মোড় ঘুরার ক্ষেত্রে প্রতি দুই গাড়ির মাঝে যথেষ্ট দূরত্ব রাখতে হবে এবং গতি অবশ্যই অনেক নিচে নামিয়ে আনতে হবে।
পড়ুন: এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে কি করবেন ? এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
ঘন ঘন ওভারটেকিং প্রবণতা পরিত্যাগ করা
মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো গাড়িচালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা। লং ড্রাইভে গাড়িগুলো পরস্পরের সাথে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়। এতে শুধু সেই গাড়িগুলোরই সমস্যা হয় না, কখনো কখনো আশেপাশের লোকেরাও দুর্ঘটনার শিকার হন।
বড় রাস্তাগুলোতে গতি একদম কমিয়ে আনারও উপায় থাকে না। কারণ সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে পেছনের সবেগে চলমান গাড়িটির সাথে ধাক্কা লেগে যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে নিজের জন্য রাস্তার যে কোন একটি পাশ ঠিক করে একটি নির্দিষ্ট বেগে গাড়ি চালানো যেতে পারে। নিজে ওভারটেক না করে বরং লুকিং গ্লাসে দেখে পেছনের গাড়ির অবস্থা বুঝে তাকে পাশ কাটিয়ে যেতে দেয়া উত্তম।
অনেকে দুটি বড় গাড়ির মাঝে যথেষ্ট ফাঁক দেখতে পেয়ে তার মাঝ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে সামনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি তারা পুরোপুরি নিশ্চিতও থাকে না যে সেই জায়গায় তারা ফিট করবে কিনা। এমন দুঃসাহসিক কার্যকলাপ কখনোই চেষ্টা করা উচিত নয়। এরকম একে অপরের সাথে সমান্তরাল অবস্থানে থাকা দুটি লড়ি, ট্রাক বা বাসের মাঝ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
পড়ুন: পণ্য, সেবা ক্রয়ে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করার উপায়
অন্য যানবাহনের ওভারটেকিং-এ নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা
যারা মোটামুটি সবকিছু বুঝে নিজের জন্য এক পাশ বেছে নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন তাদেরকে অন্যান্য চালকদের মানসিকতার দিকটিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা প্রত্যেকে হয়ত শান্ত মোটর বাইক চালক নন। তারা কোন রকম পূর্বাভাস না দিয়েই অন্য গাড়ির পথের উপর চলে আসে।
এছাড়া বড় গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি অনেক সময় অনিচ্ছাবশত ঘটে। কারণ মোটরসাইকেল চালকরা খুব সহজেই ব্লাইন্ড স্পটগুলোতে ফিট করে যায়। এ অবস্থায় যে কোন চালকই মোটরসাইকেলটিকে খুঁজে পেতে ভুল করবে। এর সমাধান হিসেবে তাদের উপর দোষ না চাপিয়ে মোটর বাইকারদের উচিত নিজেদেরকে আরো বেশি দৃষ্টিগোচর করে তোলা।
চালকের রিয়ার-ভিউ মিররে চোখ রাখলে তারাও মোটর বাইক চালককে দেখতে পাবে। তাদের গাড়ি চালানোর প্যাটার্নের দিকে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে। রাস্তায় জ্যাম তেমন বেশি না থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই তারা ওভারটেক করে সামনে এগুতে চাইবে। এ সময় তাদের সাথে প্রতিযোগিতা না করে তাদেরকে সামনে যেতে দেয়া উত্তম।
পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
এক্ষেত্রে তারা জোরে গাড়ি চালাতে উদ্যত হচ্ছে কিনা তা খেয়াল করা যেতে পারে। তাদের টার্ন সিগনাল, তাদের চারপাশে দেখার জন্য মাথা নড়াচড়া করা প্রভৃতি কার্যকলাপগুলো ওভারটেকিং-এর লক্ষণ দেখাবে। তাদের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে এই সচেতনতাটুকু বেশ কার্যকর।
ইউ টার্ন নেয়ার সময় সতর্কতা
এই বিপজ্জনক অবস্থাটিতে দুই দিকে খেয়াল রাখতে হয়। এক অপর রাস্তার উল্টো পাশ থেকে কোন গাড়ি কত দ্রুত আসছে। আর দুই মোটর বাইকের সাথে আরো কোন গাড়ি ইউ টার্ন নিচ্ছে কিনা। ঢাকার রাস্তায় অবশ্য এই দুটি ছাড়াও আরো বিভিন্ন দিকে দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।
তবে প্রাথমিক ভাবে উল্টো পাশের গাড়ি থেকে যতটুকু দূরত্ব বজার রাখা যায় ততই ভালো। আর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো বাইকের গতি অনেক কমিয়ে আনা। আইল্যান্ডের সাথে বাইক লেগে যাচ্ছে কিনা সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
মোটরসাইকেলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের রুটিন চেক
মোটরসাইকেলটির নিরবচ্ছিন্ন চলমান অবস্থা বজায় রাখতে এর যন্ত্রাংশ ঠিক রাখা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের তালিকায় ইঞ্জিন, ব্রেক, টায়ার, হেডল্যাম্প, টার্ন সিগনাল, এবং জ্বালানি রাখতে হবে।
মোটরসাইকেল চালানোর সময় ফোনে কথা না বলা
মোটরসাইকেল চালানোর সময় কখনই মোবাইল ফোনে কথা বলা ঠিক নয়। দু’হাতকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ব্যবহার করতে হবে মোটর বাইক চালানোর কাজে। এমনকি ব্লুটুথ দিয়েও ফোনে কথা বলা উচিত নয়। কারণ এটি গাড়ি চালানো থেকে মনকে বিচলিত করে। খুব জরুরি হলে ধীর গতিতে রাস্তার একেবারে ফুটপাত সংলগ্ন জায়গায় বাইক থামিয়ে তারপর ফোন ধরা যেতে পারে।
খারাপ আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানো এড়িয়ে চলা
ঝর, বৃষ্টির মত প্রতিকূল আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানো একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। মোটরসাইকেল চালানোর আদর্শ রাস্তা হলো শুষ্ক রাস্তা। ভেজা রাস্তায় টায়ারের ঘর্ষণ ক্ষমতা কম থাকে। পারতপক্ষে এই ধরনের পরিস্থিতিতে গাড়ি না চালানোই উত্তম। তবে খুব প্রয়োজন হলে গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। খারাপ আবহাওয়ায় মোটর বাইকের দৃশ্যমানতা কমে যাওয়াটাও একটা সাধারণ ব্যাপার।
পড়ুন: মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
শেষাংশ
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য উপরোক্ত উপায়গুলো যে বিষয়টির উপর সব থেকে গুরুত্বারোপ করছে তা হলো অল্প গতিতে মোটরসাইকেল চালানো। মোটরসাইকেলের সব দুর্ঘটনার পেছনে মুলত এই দ্রুত গতিই দায়ী। হুট করে সামনে কোন কিছু এসে পড়লে খুব জোরে ব্রেক কষা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মোটরবাইক চালককে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। এমনকি কখনো এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে ভাগ্যের দয়ার উপর ছেড়ে দিতে হয়। তাই সবচেয়ে নিরাপদমূলক কাজ হলো, বাইককে সব সময় অল্প গতিতে রাখা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও নিদেনপক্ষে এ সময় চট করে নিজেকে নিরাপদ অবস্থায় নিয়ে যাবার জন্য চিন্তা করা যায়।
২ বছর আগে
মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
নিরাপত্তা কোনো অভিজ্ঞতা বা যানবাহনের ধরনের উপর নির্ভর করে না। বিশেষ করে মোটর বাইক ক্রয়ের পর নিরাপত্তার জন্য অবধারিত বিষয় রাইডিং সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ করাটা অতিরঞ্জিত কোন ব্যাপার বা বিলাসিতা নয়। ব্যয়বহুল হওয়ার জন্য অনেকেই এতে বিনিয়োগ করতে গড়িমসি করেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, একজন মানুষের জীবনের চেয়ে সেফটি গিয়ারের মূল্য বেশি নয়। তাই মোটর বাইক রাইডারদের উদ্দেশ্য করে আজকের ফিচার সেফটি গিয়ার নিয়ে।
বাইক রাইডিং-এর সময় সেফটি গিয়ারের প্রয়োজনীয়তা
শরীরের বিভিন্ন অংশের সুরক্ষা
প্রতিটি সেফটি গিয়ার শরীরের নির্দিষ্ট অংশ রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একটি হেলমেট শরীরের হাড়ভাঙা বা অন্যান্য আঘাত থেকে নিস্তারের নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
হেলমেট ছাড়াও সেফটি গিয়ারের মধ্যে আছে হাঁটু এবং কনুই গার্ড, চেস্ট আর্মার, রিফ্লেক্টর, জ্যাকেট, বুট এবং গ্লাভ্স।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
দীর্ঘমেয়াদে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ বাঁচাতে
মোটর বাইকের দুর্ঘটনা অন্য যে কোন যানবাহনের দুর্ঘটনা থেকে অত্যধিক গুরুতর হয়ে থাকে। তাছাড়া কখনো ছোট্ট একটি আঘাতও বড় কোন বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়। আর সেই বিপদ সামাল দিতে পাহাড়সম খরচের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকেই মোটর বাইক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালের খরচ চালাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সঠিক সেফটি গিয়ারে বিনিয়োগ এই অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা ও খরচ থেকে বাঁচাতে পারে।
কিভাবে সেফটি গিয়ার মোটর বাইক রাইডারের দেহকে রক্ষা করে
মাথা বাঁচাতে হেলমেট
হেলমেট পরা কখনই একজন রাইডারের জন্য ঐচ্ছিক বিষয় নয়। হেলমেট ছাড়া মাথা সমূহ বিপদের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় বিধায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মানবদেহে মাথা সবচেয়ে সংবেদনশীল আর এ কারণেই বিচারব্যবস্থায় হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো বে-আইনি।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণ: ঘুরে আসুন মেঘে ঢাকা স্বর্গে
দুই পায়ের নিরাপত্তায় বুট
যে কোন দুর্ঘটনায় পা সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে থাকে। মোটর বাইক ভালোভাবে চালানোর সময় ভারসাম্যের জন্য দুই পায়ের ভূমিকা অপরিসীম। পাশাপাশি আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষার নিমিত্তে পূর্ব সতর্কতায়ও পায়ের ব্যবহার করেন মোটর বাইক রাইডাররা। তাই পা থাকতে হবে যথাসম্ভব সুরক্ষিত বন্ধনীতে। আর এর জন্য আছে বিশেষভাবে ডিজাইন করা বুট। এগুলো পড়ে যাওয়া বা অন্য রাইডারের সাথে সংঘর্ষের সময় পা-এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
হাড়ভাঙা ও ক্ষত-বিক্ষত হওয়া থেকে বাঁচাতে পোষাক
মোটরসাইকেল-এর দুর্ঘটনাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরোহীর হাড় ভাঙ্গা ও শরীর ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার দিকে ধাবিত করে। মোটর বাইক রাইডারদের জন্য বিশেষ ভাবে বানানো জ্যাকেট, চেস্ট গার্ড, প্যান্ট এই দুর্ঘটনার গুরুতর প্রভাব থেকে রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
২ বছর আগে