বিজিপি সদস্য
বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে চান না পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনী সদস্যদের শিগগিরই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
কৌশলগত বিষয়ে কিছু না বলার শর্তে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বলতে চাই না। নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত থাকায় এটি গোপনীয়। উভয় পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে যে তাদের শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের মিয়ানমারে ফেরার বিষয়ে তারা কাজ করছেন। "এটাই আমাদের অগ্রাধিকার। তারা (মিয়ানমার) তাদের ফিরিয়ে নিতে চায়।’
শুধু মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাই নয়, তাদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এর আগে শতাধিক মানুষ ভারতে ঢুকে পড়েছিল এবং মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির কর্মসূচি পুরোনো গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার নামান্তর : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের আগমনের বিষয়ে তারা প্রতি মুহূর্তেই গণমাধ্যমকে জানায়। 'কোনো লুকোচুরির সুযোগ নেই'
তিনি বলেন, ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে এবং এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক তা আমরা কখনোই দেখতে চাই না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির কারণে নিরাপত্তা, জলবায়ু ও অবৈধ মাদকসংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ।
এদিকে মিয়ানমারের সিত্তেতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট সেখানকার বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে অস্থায়ী ভিত্তিতে ইয়াঙ্গুনে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ভারতে সদ্য সমাপ্ত প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, এই সফরে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে যে সম্মান দেখানো হয়েছে তা দেখে তিনি অভিভূত।
বিএনপি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পুরোনো গাড়ি চালু করতে সময় লাগে। ‘বিএনপি একটি পুরোনো গাড়ির মতো। সামান্য নড়াচড়া করার পর থেমে যায়।’
বিএনপি গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত হবে ও গণতন্ত্রের পথে চলবে বলে আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আসলে গত জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা চরম হতাশ হয়ে পড়েছে এবং তাদের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারত বুধবার 'স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১' ও 'বিকশিত ভারত-২০৪৭' রূপকল্পসহ দুই দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভবিষ্যৎ সম্পৃক্ততার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে ৭-৯ ফেব্রুয়ারি ভারত সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা এক বার্তায় জয়শঙ্কর বলেন, 'আমাদের আলোচনা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী (বন্ধুত্ব) আরও দৃঢ় করবে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদের প্রথম ভারত সফর এবং কোনো দেশে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হবে বে-টার্মিনাল, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে অভাবনীয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১০ মাস আগে
বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠাতে দুই দেশের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সেনাবাহিনী ও বিজিপির সদস্যদের খুব দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরীন।
এ বিষয়ে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগের অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাসের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং মিয়ানমারে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। মিয়ানমার সরকার তাদের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে ইতোমধ্যেই আগ্রহ প্রকাশ করছে। এখন যত শিগগিরই সম্ভব তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
সাবরীন বলেন, ‘এ বিষয়ে মিয়ানমারের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত গতকাল বিকালে, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আশা করা যাচ্ছে অতি দ্রুত তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের চলমান সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এর ফলে বাংলাদেশের জনসাধারণ, সম্পদ বা সার্বভৌমত্ব কোনোভাবে যেন হুমকির সম্মুখীন না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।’
মিয়ানমারে চলামান যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ যে ভূ-রাজনীতির সমীকরণে পড়েছে তা থেকে উত্তরণে কূটনৈতিক তৎতপরতা ও আন্তর্জাতিক ফোরামের সহায়তা প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সর্তক রয়েছে এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে নিউইয়র্কের স্থায়ী মিশন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে। বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায়।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাসনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সংকট উত্তরণের জন্য আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক যেকোনো উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি অনিবার্যভাবে থাকা প্রয়োজন। সুবিধাজনক সময়ে স্বেচ্ছায়, স্থায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহু পাক্ষিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
‘কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না’ বলা হলেও কেন বিজিপি ও সেনা সদস্যদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের নিয়মিত বাহিনী বিজিপির সদস্যদের আশ্রয় দান এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি এক করে দেখা ঠিক হবে না।’
নৌরুট ও আকাশ পথে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, ‘আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের নিরাপদে দ্রুত ফেরত পাঠানোই প্রধান বিবেচ্য বিষয়। বিমান বা নৌরুটের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয় বা কোনো পূর্বশতও নয়। বিমানযোগে প্রত্যাবাসন দ্রুততম সময়ে করা সম্ভব বিবেচনায় বাংলাদেশ এ প্রস্তাব দিয়েছিল। মিয়ানমার কিছুদিন আগেও ভারত থেকে বিমানযোগে সৈন্য নিয়ে এসেছিল। তাই এ প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষ হতে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে এসব ব্যক্তিকে ফেরত পাঠাতে চায়। এখানে সময় ক্ষেপণের সুযোগ নেই। আশা করা যাচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে সেটা আকাশপথেই হোক বা সমুদ্রপথেই হোক।’
মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক বা রাজনৈতিক কোনো কারণ থাকার প্রশ্ন অবান্তর বলে মন্তব্য করেন তিনি। মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা সম্প্রতি ভারতেও আশ্রয় নিয়েছে এবং ভারত থেকে তারা নিজ দেশে ফিরে গিয়েছে বলে জানান।
সাবরীন বলেন, একটি নিয়মিত বাহিনীর বিপদগ্রস্ত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে তারা সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছে এবং প্রথম দিন থেকেই মিয়ানমার সরকার তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তারা বিজিবির কাছে অস্ত্রশসত্র জমা দিয়েছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকটে বাংলাদেশির মৃত্যুর বিষয়ে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকটে বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিষয়টির প্রতি সংবেদনশীল। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে মিয়ানমার সরকারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ক্ষতিপূরণ চাওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
১০ মাস আগে
নৃশংস অপরাধের জন্য মিয়ানমার থেকে আসা বিজিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান
বাংলাদেশে আসা মিয়ানমার বর্ডার গার্ড অব পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর করা অপরাধ ও নৃশংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সঙ্গে একত্রিত হয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছে ফর্টিফাই রাইটস।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে শত শত বিজিপি সদস্য পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশে সহায়তা ও সুরক্ষার পাশাপাশি অতীতে এই বিজিপি সদস্যরা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল কি না- সেটি পর্যালোচনার ওপর জোর দিয়েছেন ফর্টিফাই রাইটসের সিইও ম্যাথু স্মিথ।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসতে মিয়ানমারের অন্যান্য সামরিক, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীদের উদ্বুদ্ধ করতে এটি সহায়তা করবে। এই সীমান্তরক্ষীদের কাছে এমন তথ্য থাকতে পারে যেসব মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও অন্যান্য অপরাধের জন্য অপরাধীদের জবাবদিহির মুখোমুখি করতে সাহায্য করতে পারে। এ বিষয়ে তাদের ওপর সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত বলেও মনে করেন স্মিথ।
আরও পড়ুন: সেনা সদস্যসহ আরও ১২৩ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে: বিজিবি
বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে মিয়ানমারের ২৬৪ জন বিজিপির সদস্য প্রবেশ করেছে; যাদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন গুরুতর আহত, যারা এখন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাধীন।
কক্সবাজারে বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীদের নিকটবর্তী জেলা বান্দরবানে থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এর আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে সংঘটিত হওয়া মিয়ানমারের পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো অপরাধ তদন্তের জন্য ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি অফিস অব দ্য প্রসিকিউটরকে (ওটিপি) অনুমোদন দেয়। এ তদন্ত প্রায় চার বছর ধরে চলছে। আদালত এখনও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা অপরাধসংক্রান্ত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেনি।
২০১০ সালে বাংলাদেশ আইসিসির একটি রাষ্ট্রীয় পক্ষ হয়ে মিয়ানমারের অভিযুক্ত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইসিসির সঙ্গে কাজ করেছিল।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিও উইন তুন এবং জাও নাইং তুন নামে মিয়ানমারের দুইজন সামরিক সদস্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এসে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে আশ্রয় চেয়েছিল। তারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। রোম সংবিধির একটি রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে ঢাকা আইসিসিকে এই দুই সাবেক সৈনিকের উপস্থিতি সম্পর্কে জানায়।
পরে এই দুই সৈন্যকে হেগে স্থানান্তরিত করা হয়। তারাই প্রথমবারের মতো মিয়ানমার থেকে আইসিসির হাতে আসা অপরাধী।
ফর্টিফাই রাইটস মনে করছে, মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহে বাংলাদেশেরও উচিত মিয়ানমারবিষয়ক আন্তর্জাতিক স্বাধীন ব্যবস্থার (আইআইএমএম) সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা করা। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ২০১৯ সালে আইআইএমএম গঠন করে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগণের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণহত্যা চালায়। শত শত গ্রাম ধ্বংস করে, হত্যা-ধর্ষণ আর নৃশংস অত্যাচার চালায়। প্রায় ৭ লাখেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
ফর্টিফাই রাইটস, মার্কিন সরকার, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন, রোহিঙ্গাদের সংঘঠনগুলোসহ অন্যান্যরা এই হামলাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৩ জনে: বিজিবি
১০ মাস আগে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের পর নিজেদের বাঁচাতে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মিয়ানমার।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তারা তাদের বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে চায়। মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কারণ তারা (বিজিপি সদস্যরা) ফিরে যেতে চায়। উভয় দিক থেকে যোগাযোগ চলছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন হাছান মাহমুদ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষে দেশটির সীমান্ত পুলিশের আরও ৩৭ সদস্য বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, এ নিয়ে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও মিয়ানমারের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
হাছান বলেন, ‘আকাশ পথে নাকি সড়ক পথে তাদের ফেরত নেওয়া হবে, তা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। আপনারা জানেন, মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এর আগে ভারতীয় ভূখণ্ডেও ঢুকেছিল, কিন্তু তাদের আকাশ পথে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। আমরাও তাদের ফেরত পাঠাব।’
সীমান্ত সুরক্ষা ও এক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহায়তা লাগবে কি না -এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্ত সুরক্ষিত আছে। প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছে। সকাল পর্যন্ত ৯৫ জন রেজিস্টার্ড হয়েছে। তারা তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তৃতীয় পক্ষ ডাকার সুযোগ নেই।’
'বাইডেনের চিঠিকে আমরা স্বাগত জানাই'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লেখা চিঠিকে বাংলাদেশ স্বাগত জানিয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমে সব ধরনের প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার হয়েছে বলে মনে করে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ন্যাম সামিট: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট বাইডেনের লেখা চিঠিকে আমরা স্বাগত জানাই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে যাবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে আর কোনো 'অস্বস্তি' নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন।
তিনি একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার চিঠিতে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যসমূহে সমর্থন এবং একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের পরবর্তী অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এবং আরও অনেক বিষয়ে তাদের কাজ অব্যাহত রাখার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা জানাতে চান তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, 'সমস্যা সমাধানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে জনগণের শক্তিশালী বন্ধনই এই সম্পর্কের ভিত্তি।'
মার্কিন দূতাবাস সম্প্রতি চিঠিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
১০ মাস আগে