বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত
মিয়ানমার সরকার নয়, আরাকান আর্মি গুলি ছুঁড়েছে: কাদের
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে সরাসরি কোনো হামলা দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে বেশ কয়েকটি জাতিগত গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে সম্ভবত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সাম্প্রতিক এসব ঘটনা ঘটিয়েছে, মিয়ানমার সরকার নয়।
বুধবার (১৯ জুন) মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'সীমান্তে গুলি আসতে পারে বা গুলির শব্দ শোনা যেতে পারে। এটা কি সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন? এসব ঘটনা তাদের বিদ্রোহীদের কারণে ঘটছে। এর জন্য আমরা কেন মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করব? যতদিন সম্ভব আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।’
সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধীরা সরকারের সিদ্ধান্তকে আজ্ঞাবহ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। কিন্তু কীভাবে তা আজ্ঞাবহ হয়? সেন্টমার্টিনে যে বুলেট পড়েছে সেটি মিয়ানমার সরকারের নয়, আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের ছোঁড়া।’
যুদ্ধের পরিবর্তে সংলাপের মাধ্যমে সংঘাত নিরসনে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের জাহাজটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যখন জোয়ারের মতো বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তখনো উসকানি ছিল। মাঝেমধ্যে আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী প্রধানদের যেকোনো পরিস্থিতিতে যুদ্ধ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেন। মিয়ানমার উসকানি দিলে আমরা সংলাপে বসব এবং সমাধান বের করব, কিন্তু আমরা যুদ্ধে জড়াব না।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে তীব্র সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে- এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যুদ্ধে জড়াতে চান, তাহলে আমরা উসকানির ফাঁদে পড়তে পারি। আমরা সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে ফখরুলের অবদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমি জানি না ফখরুল কী করেছিলেন বা মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। এ ধরনের দাবি করে কোনো লাভ নেই। সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রয়েছে। যদি সত্যিই সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয় এবং আলোচনা ব্যর্থ হয়, যদি তারা সত্যিই আক্রমণ করে, আমরা কি চুপ করে বসে থাকব? আমাদের জবাব দিতে হবে।’
৬ মাস আগে
সীমান্তে উত্তেজনা: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে যা বলল ঢাকা
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যা ঘটছে তা 'পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য' বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আজ তলব করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।’
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উদ্বেগ ও প্রতিবাদ তার সরকারের কাছে জানাবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তাদের মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আসছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা, বান্দরবানে ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলীতে মর্টার একটি বাড়িতে শেলের আঘাত হানলে এক নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।
আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে নিজেদের বাঁচাতে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মিয়ানমার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার সকালে) ২২৯ জন বিজিপি সদস্য ও সেনা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আহত বিজিপি সদস্যদের কক্সবাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যখন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তখন এ ধরনের ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে আজ সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোয়েকে তলব করে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (মিয়ানমার উইং) মিয়া মো. মইনুল কবির রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক বৈঠকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে এই প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে একমত মোদি-শি জিনপিং
১০ মাস আগে