সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও অভিযোজনে ইউএনডিপির গৃহীত কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণ করতে খুলনা এবং চট্টগ্রাম সফর করেছেন জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।
মঙ্গলবার সুইডেন সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গৃহীত ইউএনডিপির প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করেন ক্রাউন প্রিন্সেস।
এছাড়াও স্থানীয়ভিত্তিক জীবিকার সমাধানগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতার মডেলগুলো পর্যবেক্ষণ করেন ক্রাউন প্রিন্সেস।
খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে সুইডিশ সরকারের সহায়তায় ইউএনডিপি ও ইউএনসিডিএফের জলবায়ু অভিযোজন কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়াও, ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই ডিজিটাল পরিষেবা সরবরাহ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন এবং টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় কমিউনিটির জনসাধারণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষ, বিশেষত নারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: খুলনায় পোস্ট অফিসের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট উদ্বোধন করেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলে পাড়ায় নারীদের নেতৃত্বে নির্মিত জলবায়ু সহনশীল বাসস্থানগুলো ঘুরে দেখেন ক্রাউন প্রিন্সেস। ইউএনডিপির সহায়তায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তির আওতায় নির্মিত একটি বাঁধ প্রাচীরসহ জলবায়ু মোকাবিলায় নির্মিত বেশকিছু স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
এরপর স্বল্প সময়ের জন্য চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে যান সুইডিশ রাজকন্যা। সেখানে তিনি নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন এবং নারী ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে উদ্ভাবনী প্রশিক্ষণ কোর্সসহ ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মোদের, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী জোহান ফরসেল, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে।
আরও পড়ুন: খুলনার কয়রায় সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের এই সফরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং লিঙ্গ সমতাকে এগিয়ে নিতে পারষ্পরিক সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাগুলোর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে জলবায়ু সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিউনিটি গড়ে তোলায় ইউএনডিপির সংকল্পকেই পুনর্ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
৭ মাস আগে
রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।
তিনি ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে ইউএনডিপির সহায়তা কামনা করেন।
চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রিন্সেস বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
দু'দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে।
স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে।
এ ছাড়া তার সরকার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তার প্রথম সুইডেন সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন তার স্বামী পড়াশোনার জন্য সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুন: উপকূলীয়দের জীবনমান দেখতে মঙ্গলবার খুলনায় আসছেন সুইডেনের রাজকন্যা
৭ মাস আগে