বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
উগ্রবাদীদের হুমকির পর নিরাপত্তা চাইলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে উগ্রবাদী ও মৌলবাদী সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রাণনাশের হুমকির প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষার্থী।
তারা জানান, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও সাম্প্রদায়িক উসকানিতে অভিযুক্ত এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুক্ত পেজ বাঁশেরকেল্লা, টেলিগ্রাম চ্যানেলসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীদের নাম ও ছবি প্রচার শুরু করেছে।
অতীতে এই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া বুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার সঙ্গে এর মিল রয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘এসব হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার কারণ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের রায়ের পর বুয়েটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের প্রতিক্রিয়া
শুক্রবার বুয়েটের শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে হুমকির স্ক্রিনশটগুলোসহ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল আলম, অরিত্র ঘোষ, সাগর বিশ্বাস জয় ও অর্ঘ্য দাস এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নিল ও মিশু দত্ত।
কয়েকদিন আগে তারা উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন, যেখানে তারা ২১ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করেন, যারা একই ধরনের হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন।
তারা বলেন, ‘মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ায় অতীতে আমাদের ওপর মৌখিক আক্রমণ হয়েছে, যা স্পষ্টতই মত প্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন।’
২০১৩ সালে পৃথক হামলায়, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়। এক ছাত্র নিহত ও অপর একজন বেঁচে যান। শিবিরের হামলার শিকার হওয়া এই দুই ছাত্রনেতা মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতে জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তারা।
তারা আরও বলেন, তন্ময় আহমেদ ও আরিফ রায়হান দীপ নামে ওই দুই ছাত্রনেতার ওপর হামলার আগে বাঁশেরকেল্লা ও আমার দেশ পত্রিকা 'ইসলামের শত্রু' আখ্যা দিয়ে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালিয়েছিল।
হলের ভেতরে মৌলবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী এক সহপাঠীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে দীপ মারা গেলেও তন্ময়কে শিবির কর্মীরা নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করেছিল বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট
এসব হামলার কথা স্মরণ করে তারা বলেন, 'আমাদের পূর্বসূরীদের ওপর হামলার মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন তৈরি হয়। দুজনেই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং এই দলগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। একই ভাবে বাঁশের কেল্লা আমাদের টার্গেট করেছে। আমাদের বিস্তারিত তথ্যসহ পোস্টগুলো এরই মধ্যে টেলিগ্রাম চ্যানেলের মতো বিভিন্ন যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমে এই দলগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে।’
প্রত্যন্ত অঞ্চলে বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীসহ শিবিরের ৩৪ জন নেতা-কর্মীর গোপন বৈঠকের খবরের বরাত দিয়ে তারা বলেন, ‘এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও তারা ছাত্রদের নিয়ে একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত।’
‘এমনকি কিছু ফেসবুক গ্রুপেও আমরা দেখতে পেয়েছি যে, আমাদের নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট করা হয়েছে এবং আমাদের কিছু সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীকে টার্গেট করা হয়েছে। এই গ্রুপগুলোর পোস্টগুলোতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা জঙ্গিদের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই স্থান ব্যবহার করছে, এই কর্মীদের জড়িত থাকার আরও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।’
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তার বুয়েট শিক্ষার্থীদের নিয়ে যা বললেন অভিভাবকেরা!
৮ মাস আগে
জালিয়াতি রোধে বুয়েট উদ্ভাবিত ডিভাইস শনাক্তকরণ যন্ত্রের সাফল্য
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) উদ্ভাবিত ডিভাইস জালিয়াতি শনাক্তকরণ সিস্টেমের কার্যকর প্রয়োগের ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস জালিয়াতি ও বদলি পরীক্ষা দেওয়ায় আটক ১৮
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, প্রথম ধাপের পরীক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে অসদুপায় অবলম্বনের চেষ্টা নজরে আসায় মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপপ্রয়াস রোধককল্পে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ খুব স্বল্প পরিমাণে এসেছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ যাতে না উঠে সেজন্য কার্যকর পন্থা খুঁজে বের করতে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের অধ্যাপক এস এম লুৎফুলর কবিরকে দায়িত্ব দেয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আরও বলেন, বুয়েট ইনোভেশন টিম স্বল্পসময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন শনাক্তকরণে সহজ ও কার্যকর সিস্টেম উদ্ভাবন করে। এতে শুক্রবারের লিখিত পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জেলায় এ সিস্টেমের সহজ ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সচিব বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ ধরনের সিস্টেম চালু করা গেলে ডিভাইসমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে।
তখন কেউ পরীক্ষা নিয়ে কোনো অভিযোগ তোলার সুযোগ পাবে না।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা ২০২৩ এর তৃতীয় ধাপে ও শেষ ধাপের লিখিত পরীক্ষা (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ- ৩টি পার্বত্য জেলা ব্যতীত) অনুষ্ঠিত হয়।
এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস ব্যবহার, যুবক আটক
গাইবান্ধায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা: ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ আটক ৩৫
৮ মাস আগে