বুয়েট ক্যাম্পাস
বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সভাপতি প্রবেশের প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কাম্পাসে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবারও শুরু করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সকল প্রকার শিক্ষাকার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
২০১৯ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষের মেধাবী ও সংবেদনশীল শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে বুয়েট ক্যাম্পাসে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভয়ংকর নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের রাজনীতি বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
এরপর থেকে ছাত্রলীগ বিক্ষিপ্তভাবে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বা বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই শিক্ষার্থীদের রাজনীতি বিরোধী সংগঠনের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে এবং সর্বশেষ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক ধারাবাহিক সেই সূত্রেই পড়ে বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আবরার ফাহাদ: এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের অকাল বিদায়
গত বৃহস্পতিবার(২৮ মার্চ) বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রহিম রাব্বি এবং তাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে 'গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। এরপর ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রলীগ সভাপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।
বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার লক্ষ্যে এই প্রবেশ চেষ্টা বলে মনে করছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১২
নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
শত শত শিক্ষার্থী সকাল থেকে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভে যোগ দেয় এবং সেখানে একটি সংবাদ সম্মেলন করে।
ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন যে তাদের বিরোধীরা 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বুয়েট ক্যাম্পাসকে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র করছে। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের নির্ধারিত ক্লাস এবং পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণাও দেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য বুয়েটের যে কোনো ছাত্রকে হল ও বিভাগ থেকে সাময়িক বহিষ্কা করা; বিশেষ করে 'জড়িত' ইমতিয়াজ রহিম রাব্বির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
তারা আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, এ ঘটনায় বুয়েট প্রশাসনের অবস্থান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তাসহ লিখিতভাবে আশ্বাস দেওয়া এবং কোনো হয়রানির শিকার না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলে ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেন।
আরও পড়ুন: আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে হামলা: বিচারের দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন
৭ মাস আগে