জলবায়ু অভিযোজন
জলবায়ু অভিযোজনে সহায়তা দ্বিগুণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু অভিযোজন কর্মকাণ্ডে সহায়তা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জার্মানির বার্লিনে চলমান পিটার্সবার্গ ক্লাইমেট ডায়লগের বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান, ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান, ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন। মন্ত্রী আগামী কপ ২৯-এ জলবায়ু অর্থায়ন সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মতামত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনায় পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এর আগে যে সব অঙ্গীকার করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সকল কার্যক্রমে বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার: পরিবেশমন্ত্রী
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বৈশ্বিক তাপমাত্রার লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সকল দেশকে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলো এবং যাদের সামর্থ্য আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী পিটার্সবার্গ জলবায়ু সংলাপের সাইড লাইনে কপ-২৮ এবং কপ-২৯ এর প্রেসিডেন্ট, সৌদি আরবের প্রধান জলবায়ু আলোচক খালিদ এম. আলমেহেদ, স্টেট সেক্রেটারি এবং জার্মান ফেডারেল পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জেনিফার লি মর্গান, জার্মান ফেডারেল চ্যান্সেলারির স্টেট সেক্রেটারি ড. জর্গ কুকিস, মিসর, ডেনমার্কের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
তিনি কপ-২৯ এ প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার জন্য আজারবাইজানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধান আলোচক ইয়ালচিন রাফিয়েভের কাছ থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেন।
পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরীর বক্তব্য পিটার্সবার্গ ক্লাইমেট ডায়লগে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৪০টি দেশের মন্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং অনেকে মতামতকে সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে ৪০টি দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি ছাড়া আরও ছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শ্লোজ এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিযোজনে সফলতার জন্য বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু অভিযোজনে সাফল্য তুলে ধরতে ন্যাপ এক্সপো-২০২৪ বাংলাদেশ: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশের জনগণের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সফলভাবে মোকাবিলা করার বিষয়গুলো বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে ন্যাপ এক্সপো ২০২৪ বাংলাদেশ আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আগামী ২২-২৫ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক ‘ন্যাপ এক্সপো-২০২৪ বাংলাদেশ’র প্রস্তুতি সভায় পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আগামী ২২-২৫ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই সম্মেলনটি আয়োজিত হবে।
২২ এপ্রিল এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ বৃদ্ধি করতে পরিবেশমন্ত্রীর আহ্বান
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এক্সপোতে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের অভিযোজন কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় থেকে সবাই পারস্পরিকভাবে উপকৃত হবে।
পরিবেশমন্ত্রী আরও জানান, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, পাহাড়ি অঞ্চলে সোলার এনার্জির মাধ্যমে পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা, জলবায়ু সহিষ্ণু বীজ ও অন্যান্য কৃষি কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়, অভিযোজন কর্মকাণ্ডের সমর্থনে ডেল্টা প্লানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, জলবায়ু অভিযোজনের জন্য সাইক্লোন শেল্টার, রাস্তাঘাট, কালভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি জলবায়ু অভিযোজনের বিষয়সমূহ প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়াও, বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সম্মেলনে বিদেশি স্টলে প্রদর্শিত অভিযোজন কর্মকাণ্ড থেকেও অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিযোজনের জন্য সরকার প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এই এক্সপোতে দেশের জলবায়ু অভিযোজন প্রদর্শনের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্টল অংশগ্রহণ করবে।
এছাড়াও, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী এবং এনজিওর উপস্থিতি থাকবে। ১১৪টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন এই এক্সপোতে। ইউনাইটেড নেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) সহযোগিতায় এবং লেস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ এক্সপার্ট গ্রুপের (এলইজি) ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে ‘ন্যাপ এক্সপো-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (পদূনি) তপন কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
আরও পড়ুন: সব উন্নয়ন জলবায়ু সহায়ক করার লক্ষ্য সরকারের: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু অভিযোজনের জন্য সরকার প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে: পরিবেশমন্ত্রী
সরকার জলবায়ু অভিযোজন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অভিযোজন কার্যক্রমের জন্য বছরে ৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, তাই অতিরিক্ত অর্থ আমাদের সংগ্রহ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সরকার, এনজিও ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যুক্তরাজ্য সরকারের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসের (এফসিডিও) প্রকৃতিভিত্তিক অভিযোজন প্রতি সমৃদ্ধ ও দক্ষ জীবনধারা এবং জীবিকা বাংলাদেশ (নব্পল্লব) প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী পাচার-শিকার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রী সাবের চৌধুরী জানান, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এবং পাখি ও মাছের প্রজননক্ষেত্র হাকালুকি হাওরের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রক্ষায় কাজ করা হবে। আয় বৃদ্ধির কৌশল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি এই এলাকাগুলোতে চ্যালেঞ্জ কমাতে আশেপাশের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা করা হবে।
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া, সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নীতকরণ এবং সহনশীল ফসল এবং জলবায়ু-প্রতিরোধীর মতো সমাধানগুলো চালু করার ক্ষেত্রে জড়িত করা হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, কেয়ার এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক রমেশ সিং, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত এবং নবপল্লবের চিফ অব পার্টি সেলিনা শেলী খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দাতা সংস্থা প্রতিনিধি, অতিথি ও বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় কর্মরত কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নদীর দখল ও দূষণমুক্ত করতে একযোগে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী