ড. দেবপ্রিয়
আজকের আমলাই ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ী: ড. দেবপ্রিয়
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমলারা এখন নানা পরিচয়ে মানুষের সামনে হাজির হন, যা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত 'সুশাসনের জন্য জনকেন্দ্রিক সংস্কার: সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষা' শীর্ষক নাগরিক সম্মেলন ২০২৪-এ তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৮ ও৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) সহযোগিতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জনগণের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নজর দিন: সরকারকে ড. দেবপ্রিয়
সম্মেলনে দেবপ্রিয় বলেন, ‘আজকে যে আমলা, কাল সেই রাজনীতিবিদ, পরের দিন সে ব্যবসায়ী। এটাই তো সমস্যা হয়ে গেছে। উনারা বহুরূপে এখন আমাদের সামনে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে এই তিনটি একই হয়ে গেছে।’
এই জননীতি বিশ্লেষক এর আগে অংশগ্রহণকারীদের কাছে একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কে বেশি ক্ষমতাধর- আমলা, রাজনীতিবিদ নাকি ব্যবসায়ী।
এ প্রশ্নের জবাবে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমলারা।
এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশ ঘুরে আলোচনা করেছি। সেসব আলোচনায় আমরঅদের সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হিসেবে বলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হলো অন্য জায়গায়। অনেক ক্ষেত্রে এই তিন পরিচয় একই ব্যক্তির হয়ে গেছে।’
ড. দেবপ্রিয় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের পরামর্শ দেন।
স্বাধীন স্থানীয় সরকার কমিশন হলে সাধারণ অজুহাতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্তের সংস্কৃতি রোধ করা যায় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া যায়।
সিপিডির এই সম্মানিত ফেলো রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি প্রতীক ব্যবহারের বিধান প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন।
সিপিডির সম্মানিত ফেলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির আরেক সম্মানতি ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সোনালি দয়ারত্নে প্রমুখ।
আরও পড়ুন: শ্বেতপত্র: দুই বছরের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় গুরুত্বারোপ করলেন দেবপ্রিয়
১ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
৮ মাস আগে