ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট
ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট: কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ
সনদ জালিয়াতির ঘটনায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিকেলে ডিবি কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে ডিবির পক্ষ থেকে সময় দেওয়া হয়েছে। দুই দিনের মধ্যে তিনি যদি অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা না দেন পরে জালিয়াতির তথ্য প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জালিয়াতির ঘটনাটিকে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কলঙ্কিত ও কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করেন ডিবি প্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এ ঘটনার দায় কারিগরির চেয়ারম্যান এড়াতে পারেন না। কোনো সুযোগ নেই। আমরা এখন দেখব, তিনি আসলেই সনদ বিক্রির বিষয়টি জানতেন কি না।’
সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যায় ডিবি সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে হারুন বলেন, আসল সার্টিফিকেট বিক্রি করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এই সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনা লজ্জাজনক। দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
হারুন আরও বলেন, ‘এসব কাজ চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অবহেলায় করেছেন নাকি স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছেন, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এমন জালিয়াতি জেনেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। স্ত্রীর বিষয়টিও তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। জানতেন না বলে দাবি করেছেন।’
তিনি বলেন, আলী আকবর খানের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আসেন সদ্য সাবেক কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খান।
ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিজের দায় স্বীকার করে বলেন, বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের দায় এড়াতে পারেন না।
এ সময় তার স্ত্রীকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গোয়েন্দা সংস্থা কী তথ্য পেয়েছে, তাও কিছুই জানি না। তবে আমি মনে করি, বিনা অপরাধেই জেল খাটছেন।’
তাকে ওএসডির বিষয়ে তিনি বলেন, মিডিয়ায় একটি সংবাদ চলে আসছে এবং ডিবির কাছে তথ্য আছে, সেজন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আলী আকবর খান আরও বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এক্ষেত্রে আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত!’
সিস্টেম অ্যানালিস্টের কাছে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এটির তদন্ত চলছে।’
গত ১ এপ্রিল মিরপুরের পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানসহ তার সহযোগী ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ কারিগরি বোর্ডের (সদ্য ওএসডি) চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পরদিন আকবর আলী খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি।
৭ মাস আগে