এনএলডিসি
তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৩ ডিগ্রি, লোডশেডিং রেকর্ড ৩২০০ মেগাওয়াট
সোমবার দেশে তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময় নজিরবিহীন বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে লোডশেডিং প্রায় ৩২০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।
বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সোমবার দুপুর ২টায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারে (এনএলডিসি) রেকর্ড ৩ হাজার ১৯৬ মেগাওয়াট ঘাটতির কথা জানানো হয়।
দিনের ‘পিক আওয়ারে’ ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ ঘাটতি ৩ হাজার ৪৪৭ মেগাওয়াটের।
সন্ধ্যার ‘পিক আওয়ারে’ চাহিদা ১৭ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে বিদ্যুৎ ঘাটতি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রবিবারেও অত্যধিক লোডশেডিং দেখা যায়। এদিন দুপুরে ১ হাজার ৮৬৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টায় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড করা হয় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট; তবে চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে।
বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অবস্থা ভয়াবহ।
তবে বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থার গ্রামীণ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, যে পরিমাণ লোডশেডিং হয় রিপোর্টে তার চেয়ে কম আসে। কারণ বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থানীয়ভাবে হওয়া বিঘ্নগুলো সবসময় তালিকাভুক্ত হয় না। এতে গ্রাহকদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। যে কারণে দিন-রাতে কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছাড়াই কাটিয়ে দিতে হয়।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এত ঘন ঘন হয় যেকোনো সমস্যা হলে গ্রাহকদের দিনে ও রাতে উভয় ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ পেতে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে কৌশলগতভাবে গ্রামাঞ্চলে স্থানান্তর করা হয়। এই নীতিগত সিদ্ধান্ত এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট।
এই গ্যাস সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে, যা এই সংকটময় সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।
৭ মাস আগে
দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ
বিদ্যুৎ উৎপাদন নতুন রেকর্ড গড়লেও সারাদেশে লোডশেডিং কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আগের তুলনায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) রেকর্ডে দেখা যায়, বুধবার (২৪ এপ্রিল) দেশে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে, যা মঙ্গলবারে ছিল ১ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট।
এনএলডিসির তথ্যে আরও দেখা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৬৮ মেগাওয়াট। তবে বুধবার দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতির মাত্রা কমে সকাল ৭টায় ৫৪২ মেগাওয়াটে নেমে আসে।
কিন্তু আবারও লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যায় এবং বুধবার বিকাল ৩টায় তা বেড়ে ৮২১ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়।
আরও পড়ুন: হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিকাল ৫টায় দেশে সন্ধ্যার গুরুত্বপূর্ণ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৪ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট হয়েছে।
অন্যদিকে বুধবার সন্ধ্যায় চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে লোডশেডিং এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ৩ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
এতে দেখা যায়, বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, গ্যাস সংকটের কারণে সেগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে
৭ মাস আগে