বৈশ্বিক অভিবাসন
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বৈশ্বিক অভিবাসন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইওএমের কার্যকর ভূমিকার আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বৈশ্বিক অভিবাসন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ঢাকার বনানীতে একটি হোটেলে 'ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৪' প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আইওএমের মহাপরিচালক এমি পোপ আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন ২০২৪ প্রকাশ করেন।
২০০০ সাল থেকে দুই বছর পর পর প্রকাশিত হওয়া এই আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠান এবারই প্রথম সংস্থাটির সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বাইরে কোথাও আয়োজিত হলো।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ব অভিবাসন প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বাংলাদেশকে নির্বাচন করায় আইওএমকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও আন্তর্জাতিক তহবিল গঠনে নতুন অংশীদার খুঁজুন: আইওএমের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ দেশে দ্রুততম সময়ে প্রত্যাবাসন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারে তাদের আশ্রয় এলাকা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান এবং জঙ্গিবাদের 'ব্রিডিং গ্রাউন্ড' হিসেবে ব্যবহার শুধু দেশেরই নয় আন্তর্জাতিক সংকটে রূপ নিচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশে আসা আইওএম মহাপরিচালককে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এই সংকট নিরসনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আইওএম বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজায় ইসরায়েলি হামলার কারণে উদ্বাস্তু হাজার হাজার মানুষের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণ হিসেবে যুক্ত হয়েছে, যা আমলে নেওয়া ও সমাধানের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করা এখন সময়ের দাবি।
প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে আইওএম মহাপরিচালক এমি পোপ বলেন, ‘বিশ্বে ২৮ কোটিরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে প্রায় ১২ কোটি ৭০ লাখ মানুষই যুদ্ধ-বিগ্রহ-সংঘাত ও নানা দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত। এটি দুশ্চিন্তার বিষয়।’
অভিবাসনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির ধ্বনাত্মক দিক তুলে ধরে এমি পোপ বলেন, ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স ১২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৬৫০ শতাংশ বেড়ে ৮৩১ বিলিয়ন হয়েছে। এই আয় বাংলাদেশসহ বহু দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম চালিকাশক্তি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
প্রতিবেদনের গুরুত্ব সম্পর্কে এমি পোপ বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্টের প্রমাণভিত্তিক তথ্য ও বিশ্লেষণগুলো মানুষের গমনাগমনের অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে যা অনিশ্চিত বিশ্বে অবহিত সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর নীতি প্রণয়নে অত্যন্ত জরুরি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন ও রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাক্টিং হাইকমিশনার নাদিয়া সিম্পসন এবং বাংলাদেশে আইওএম মিশন প্রধান আব্দুসসাত্তার ইসোয়েভ।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, মিশন প্রধান, কূটনীতিক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রকাশনা অনুষ্ঠানস্থলেই পৃথক কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আইওএম মহাপরিচালক এমি পোপ।
বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করা ও বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি অভিবাসীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আইওএমের কার্যকর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
বৈঠকে আরও ছিলেন- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালযয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন, বাংলাদেশে আইওএম মিশন প্রধান আব্দুসসাত্তার ইসোয়েভ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বাস্তুচ্যুতি হ্রাসে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশ সরকার, আইওএম ও সিভিএফ’র
৭ মাস আগে