বাংলাদেশে আঘাত হানা ভয়াল ঘূর্ণিঝড়
বাংলাদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াল ১০টি ঘূর্ণিঝড়
অনন্য ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ঘন ঘন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়ে এসেছে বাংলাদেশ। দেশের উপকূল স্পর্শ করে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশ অনেকটা ফানেল-আকৃতির। ফলে স্থলভাগের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়গুলো। আর এই বিভীষিকার নির্মম শিকারে পরিণত হয় হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্যোগপ্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কয়েক শতাব্দির ইতিহাস। চলুন, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ১০টি সাইক্লোন
বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন, ১৮৭৬
১৮৭৬ সালের ২৭ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরের গভীরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ ২৯ অক্টোবর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। অতঃপর ৩০ অক্টোবর আরও প্রবল হয়ে তা উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশপাশে সেসময় বাতাসের গতি উঠেছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার।
ওই ঘূর্ণিঝড় থেকে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ২ মিটার। আর এই মাত্রা অব্যাহত রেখেই ৩১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে বরিশালের ব্যাকেরগঞ্জ উপজেলার ওপর। পাশাপাশি আঘাত হানে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিসহ ব্রিটিশ ভারতের উপকূল বরাবর, যেটি বর্তমানে বরিশালে মেঘনা নদীর মোহনার কাছাকাছি একটি স্থান।
ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে সেবার হতাহতের সংখ্যা হয়েছিল প্রায় ২ লাখ, যাদের অর্ধেকই মারা গিয়েছিল জলোচ্ছ্বাসে। এ ছাড়াও ঘরবাড়িসহ সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে ১ নভেম্বর থামে ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু এরপর আরও অনেক মানুষ মারা যায় ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে।
আরও পড়ুন: কিভাবে নেবেন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি
চট্টগ্রাম সাইক্লোন, ১৮৯৭
কুতুবদিয়া দ্বীপের কাছাকাছি এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে ১৮৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মিলে ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৪ হাজারে। ঝড়-পরবর্তী সময়ে কলেরা মহামারিতে আরও ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
খুলনার ঘূর্ণিঝড়, ১৯৬১
১৯৬১ সালের ৯ মে সংঘটিত হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বাগেরহাট ও খুলনার বেশকিছু অঞ্চল। ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার, আর জলোচ্ছ্বাসে ঢেউয়ের উচ্চতা পৌঁছেছিল ২ দশমিক ৪৪ থেকে ৩ দশমিক ০৫ মিটারে।
ঝড়ে ১১ হাজার ৪৬৮ জন নিহতের অধিকাংশই ছিল চর আলেকজান্ডারের অধিবাসী। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে বিশেষ করে নোয়াখালী ও হরিনারায়ণপুরের মধ্যকার রেলপথটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৫ মাস আগে