২০২৪-২৫ অর্থবছর
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.১ শতাংশে নামাল এডিবি
রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়া এবং সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার কারণ দেখিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এটি একই সময়ের জন্য ম্যানিলা-ভিত্তিক ঋণদাতা ৬ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস থেকে একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাসকে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন: ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশের সমুদ্র অর্থনীতি দ্বিগুণ হতে পারে: এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট
জুলাই ও আগস্ট মাসে বন্যার পাশাপাশি গণআন্দোলনের মধ্যে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনকে (জিডিপি) মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। এটি সারা দেশে পণ্য ও পরিষেবার উৎপাদন ব্যাহত করেছে।
এডিবি তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছে, রাজস্ব ও মুদ্রানীতি কঠোর থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে ভোগের চাহিদা আরও হ্রাস করতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ হারে রাখতে পারে।
ব্যাংকটি সতর্ক করে দিয়েছে যে তার পূর্বাভাস উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেয়। নেতিবাচক ঝুঁকিগুলো সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: এলডিসি-পরবর্তী যুগের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি দেখে উৎসাহিত: এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট
এডিবি এই ঝুঁকিগুলোকে প্রাথমিকভাবে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি এবং দেশের আর্থিক খাতের দুর্বলতার কারণে দায়ী বলে চিহ্নিত করেছে।
এডিবির সংশোধিত পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের জুন মাসের অনুমানের চেয়ে কম। এতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ, জলবায়ু সহযোগিতা জোরদারের আশা
২ মাস আগে
বরাদ্দ কমছে যোগাযোগ খাতে
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সড়ক, সেতু, রেলপথ, সমুদ্রপথ, আকাশপথসহ যোগাযোগ খাতে ৮০ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে সরকার। এবারের বরাদ্দ আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা কম।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৮৫ হাজার ১৯১ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার(৬ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২৪-২৫: আরও সাশ্রয়ী হবে কিডনি ডায়ালাইসিস
বাজেট উপস্থাপনের সময় মন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে বিভিন্ন মহাসড়কে ১ হাজার ৪৩৯টি সেতু নির্মাণ বা পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে আজ সারা দেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার বিস্তৃত উন্নত মহাসড়ক অবকাঠামো পণ্য ও যাত্রীদের নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন নিশ্চিত করেছে। বিভিন্ন সমাপ্ত ও চলমান প্রকল্পের আওতায় ৮৫১ দশমিক ৬২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে।
এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে ১২টি এক্সপ্রেসওয়ে এবং আরও ১০টি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানানা তিনি।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে ঢাকা-জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর এক্সেস কন্ট্রোলড মহাসড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বালিয়াপুর থেকে নিমতলীকেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবান্দা পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘রেলওয়ে খাতকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি।’
এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে মাস্টার প্ল্যান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক ও দ্বিতীয় পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহার অনুসরণ করে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট: তামাকপণ্যের দাম বাড়লেও সামর্থ্যের মধ্যে থাকবে
১৪ বছরে ১৭৬ দেশে ৯৭ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী গেছেন
৬ মাস আগে
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট: তামাকপণ্যের দাম বাড়লেও সামর্থ্যের মধ্যে থাকবে
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট ও বিড়ির মতো তামাকজাত পণ্যের দাম কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদে আসন্ন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিগারেট মানব স্বাস্থ্যের জন্য সম্পূর্ণ ক্ষতিকর। তামাক ও এ জাতীয় পণ্যের ব্যবহার কমাতে এবং এ খাত থেকে রাজস্ব বাড়াতে আইনের দ্বিতীয় ধারায় উল্লিখিত তামাকজাত পণ্যের মধ্যে সিগারেটের ওপর ৬৫ শতাংশের পরিবর্তে ৬৬ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২৪-২৫: দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ২ শতাংশ (যা বর্তমানে ৫৮ শতাংশ) বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া মধ্যম ও উচ্চ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার মূল্য যথাক্রমে ৭০ টাকা (যা বর্তমানে ৬৭ টাকা) এবং ১২০ টাকা (যা বর্তমানে ১১৩ টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির সিগারেটের দশ শলাকার মূল্য ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এসব স্তরে সম্পূরক শূল্ক ৬৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এ ছাড়াও ১০ গ্রাম জর্দা ও গুলের দাম যথাক্রমে ৩ টাকা (৬.৬৭ শতাংশ) ও ২ টাকা (৮.৭ শতাংশ) বাড়ানো হলেও সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিম্নস্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্যস্তর ৫০ টাকা ও এর চেয়ে বেশি এবং সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। এছাড়া মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্যস্তর ৭০ টাকা বা তার বেশি, উচ্চস্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্যস্তর ১২০ টাকা বা তার বেশি, অতি উচ্চস্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্যস্তর ১৬০ টাকা বা তার বেশি এবং এই তিনটি স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।’
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো হাতে তৈরি বিড়ির (ফিল্টার ছাড়া) ২৫ শলাকার সর্বোচ্চ মূল্য ১৮ টাকা, ১২ শলাকার সর্বোচ্চ মূল্য ৯ টাকা ও আট শলাকার সর্বোচ্চ মূল্য ৬ টাকা এবং সম্পূরক শূল্ক গত বছরের মতো ৩০ শতাংশই রাখার প্রস্তাব করছি।’
‘যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরি বিড়ির (ফিল্টারসহ) ২০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৯ টাকা, ১০ শলাকার সর্বোচ্চ মূল্য ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি।’
আরও পড়ুন: ১৪ বছরে ১৭৬ দেশে ৯৭ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী গেছেন
বাজেট ২৪-২৫: আরও সাশ্রয়ী হবে কিডনি ডায়ালাইসিস
৬ মাস আগে
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বরাদ্দ
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ৩৮ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে সরকার। যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৫ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
আরও পড়ুন: চোরাই পথে গরু প্রবেশ ঠেকাতে মনিটরিং করা হচ্ছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার জেলেদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। বেকারত্বকালীন জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয় সরকার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চলে মাছের যথাযথ প্রজনন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত (মোট ৬৫ দিন) সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে নিষেধাজ্ঞাকালীন ১৪টি জেলার ৬৮টি উপজেলায় ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৫টি জেলে পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে মাসিক ৪০ কেজি হারে মোট ২৬ হাজার ৮৩ দশমিক ৪২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়। আগামী অর্থবছরেও এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মৎস্য চাষের পাশাপাশি টেকসই জাতগুলোর উন্নয়ন এবং গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির রোগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্মার্ট প্রাণিসম্পদ খাত তৈরির কর্মসূচি রয়েছে।
এ সময় সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা নির্ধারিত ন্যূনতম প্রাণিজ আমিষ চাহিদা পূরণে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, প্রাণিজ স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার টিকার উৎপাদন ও প্রয়োগ বাড়িয়েছে। 'শেখ হাসিনার উপহার, প্রাণীর পাশেই ডাক্তার' নীতিমালার আওতায় ভেটেরিনারি সেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ৩৬০টি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে।
পাশাপাশি, মাথাপিছু প্রোটিনের দৈনিক প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য প্রজননের উন্নতি এবং গবাদি পশুর জন্য টিকা দেওয়ার মতো কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাণিসম্পদ সেবাকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ভবনের ভিত্তি প্রস্তর ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
৬ মাস আগে
প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবসম্মত ও গণমুখী: কাদের
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বাস্তবসম্মত ও গণমুখী বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক সংকটকালে একটি গণমুখী বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও অগ্রাধিকারের খাতগুলো বিবেচনায় নিয়ে এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান কাদেরের
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাজেট প্রণয়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কোনো নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার কারো প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করে বাজেট তৈরি করে না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকাল ৩টা ৪ মিনিটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
এটি বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ষষ্ঠ মেয়াদের প্রথম বাজেট।
আরও পড়ুন: পলাতক তারেক বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে: বেনজীর প্রসঙ্গে মন্তব্য নিয়ে ফখরুলকে কাদের
বিএনপি দুর্নীতি ও লুটপাটের ওস্তাদ: ওবায়দুল কাদের
৬ মাস আগে
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ এসেছে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, যা আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা।
বাজেটে প্রস্তাবিত বরাদ্দ উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, উৎপাদনের অন্যতম প্রধান খাত বিদ্যুৎ।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সরকার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুতের আওতায় এনেছে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি আরও জানান, গ্রিডের আধুনিকায়ন করে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ২৪ হাজার সার্কিট কিলোমিটারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) প্রণয়ন করেছে।
আরও পড়ুন: সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
বিদ্যুৎ খাতে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, যা বর্তমানে ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ)। বর্তমানে ৯ হাজার ১৪৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচির আওতায় ২০৪১ সালের মধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে গ্রিড আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরই ও প্রি-পেইড মিটারের জন্য বিশেষ বরাদ্দ
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট ও টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব বিবেচনা করে এর উন্নয়ন ও ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালনের পাশাপাশি এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে স্মার্ট প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার স্থাপন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ
দেশে নিরাপদ ও পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বর্তমানে বেড়ে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা
এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানির ৫৪ থেকে ৫৯ শতাংশ আসে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। বর্তমানে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা ২৯টি, যার মধ্যে ২০টি উৎপাদনে রয়েছে। দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে উপকূলীয় এলাকায় তেল/গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পেট্রোবাংলার আওতায় ৪৮টি কূপ খননকাজের পরিকল্পনা করেছে বাপেক্স।
অফশোর গ্যাস অনুসন্ধান
বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন না করে এবং প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের উৎপাদন বণ্টন চুক্তির আলোকে বিদ্যমান 'অফশোর মডেল-পিএসসি ২০১৯'কে আরও আকর্ষণীয় করে বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি)-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ চুক্তির আওতায় অগভীর সমুদ্রের ৯টি ব্লক ও গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানি নিয়োগ করতে 'বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০২৪' শুরু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে গভীর ও অগভীর সমুদ্রের পিএসসি সই হবে।
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে সামুদ্রিক খনিজ ও অন্যান্য সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে ‘ব্লু ইকোনমি’ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে ব্লু ইকোনমি সেল কাজ করছে।
সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ ও এর সুষ্ঠু ব্যবহারের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ খাতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছর: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ
৬ মাস আগে
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্প তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ের মাধ্যমে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' ভিশন বাস্তবায়ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি চারটি মূল স্তম্ভ- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বৃক্ষরোপনের জায়গা নির্ধারণে স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রী মাহমুদ আলী মনে করেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ'র অধীনে দেশের মাথাপিছু আয় কমপক্ষে সাড়ে ১২ ডলারে পৌঁছাবে, জনসংখ্যার ৩ শতাংশের কম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করবে এবং চরম দারিদ্র্য নির্মূল হবে।
মূল্যস্ফীতি ৪-৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং বাজেট ঘাটতিও জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে থাকবে। রাজস্ব ও জিডিপির অনুপাত ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া বিনিয়োগ জিডিপির ৪০ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে শতভাগ ডিজিটাল অর্থনীতি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক সাক্ষরতা অর্জনের লক্ষ্যও রয়েছে।
মন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, 'স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য সহজলভ্য হবে এবং স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও টেকসই নগরায়নসহ প্রয়োজনীয় সেবাগুলো সরাসরি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে।’
একটি ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাগজবিহীন এবং নগদবিহীন সমাজ গঠনের কথা তুলে ধরেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা ন্যায়বিচার ও সাম্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করব। বাংলাদেশের মানুষ বুদ্ধিমান, সৃজনশীল ও পরিশ্রমী।’
প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে অর্থমন্ত্রী আস্থা ব্যক্ত করেন। এ লক্ষ্যে বৈষম্যহীন, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ও কর্মপরিকল্পনা সতর্কতার সঙ্গে প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছর: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ
সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
৬ মাস আগে
জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছর: জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, সব ধরনের 'বিচক্ষণ নীতি ব্যবস্থা’ অনুসরণ আগামী অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মধ্যমেয়াদে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তার ফলে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছেন তারা।
জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
চলতি বছরের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম জাতীয় বাজেট।
আরও পড়ুন: দেশের সর্বোচ্চ বাজেট উপস্থাপন করতে পেরে গর্বিত অর্থমন্ত্রী
মাহমুদ আলী তার প্রথম বাজেটে বলেন, বিচক্ষণ ও যথাযথ নীতিগত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি তার গতি বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, যা বিশ্বের সব দেশের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।
কোভিড-১৯ মহামারির ঠিক এক বছর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিল দেশ ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ (অস্থায়ী) প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়, যা আমাদের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তির প্রমাণ।
ভবিষ্যতে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে সব ধরনের যৌক্তিক সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
মাহমুদ আলী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর লক্ষ্যে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
ঋণের সরবরাহ এবং ব্যাংকার ও গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ঋণের চাহিদা ও সুদের হার নির্ধারিত হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি সফল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রাজস্ব খাতেও সহায়ক নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সৃষ্ট প্রতিকূলতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার লক্ষ্যে ফ্যামিলি কার্ড ও ওএমএস কর্মসূচির মতো সরকারি সহায়তা জোরদার করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
৬ মাস আগে
সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী
জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন শুরু করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকাল ৩টা ৪ মিনিট থেকে বাজেট পেশ করা শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
এটি বর্তমান অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের ষষ্ঠ মেয়াদের প্রথম বাজেট।
অর্থমন্ত্রীকে পুরো বাজেটটি পড়তে হচ্ছে না। স্লাইডের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের সামনে বাজেটের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন
এর আগে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ অন্যান্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইতোমধ্যে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে এডিপি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। এটি মোট বাজেট বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার সংসদে ৭.৯৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট পেশ, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪.৮ লাখ কোটি টাকা
এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের জন্য ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে, যার ফলে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট এডিপি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
এডিপিতে ১ হাজার ১৩৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ২১টি সমীক্ষা প্রকল্প, ৮৭টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের ৮০টি প্রকল্প রয়েছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে এডিপিতে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৮ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ১৫%) বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আরও পড়ুন: আসন্ন বাজেটে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে খুশি করতে চান অর্থমন্ত্রী
৬ মাস আগে
আসন্ন বাজেটে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে খুশি করতে চান অর্থমন্ত্রী
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আগামী বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে এই বাজেট পেশ করবেন তিনি।
কিন্তু রাজস্ব আদায় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে না হওয়ায় বাজেট ঘাটতি পূরণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী ইউএনবিকে জানান, বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম বাজেটে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে খুশি করার চেষ্টা করবেন তিনি।
এই আশ্বাসের পরও বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ ও ডলার সংকটের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ২ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংকসহ অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা এবং বাকি ১ লাখ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে বাজেটে: অর্থমন্ত্রী
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ১০ মাসের মধ্যে শেষ হয়েছে। গত এক দশকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ১০৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ সূদসহ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে, যা আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরও বাড়বে হবে।
ঘাটতি বাজেটের অর্থায়নের জন্য সরকারকে এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। এ ছাড়া ডলার সংকট ও ডলারের উচ্চমূল্য ঋণ পরিশোধে সরকারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ বছরে অভ্যন্তরীণ ঋণ দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এটি চ্যালেঞ্জিং ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে, কেন না বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতি বেড়েই চলেছে। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সরকারি খাতের ৭৯ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার এবং বাকিটা বেসরকারি খাতের। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ ঋণ দীর্ঘমেয়াদি এবং বাকিগুলো স্বল্পমেয়াদি।
এ বিষয়ে আইএমএফের সাবেক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেন, এখন থেকে বৈদেশিক ঋণে প্রকল্প গ্রহণে আরও সতর্ক হতে হবে। এসব ঋণের শর্তাবলী, মেয়াদ ও সুদের হার দেশের অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্লেষণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে আনার পাশাপাশি বিলাসবহুল প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ কমাতে হবে।
এছাড়া চলমান ডলার সংকটের কারণে বেশ কিছু বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগ এবং পণ্য ও সেবা বিক্রয় থেকে মুনাফা তুলতে সমস্যায় পড়ছে। এদের আটকে থাকা অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের জন্য এক ধরনের বড় দায়।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত এক-দুই বছর ধরে দেশি-বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
তাই কোন খাতে কী পরিমাণ ঋণ আছে, ঋণের উৎস কী, ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা কী- এসব বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা একটি দেশের ঋণ পরিস্থিতি, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা, দেশটিতে বিনিয়োগ থেকে মুনাফা নিতে পারে কিনা তা দেখে বিনিয়োগ করে। বর্তমানে বেশ কিছু বিদেশি কোম্পানি মুনাফা তুলে নিতে ডলার-সংকটসহ নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানান আহসান এইচ মনসুর।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কী প্রত্যাশা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান ইউএনবিকে বলেন, সরকারের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বিষয়টি সাধারণত বেশি আলোচিত হয়।
কিন্তু বাজেটের অর্থায়নের জন্য সরকার ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেয়। এই ঋণের পরিমাণও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গত পাঁচ বছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ এর আগে কখনো এত দ্রুত বাড়েনি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. সেলিম।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ৭৮ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। এরপর প্রতি বছরই ঋণের পরিমাণ শুধু বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত (মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত) ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুনে বাজেটের অর্থায়নে বিভিন্ন ধরনের ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে আরও ৬২ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ছাড়া নন-ব্যাংকিং খাত অর্থাৎ মূলত সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে এ বছর ২৩ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যন্ত বন্ড থেকে ১১ হাজার ২০৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
মূলত অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় না হওয়ায় বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকারকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আরও পড়ুন: শিশুবান্ধব বাজেট দেখতে চায় ইউনিসেফ: স্ট্যানলি গ্যুয়েভা
৬ মাস আগে