১ জুলাই
ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল হবে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত: ভূমিমন্ত্রী
জাতীয় আর্থিক বছরের সঙ্গে সমন্বয় করে এখন থেকে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, অতীতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল ছিল প্রতি বছরের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত (বঙ্গাব্দ)। কর আদায়কালের বর্তমান পরিবর্তন ভূমি উন্নয়ন কর আদায় প্রক্রিয়া অধিকতর সুষম, স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই নতুন পদ্ধতি আমাদের দেশের ভূমি রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনবে।
শনিবার (৯ জুন) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ভূমিসেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
আরও পড়ুন: ভূমি সেক্টরে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশ
এসময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, মিসেবা ডিজিটালাইজেশনসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ নারী অধিকার নিশ্চিত করা, খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও, এসব উদ্যোগ দেশের নাগরিকদের ভূমি-সংক্রান্ত অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। নিজস্ব ভূমি অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন হয়ে উঠবে। এটি তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়ক হবে।
নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, অনলাইনে জমির মালিকানার তথ্য রয়েছে ৬ কোটি ৪০ লাখের বেশি। ডাক বিভাগের মাধ্যমে নাগরিকের ঠিকানায় এ পর্যন্ত আট লাখের বেশি খতিয়ান পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে সরাসরি ০৯৬১২৩১৬১২২ নম্বরে ফোন করে অথবা ভূমিসেবা পোর্টাল land.gov.bd অথবা 'ই-খতিয়ান' মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি আবেদন করলে খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপের সত্যায়িত কপি ১৯২ দেশে নাগরিকের নিজ-নিজ ঠিকানায় পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো খতিয়ান থেকে জমি নামজারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে মূল খতিয়ান থেকে ধারাবাহিকভাবে সৃষ্ট নতুন খতিয়ানের ধারাবাহিক ক্রম প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট ভূমিসেবা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো খতিয়ানের দাগ শেয়ার হবে না, ভূমি নিয়ে কোনো মামলা-মোকদ্দমা থাকবে না।
তিনি বলেন, সীমানা বিরোধ হবে প্রায় শূন্য, নাগরিকদের খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না, এনআইডি দিয়েই পাওয়া যাবে জমির সব তথ্য।
তিনি আরও বলেন, জমি কেনার সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাবে সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ বা সিএলও। যে সব জায়গায় একবার ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হবে, সেখানে ভবিষ্যতে আর জরিপ করার প্রয়োজন পড়বে না।
অনুষ্ঠানে ‘ভূমি আমার ঠিকানা, স্মার্ট ভূমিসেবা স্মার্ট নাগরিক’ ‘ঢাকা জেলার খাসজমি চিহ্নিতকরণ, উদ্ধার ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম’, ‘ঢাকা জেলার জলমহাল সমগ্র’ - এই তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মচোন করেন ভূমিমন্ত্রী।
আজ উদ্বোধন হওয়া ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৪ আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত চলবে।
‘ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৪’ চলাকালীন সেবাগ্রহীতাদের গুরুত্বপূর্ণ যেসব সুবিধা প্রদান করা হবে তার মধ্যে রয়েছে, ই-নামজারির আবেদন করার বিষয়ে অবহিতকরণ ও সহযোগিতা প্রদান, নিষ্পত্তিকৃত এলএ কেইসের ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান, অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহ, অনলাইনে আবেদনকৃত মৌজাম্যাপ ডাক বিভাগের মাধ্যমে সরবরাহ, মাঠ পর্যায়ে চলমান জরিপ কার্যক্রম বিষয়ে গণশুনানি, আপত্তি/আপিল দাখিল ও নিষ্পত্তির কার্যক্রম গ্রহণ ও রেকর্ড হস্তান্তরসহ জনগণকে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান ইত্যাদি।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতাদের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার সরাসরি উত্তর প্রদানের জন্য সেবা বুথ স্থাপন করা হবে এবং সেখানে একজন কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। এবার প্রথমবারের মত ৮টি বিভাগে বিশেষভাবে প্রস্তুত ৮টি গাড়ি ভ্রাম্যমান স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদান করবে। ভূমিসেবা নিয়ে সহজবোধ্য বই 'ভূমি আমার ঠিকানা' বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর
৬ মাস আগে
বাজেট ২৪-২৫: দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
সে অনুযায়ী আগামী ১ জুলাই থেকে বাড়তে পারে যেসব পণ্যের দাম-
সিগারেট: তিন স্তরের সিগারেটের ওপর ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়বে সব ধরনের সিগারেটের দাম।
মোবাইল ফোন: সিম কার্ডের দাম বাড়িয়ে ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও বাড়বে মোবাইলে কথা বলার ব্যয়। বর্তমানে একজন গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭৩ টাকার কথা বলতে পারেন। আর বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ মোবাইল অপারেটররা কেটে রাখে। প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেবার ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তা ৬৯ টাকা ৩৫ পয়সার কথা বলতে পারবে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: ব্যয়বহুল হতে যাচ্ছে টেলিকম পরিষেবা
আইসক্রিম: আইসক্রিমে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ফলে বাড়বে আইসক্রিমের দাম।
বৈদ্যুতিক মিটার: প্রি-পেইড মিটার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক মিটারের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রি-পেইড মিটার পার্টস ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক মিটার যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
পানির ফিল্টার: বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদনের কারণে পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
শুল্কমুক্ত গাড়ি: বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে গাড়ি আমদানি করতে পারেন। সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কোমল পানীয়-এনার্জি ড্রিংকস: কোমল পানীয়, কার্বনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকসের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া কার্বনেটেড পানীয়ের ওপর ন্যূনতম কর আরও ২ থেকে ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। ফলে এসব পণ্য বেশি দামে কিনতে হবে।
কাজু বাদাম: দেশে কাজু বাদাম চাষকে গুরুত্ব দিতে খোসাযুক্ত কাজু বাদাম আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে কাজু বাদামের দাম বাড়তে পারে।
এসি: বিলাসিতা পণ্য হিসেবে বিবেচনা করে দেশে এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত কম্প্রেসর ও সব ধরনের উপকরণের ওপর ভ্যাট ৫ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই এসির দাম বাড়তে পারে। এসি বিক্রিতে ভ্যাট ৫ শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হওয়ায় ফ্রিজ উৎপাদনে খরচ বাড়বে।
এলইডি বাল্ব: এলইডি বাল্ব ও এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের জন্য উপকরণ আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এলইডি বাল্বের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিএনজি-এলপিজিতে রূপান্তর ব্যয়: গাড়ির সিএনজি-এলপিজি রূপান্তরে ব্যবহৃত কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এই কারণে গাড়ি রূপান্তর ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকারি ব্যয় কমেছে ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা
বাজেট ২০২৪-২৫: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে
৬ মাস আগে